ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কন্ডিশনকে কীভাবে দুষবে বাংলাদেশ?

সালেক সুফী, মেলবোর্ন থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪২, ২০ মার্চ ২০২১  
কন্ডিশনকে কীভাবে দুষবে বাংলাদেশ?

যেভাবে ক্রিকেট বোদ্ধারা বলেছেন, তার চেয়েও শোচনীয় ভাবে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে হেরেছে বাংলাদেশ! ট্রেন্ট বোল্টদের তোপে বিব্রতকর ব্যাটিংয়ে ১৩১ রানে গুটিয়ে যায় তামিম ইকবালের দল। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে ঝড়ের গতিতে মার্টিন গাপটিল ১৯ বলে ৩৮ রান করলেন। যে পিচে খাবি খেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেই পিচে ৬ ওভারে ৫৪ রান তোলেন কিউইরা। তাসকিন গাপটিলকে ফেরানোর পর হাসান মাহমুদের শিকার কনওয়ে। তারপরও ২১.২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে নিউ জিল্যান্ড। 

কী বলার বা লেখার আছে? এবার নিয়ে এই মাঠে বাংলাদেশ তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ খেললো। এবারের পরাজয় সবচেয়ে শোচনীয়। অনেক হাঁক-ডাক, অনেক বাগাড়ম্বরের পর এমন ফলাফল হতাশাই শুধু দিতে পারে। ধরে নিলাম কিউইরা ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য, অজেয়। কিন্তু বাংলাদেশও একদিনের ক্রিকেটে যথেষ্ট শক্তিশালী; তাই এমন হতাশজনক হার অনাকাঙ্ক্ষিত।

নিউ জিল্যান্ডে খেলতে আসলে সবুজ ঘাসের বাউন্স উইকেটে খেলতে হবে, বাতাস থাকায় বল বাঁক নেবে এটা অনুমেয়। বোল্ট-জেমিসনরা গতিতে পরীক্ষা নেবেন এটা সবাই জানেন। করোনাভাইরাসের কারণে কঠিন অবরুদ্ধ সময় কাটিয়ে ভূস্বর্গ কুইন্সটাউনে তামিমরা অনুশীলন করলেন ফুরফুরে মেজাজে। কিন্তু যেই না ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে টস হেরে ব্যাটিং করতে নামলো বাংলাদেশ সব কিছু যেন গুলিয়ে গেলো। 

ব্যাট হাতে ফুটওয়ার্কবিহীন তামিমকে লাগলো অচেনা! আউট হতে পারতেন বোল্টের করা ইনিংসের প্রথম বলেই; সেটা কোনোমতে সামলে নিলেন।, পরে ওই ওভারেই আপার কাট করে ছয় মেরে খোলেন রানের খাতা। কিন্তু তামিম যেভাবে বোল্টের বলে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন সেটা মেনে নেওয়া যায় না। বারবার লিখেছি নিউ জিল্যান্ডের এই তুখোড় বোলিংয়ে চটজলদি উইকেট পড়ে গেলে সৌম্য দাঁড়াতেই পারবে না; কেন মিথুন বা মাহমুদউল্লাহকে পাঠিয়ে ধস থামানোর চেষ্টা করা হলো না?

পাওয়ার প্লেতে দুটো উইকেট হারিয়ে সেই যে বাংলাদেশ কোণঠাসা হলো; সেখান থেকে মুশফিক , মিথুন ও  মাহমুদুল্লাহরা ঘুরে দাঁড়াতে পারলেন না।  লিটন-মুশফিক চেষ্টা করছিলেন সাধ্যের সব কিছু দিয়ে।  কিন্তু বিরূপ কন্ডিশনে দারুণ পেসের সামনে পেরে ওঠেননি, ভাগ্যও সহায় হয়নি।  মিঠুন-মুশফিক যখন প্রতিরোধের দেয়াল গড়ছিলো দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রান আউট হলেন মিঠুন। অযথা কাট করার চেষ্টা করে উইকেট খোয়ালেন মুশফিক।

বৈরী পরিবেশেও দীর্ঘক্ষণ একাই যুদ্ধ করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১৩১ রান কখনোই নুন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য যথেষ্ট ছিল না। হেসে-খেলেই জিতে নিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। ধরে নিলাম বোলিং সহায়ক পরিবেশে নিউ জিল্যান্ডের ভয়ঙ্কর আক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করার চ্যালেঞ্জ ছিল; কিন্তু বোলিং সহায়ক উইকেটে কেমন বোলিং করলো বাংলাদেশ? সব চেয়ে অভিজ্ঞ রুবেলকেই খেলানো হলো না। এই উইকেটে দুই জন অফস্পিনার বাহুল্য সেটা টিম ম্যানেজম্যান্টকে বোঝাবে কে?

কিছু প্রশ্ন থাকবে সাইফউদ্দিন কী অসুস্থ? অনুশীলন ম্যাচে ভালো খেলা রুবেল কেন ছিলেন না দলে? যখন তামিম-মুশফিক দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারলেন না, সেখানে এগুলো নিয়ে কী বলবো। প্রথম খেলায় বাংলাদেশ দলের শোচনীয় পরাজয় গোটা সফরের উপর অশুভ প্রভাব ফেলে কী না সেই শঙ্কা হচ্ছে। পরের দুটো খেলা ক্রাইস্টচার্চ ও ওয়েলিংটনে । বাংলাদেশ ভুল-ত্রুটি গুলো শুধরে ভালো খেলবে সেই প্রত্যাশা করি।

লেখক: জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ক্রিকেট লেখক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়