ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বৃষ্টি আইনের মারপ্যাঁচে সুযোগ হাতছাড়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৫, ৩০ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৭:০৭, ৩০ মার্চ ২০২১
বৃষ্টি আইনের মারপ্যাঁচে সুযোগ হাতছাড়া

এমনটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর আগে হয়নি কখনো। ম্যাচ চলছে। আম্পায়ার ম্যাচ থামিয়ে দুই দলের প্রতিনিধিকে ডেকে জানাচ্ছেন, টার্গেট পরিবর্তন করতে হবে! ভাবা যায়? আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এতসব সুযোগ-সুবিধা ও প্রযুক্তি থাকার পরও এমন ভুল?

নেপিয়ারে কৃত্রিম আলোয় বাংলাদেশ ও নিউ জিল্যান্ডের ম্যাচে বৃষ্টির বাগড়া। দুইবার বৃষ্টির বাধার পর নিউ জিল্যান্ডের রান ১৭.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৩। ম্যাচ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ব্যাটিংয়ে আসল বাংলাদেশ। শুরুতে জানাল হলো বৃষ্টি আইনে ১৬ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৪৮ রান। লক্ষ্য তাড়ায় সতর্ক শুরু। ১.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ১২।

এরপর বৃষ্টি আইনের নাটক! আম্পায়ার দুই দলের প্রতিনিধিদের ডাক দিয়ে জানান, হিসেবের গন্ডগোলে ১৪৮ রান ভুলে দেওয়া হয়েছিল। নতুন লক্ষ্য একই ওভারে ১৭০! সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ করতে পারল ৭ উইকেটে ১৪২ রান। বৃষ্টি আইনের মারপ্যাঁচে সুযোগ হাতছাড়া বাংলাদেশের। ২৮ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিলে স্বাগতিকরা।

স্বাগতিক দলের জয় অবশ্য মন ভরায়নি ছুটিতে থাকা পেস অলরাউন্ডার জিমি নিশামের। তাইতো টুইট করে বললেন, ‘কত রান তাড়া করতে হবে সেটা না জেনেই ব্যাটিংয়ে নামা? কিভাবে সম্ভব! উলটপালট কাজ।’ 

বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে বড় ব্যবধানে। বল ও রানের হিসাব মেলাতে পারেনি। তবে টি-টোয়েন্টিতে বড় প্রাপ্তি সৌম্য সরকারের রানে ফেরা। ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হয়ে আসা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান অতিথি শিবিরে আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছিলেন। সঙ্গী ছিলেন নাঈম শেখ। কিন্তু দুই বাঁহাতির বিদায়ে সব আশা শেষ বাংলাদেশের।

লিটন দাস ৫ বলে ৬ রান করে সাজঘরে ফেরার পর সৌম্য ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড় তোলেন। লেগ স্পিনার ইশ সোধিকে রিভার্স সুইপে চার মারার পর টানা দুই বলে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা। পরের ওভারে অ্যাডাম মিলনেকে পয়েন্টের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা, মিড উইকেট দিয়ে চার। ওই ওভারে নাঈমও ডানহাতি পেসারকে সীমানার বাইরে পাঠান। পরপর দুই ওভারে বাংলাদেশ পায় ১৯ ও ২১ রান। ৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৮০।

এক সময়ে সৌম্যর ব্যাটে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম টি-টোয়েন্টির রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছিলো। ১৫ বলে তার রান ছিল ৪০। আশরাফুল ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০ বলে করেছিলেন ৫০ রান। কিন্তু সৌম্যর ব্যাট পরবর্তীতে হাসেনি, হাসেনি বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডও।

৯৪ রানে তার বিদায়ের পর বাংলাদেশের কেউ দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২৭ বলে তার ১৮৮.৮৯ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংসটি ছিল ৫১ রানের। ৪ মেরেছেন ৫টি, ছক্কা ৩টি। আরেক ওপেনার নাঈম ধীর গতিতে ব্যাটিং করে ৩৫ বলে তুলেছেন ৩৮ রান।

বোলিংয়ে এদিনও বাংলাদেশের ফিল্ডিং ছিল খাপছাড়া। মাহমদউল্লাহ ইনিংসের শুরুতে মিলনের ক্যাচ মিস করেন। অবশ্য তাসকিন আহমেদ ফিন অ্যালেনকে ফিরিয়ে ভাঙেন উদ্বোধনী জুটি। সীমানায় ফিল্ডিংয়ে ক্ষিপ্রতা দেখাতে পারেননি কেউ। বল গ্যাপে পাঠিয়ে কিউই ব্যাটসম্যানরা আরামে সিঙ্গেলকে ডাবল বানিয়েছেন। তাতে বাউন্ডারি না আসলেও স্বাগতিকরা কখনও চাপে থাকেনি। অবশ্য তাসকিন ভালো বোলিংয়ের পাশাপাশি পরে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন।

বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন শরিফুল ইসলাম। আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া এ পেসার দিয়েছিলেন চার ওভারে ৫০ রান। এবার দ্বিতীয় ওভারে পেয়ে যান ডেভন কনওয়ের উইকেট। সব মিলিয়ে ৩ ওভারে ১৬ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। মেহেদী হাসান ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা। তবে ৪ ওভারে খরচ করেছেন ৪৫ রান। নাসুম ছিলেন নিখুঁত। ৪ ওভারে দিয়েছেন ২৫ রান।

সব মিলিয়ে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে উন্নতির ছাপ স্পষ্ট। তবে ফিল্ডিং এখনও তলানিতে। তিনের সমন্বয়ে আসে সাফল্য। নিউ জিল্যান্ড নিজেদের হিসাব মেলাতে পারলেও বাংলাদেশ পারছে না। এজন্য সোনার হরিণ নামক জয় এখনও অধরা লাল-সবুজদের। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) অকল্যান্ডে ধবলধোলাই এড়ানোর ম্যাচ। শেষটা অন্তত রাঙাতে পারবে তো বাংলাদেশ?

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়