ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সাঈদের ইনিংস মনে করিয়ে দিলেন ফখর

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০২, ৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৭:১৯, ৫ এপ্রিল ২০২১
সাঈদের ইনিংস মনে করিয়ে দিলেন ফখর

সেঞ্চুরিয়ান পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তান সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতেছিল। শেষ ওভারে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ জয় দিয়ে শুরু করেছিল তারা। তৈরি করেছিল ভয়-ডরহীন ক্রিকেটের দৃষ্টান্ত। রোববার (৪ এপ্রিল) দ্বিতীয় ম্যাচেও পাকিস্তান উত্তেজনার রেণু ছড়ালো ফখর জামানের ব্যাটে কঠিন লক্ষ্য ছুঁতে গিয়ে। তার বীরত্বপূর্ণ ইনিংস দলকে জেতাতে না পারলেও হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, মনে করিয়ে দিয়েছেন সাবেক ব্যাটিং গ্রেট সাঈদ আনোয়ারের ইনিংসকে।

১৯৯৭ সালের মে মাসে পেপসি ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছিলেন সাঈদ। বাঁহাতি ওপেনার চেন্নাইয়ের ওই ম্যাচে রেকর্ড ১৯৪ রান করেছিলেন ১৪৬ বলে ২২ চার ও ৫ ছয়ে। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস হিসেবে তা টিকে ছিল ১৩ বছর, যা ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে ভেঙেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গোয়ালিয়রে ২০০ রানে অপরাজিত ছিলেন ভারতের ব্যাটিং গ্রেট।

অবশ্য পাকিস্তানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের কীর্তি গড়ে তিন বছর আগেই সাঈদকে পেছনে ফেলেছেন ফখর। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৪৪ রানের বিশাল জয়ে ২১০ রানে অপরাজিত ছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। এবার ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মার পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে একাধিক ডাবল সেঞ্চুরির মালিক হতে পারতেন ফখর। কিন্তু পারেননি শেষ ওভারের প্রথম বলে কুইন্টন ডি ককের চতুরতার ফাঁদে পড়ে রান আউট হয়ে।

৩৪২ রানের টার্গেটে নেমে ১৭ রানে হেরে গেছে পাকিস্তান। তবে ১৯৩ রানের ইনিংস খেলে সবার মন জিতে নিয়েছেন ফখর। বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে ২০৫ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে অসহায় আত্মসমর্পণের মুখে পড়তে যাচ্ছিল সফরকারীরা। কিন্তু ডেথ ওভারে শাহীন শাহ আফ্রিদিকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান ফখর। ৪৪ বলে তাদের জুটি ছিল ৬৮ রানের, তাতে মাত্র ৫ রান করে অবদান রাখেন শাহীন।

পরে হারিস রউফকে নিয়ে ৩৮ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের উত্তেজনা শেষ ওভারে নিয়ে যান ৩০ বছর বয়সী ওপেনার। দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্নায়ুচাপে ফেলে দিয়েছিলেন ফখর। শেষ পর্যন্ত তিনি আউট হলে ৯ উইকেটে ৩২৪ রানে থামে পাকিস্তান।

এর আগে শহীদ আফ্রিদি ও আব্দুল রাজ্জাকের পর তৃতীয় পাকিস্তানি হিসেবে এক ইনিংসে অন্তত ১০ ছয় হাঁকান ফখর। ওয়ানডের ইতিহাসে রান তাড়ায় এটাই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। আর জোহানেসবার্গেও সর্বোচ্চ রান করেছেন হার্শেল গিবসকে (১৭৫) পেছনে ফেলে।

প্রায় ২৪ বছর আগে এমনই এক দানবীয় ইনিংস খেলেছিলেন সাঈদ। মাত্র ৮ রানে শহীদ আফ্রিদি (৫) ফিরে যান তার সঙ্গে উদ্বোধনী জুটি গড়ে। অধিনায়ক রমিজ রাজার (২২) সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৮৯ রানের জুটি। এর পর ইজাজ আহমেদকে (৩৯) নিয়ে ১১৬ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে। ইনজামাম উল হকের সঙ্গে বড় জুটি গড়ার পথে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করার অপেক্ষায় ছিলেন সাঈদ, কিন্তু পারেননি। অ্যাবে কুরুভিল্লার বলে সৌরভ গাঙ্গুলির হাতে ক্যাচ দেন, ৬ রানের আক্ষেপ নিয়ে ফিরে যান।

ওই ম্যাচে সাঈদের রেকর্ড গড়া ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান করেছিল ৫ উইকেটে ৩২৭ রান। পরে আকিব জাভেদের ফাইফারে ৩৫ রানে ভারতকে হারায় তারা। ওই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় স্বাভাবিকভাবে হয়েছিলেন সাঈদ, জোহানেসবার্গেও ম্যাচ সেরা হলেন ফখর। কিন্তু পার্থক্য কেবল ফলে। তাই তো দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি না করার আক্ষেপ ছাপিয়ে ফখরের কণ্ঠে অন্য আক্ষেপের সুর, ‘আমার অনুশোচনা ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারিনি বলে নয়, ম্যাচ জিতলাম না বলে।’

আরও খবর...

* ফখরের অবিশ্বাস্য ইনিংসে লড়াই করে হার পাকিস্তানের

ঢাকা/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ