টেস্টে পেসারদের ৫ উইকেটের জন্য আর কত বছর অপেক্ষা?
আবু জায়েদ রাহী পাল্লেকেলেতে উইকেট পাননি। সুযোগও তৈরি করতে পারেননি। কিন্তু সুযোগ তৈরি করলেই যে উইকেট পেতেন সেই নিশ্চয়তা কী আছে? ডানহাতি পেসার তো সুযোগ তৈরি করেছিলেন নিউ জিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে, ভারতের ইন্দোরে।
কিন্তু ফিল্ডাররা নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। রাহীও পাননি টেস্টে তার প্রথম ৫ উইকেটের স্বাদ। ওয়েলিংটনে তার বোলিংয়ে দুই ক্যাচ, ইন্দোরে এক ক্যাচ মিস করে তো ফিল্ডাররা তাকে মাইলফলক থেকে বঞ্চিত করেছেন। সেসব ম্যাচে তার শিকার ছিল যথাক্রমে ৩ ও ৪ উইকেট।
তাসকিনের কথাই ধরুন। পাল্লেকেলের তৃতীয় দিনের সকালে ডানহাতি পেসার পেলেন নিজের চতুর্থ উইকেট। স্বাগতিক অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে এরপর ইনিংস ঘোষণা করেন। ক্যারিয়ার সেরা ৪ উইকেট নিয়ে তাসকিন কী সন্তুষ্ট। নিশ্চয়ই না। তার নামের পাশে থাকতে পারতো ৬ উইকেট। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় তাসকিনের মুখে নেই চড়া হাসি।
প্রশ্ন উঠছে, টেস্টে পেসারদের ৫ উইকেটের জন্য আর কত বছর অপেক্ষা করতে হবে? ঝটপট উত্তর দিতে পারেন তারা, ‘ক্যাচ না নিলে উইকেট পাবো কী করে।’
টেস্টে বাংলাদেশের পেসাররা শেষ ৫ উইকেট পেয়েছিল ২০১৩ সালে। দেশে ও বাইরে মিলিয়ে বাংলাদেশের পেসাররা টেস্টে ৫ উইকেট পেয়েছেন আটবার। শাহাদাত হোসেন রাজীব একাই পেয়েছেন চারবার। এছাড়া রবিউল ইসলাম শিপলু দুইবার, মানজারুল ইসলাম ও রুবেল হোসেন পেয়েছেন একবার করে। তাসকিন, রাহীরাও ঢুকে যেতে পারতেন এ ক্লাবে। কিন্তু ভাগ্য তাদের সহায়তা করেননি।
দেশের মাটিতে মাত্র তিনবার পেসাররা ৫ উইকেট পেয়েছেন। দেশের বাইরে পাঁচবার। ঘরের মাঠে টেস্টে বাংলাদেশের পেসাররা যে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পান না এ পরিসংখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে আরেকবার বুঝিয়ে দিলো।
পাল্লেকেলের ন্যাড়া উইকেটে সাফল্যর জন্য ধারাবাহিক বোলিং করা ছিল আবশ্যক। ডানহাতি পেসার তাসকিন সেই কাজটা ভালোমতো করেছেন। গতি, আগ্রাসন ছিল আপ টু মার্ক। সঙ্গে উইকেট থেকে মুভমেন্ট আদায় করে নিতে পেরেছেন। তাতে ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিং স্বর্গ উইকেটে কিছুটা হতেও চাপে ছিলেন।
প্রথম দিন আঁটসাঁট বোলিংয়ে সাফল্য মেলেনি। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত স্লিপে ক্যাচ ফেলায় উইকেট বঞ্চিত হন তাসকিন। শুক্রবার দ্বিতীয় দিন তাসকিনের অপেক্ষা ফুরায়। দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় তার লেগস্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সেঞ্চুরিয়ান লাহিরু থিরিমান্নে। দুই ওভার পর নতুন ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে দারুণ এক ডেলিভারিতে লিটন দাশের হাতে ক্যাচ জমান।
অবশ্য থিরিমান্নেকে ফেরানোর ওভারেই ম্যাথুজের উইকেট পেয়ে যেতে পারতেন তাসকিন। তার বল ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে যায়। ফিল্ডার ও বোলাররা কেউ আবেদন না করায় জীবন পান সাবেক লঙ্কান অধিনায়ক। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ২ উইকেট নিয়ে স্বস্তিতে ছিলেন তিনি।
বিরতির পর নিজের দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে প্রথম ওভারেই তাসকিনের উইকেট। তার নিচু হওয়া ভেতরে ঢোকানো বলে বোল্ড হন পাথুম নিশানকা। শেষ বিকেলে পেতে পারতেন আরও একটি উইকেট। কিন্তু তার বলে রমেশ মেন্ডিসের ক্যাচ মুঠোবন্দি করতে পারেননি সেই শান্ত। তৃতীয় দিন সকালে মেন্ডিসকে সীমানায় মুশফিকের হাতে তালুবন্দী করিয়ে তাসকিন ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের দেখা পান।
টেস্টে বাংলাদেশের পেসারদের পাঁচ উইকেট
|
বোলিং ফিগার |
প্রতিপক্ষ |
ভেন্যু |
সাল |
শাহাদাত হোসেন |
২৭/৬ |
দক্ষিণ আফ্রিকা |
ঢাকা |
২০০৮ |
রবিউল ইসলাম |
৭১/৬ |
জিম্বাবুয়ে |
হারারে |
২০১৩ |
মানজারুল ইসলাম |
৮১/৬ |
জিম্বাবুয়ে |
বুলাওয়ে |
২০০১ |
শাহাদাত হোসেন |
৭১/৫ |
ভারত |
চট্টগ্রাম |
২০১০ |
রবিউল ইসলাম |
৮৫/৫ |
জিম্বাবুয়ে |
হারারে |
২০১৩ |
শাহাদাত হোসেন |
৮৬/৫ |
শ্রীলঙ্কা |
বগুড়া |
২০০৬ |
শাহাদাত হোসেন |
৯৮/৫ |
ইংলান্ড |
লর্ডস |
২০১০ |
রুবেল হোসেন |
১৬৬/৫ |
নিউ জিল্যান্ড |
হ্যামিলটন |
২০১০ |
ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম
আরো পড়ুন