ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ব্যাটে-বলে নিষ্প্রভ সাকিব, আলোচনায় রইলেন বিতর্কিত কাণ্ডে

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ১৭ জুন ২০২১   আপডেট: ২৩:৪২, ১৭ জুন ২০২১
ব্যাটে-বলে নিষ্প্রভ সাকিব, আলোচনায় রইলেন বিতর্কিত কাণ্ডে

সাকিব আল হাসান

পাঁচ বছর পর সাকিব আল হাসান খেলবেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। তার ঠিকানা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ঐতিব্যবাহী ক্লাবটিতে সাকিব শুধু খেলবেন-ই না, তার কাঁধে অধিনায়কত্বও।

ঢাকা লিগে মাঠে গড়ানোর আগে সাকিবের অন্তর্ভূক্তিতে যে উত্তাপ ছড়িয়েছিল তা নিরুত্তাপ হতেও সময় নেয়নি। কারণ একটাই, ব্যাট-বলে সাকিব একেবারেই নিষ্প্রভ। হাসছিল না ব্যাট। বলের ঘূর্ণি একেবারে সাদামাটা। দুইয়ে মিলিয়ে পারফরম্যান্সও গড়পড়তা। যে সংখ্যাগুলি তার নামের পাশে একের পর এক যুক্ত হচ্ছিল তা বড্ড বেমানান।

৮ ম্যাচ শেষে সাকিবের রান ১২০। উইকেট ৯টি। ব্যাটিং গড় ১৫। বোলিং গড় ১৮.৪৪। ব্যাটিংয়ে স্ট্রাইক রেট ১০৯.০৯। বোলিংয়ে ৬.৫৯। তার দল সুপার লিগে উঠেছে ঠিকই। তবে যে প্রত্যাশায় সাকিবকে নেওয়া হয়েছি তা পূরণ হয়েছে কি না তা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন থেকে যায়।

মাঠের পারফরম্যান্সে রসকস না থাকায় সাকিবও ছিলেন না আলোচনায়। তবে বিতর্কিত এক কাণ্ডে সব আলো নিজের কাছে নিয়ে নেন। আবাহনী ও মোহামেডান ম্যাচে আগের সেই জৌলুস নেই। ম্যাচটা আর আট-দশটা ম্যাচের মতোই সাদামাটা হবে তা ভেবেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাকিবের এক কাণ্ডে ক্রিকেট বিশ্বের নজর মিরপুর শের-ই-বাংলায়।

ম্যাচে মুশফিকের আউটের আবেদন নিজের পক্ষে না আসায় স্টাম্পে লাথি দেন সাকিব। এরপর আম্পায়ার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ করতে চাইলে তিন স্টাম্প তুলে আছাড় দেন। দুইবারই আম্পায়ারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন, অমার্জিত ভাষা ব্যবহার করেন।

খেলার মাঠে এমন ঘটনা ঘটনোয় শাস্তি হিসেবে সাকিব তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা গুনেছেন। সাকিব নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। অবশ্য সেটাই প্রথম ঘটনা নয়। এর এক সপ্তাহ আগে জৈব সুরক্ষা বলয় ভেঙে অনুশীলন করেছিলেন তিনি। তার অনুশীলনে বাইরে থেকে ব্যক্তি প্রবেশ করায় বিসিবি ও লিগের আয়োজক সিসিডিএম বিরক্তও হয়েছিল। পরবর্তীতে সিসিডিএমের সভায় দুঃখ প্রকাশ করে পার পেয়ে যান। তার ক্লাবকে সতর্ক করা হয়।   

সাকিব বরাবরই নিয়মিত পারফর্মার। ব্যাটিং নয়তো বোলিং কোনোটা দিয়ে পুষিয়ে দেন। থাকেন আলোর ভেতরেই। আবার তার দিনে তিনি একাই নায়ক। কিন্তু এবার লিগে সাকিব উল্টোচিত্র দেখলেন। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে পুরোপুরি অনুজ্জ্বল।  

বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কার বাদে মোহামেডানের বাকি ৫ জয়ের কোনোটাইতে নায়ক হতে পারেননি। তার নিষেধাজ্ঞায় মোহামেডান জিতেছে ২টি, বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে ১টি। ফলে মোহামেডানের সুপার লিগ নিশ্চিতে সাকিবের খুব অবদান আছে তা বলা যাবে না নিশ্চিয়ই।

পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে দেখা যাচ্ছে, ব্যাটিংয়ে ছটফট করে বেশিরভাগ সময় আউট হয়েছেন সাকিব। টাইমিংয়ে গড়বড় হচ্ছে। হ্যান্ড আই কো অর্ডিনেশনে মিল নেই। প্রত্যেকবার আউট হয়ে নিজে হতাশায় ডুবছেন। চোখেমুখে বিরক্তি স্পষ্ট ছিল। আর বোলিংয়ে ছিলেন আঁটসাট। স্পিনে ধার একেবারেই কম।

সাকিবের দল সুপার লিগে উঠেছে পঞ্চম স্থানে থেকে। ব্যক্তিগত কারণে সুপার লিগে খেলবে না তিনি। লিগ শুরুর আগে সাকিব বলেছিলেন, ‘লক্ষ্য অবশ্যই থাকবে যেন তালিকার ওপরে থাকতে পারি।’ সাকিব নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেননি। দলগতও লক্ষ্যও অধরা! তবে ক্লাব রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষিতে মোহামেডান সেরা ছয়ে থেকেই মহাখুশি।

সাকিবের পারফরম্যান্স দিয়ে লাইমলাইটে আসেনি মোহামেডান। তবে বিতর্কিত কাণ্ডে মোহামেডান কর্মকর্তাদের রাতের ঘুম ঠিকই কেড়ে নিয়েছেন তিনি।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়