ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

জয়ের ‘হাফ সেঞ্চুরিতে’ উদ্ভাসিত বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৯, ২০ জুলাই ২০২১   আপডেট: ২২:৪২, ২০ জুলাই ২০২১
জয়ের ‘হাফ সেঞ্চুরিতে’ উদ্ভাসিত বাংলাদেশ

এই তো দুই দিন আগেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৪১ রান করতে গিয়ে ঘাম ছুটে গিয়েছিল বাংলাদেশের। সাকিব আল হাসানের ব্যাটে চড়ে শেষ ওভারে শ্বাসরুদ্ধকর জয় তারা পেয়েছিল ৩ উইকেটে। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) হারারের একই মাঠে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হলো জিম্বাবুয়ে, রান করলো ২৯৮! ম্যাচ হাতের মুঠোয় নিয়ে ফেলেছে, এমনটাই ভাবছিল হয়তো স্বাগতিকরা। সাইফউদ্দিনের অনাকাঙ্ক্ষিত বোলিং রেকর্ডকে এর জন্য দায়ী করা যেতেই পারে। কিন্তু বাংলাদেশ যে দলগত পারফরম্যান্স করতে দক্ষ হয়ে উঠেছে। দুই মাসের বিশ্রামে যাওয়ার আগে তামিম ইকবাল জ্বলে উঠলেন। লিটন দাস, সাকিব ও মোহাম্মদ মিঠুনের ছোটখাটো অথচ গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পর নুরুল হাসান সোহানের চমৎকার ফিনিশিং। পাঁচ বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি। তাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫০তম জয়ে উদ্ভাসিত বাংলাদেশ।

স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাট করতে নেমে রেগিস চাকাবার ব্যাটে বাংলাদেশি বোলারদের শাসন করছিল জিম্বাবুয়ে। এই ওপেনার দলীয় স্কোর ১৭২ রানে রেখে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরে যান। ৯১ বলে করেন ৮৪ রান। উইকেটে জুটি গড়েন সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্ল। চাকাবার চেয়েও ভয়ঙ্কর ছিলেন তারা দুজন। সাইফের ওপর বেশি চড়াও হন তারা। ৪৭তম ওভারে ২২ রান দেন। ৭ ওভারে ৭৯ রান দেওয়ার পর অবশ্য সাইফ তা পুষিয়ে দেন অষ্টম ওভারে বার্লসহ তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ৮৭ রান দেওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড এড়াতে পারেননি তিনি। বার্ল ও সিকান্দারের ৮০ বলে ১১২ রানের জুটিতে তিনশ ছাড়ানোর আভাস দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু পারেনি সাইফের দুর্দান্ত ৪৯তম ওভারের কারণে।

মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন সাইফ। তামিম শেষ দিকের এই কয়েকটি ওভারকে গুরুত্বপূর্ণ বললেন, ‘জিম্বাবুয়ে আরও ২৫-৩০ রান বেশি করতে পারতো। কিন্তু আমরা শেষ দুই তিন ওভারে ভালো বল করেছিলাম। ব্যাটিং ইউনিটের জন্য এটা ছিল ভালো চ্যালেঞ্জ এবং আমরা ভালো সাড়া দিয়েছি।’ সত্যিই তাই, আরও ত্রিশের মতো রান হলে বাংলাদেশের জন্য জেতা কঠিনই হয়ে যেতো। অবশ্য ম্যাচ শেষে এমনটা মনেই হতে পারে।

কিন্তু জিম্বাবুয়ে তো ধরেই নিয়েছিল শেষ ম্যাচটা তারা জিততে যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ বড় লক্ষ্য পেয়েও সতর্ক ছিল। বিশেষ করে তামিম ও লিটন দেখেশুনে খেলে যেতে থাকেন। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান বেশ পরিপক্ব শুরুর পরিচয় দেয়। ৮৮ রান করে ভেঙেছে এই জুটি, লিটন থামেন ৩২ রানে। এরপর গত ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় সাকিব সঙ্গ দেন তামিমকে। ৫৯ রানের কার্যকরী জুটি গড়েন দুজনে। সাকিব ফিরে যান ৩০ রান করে।

তামিম সেঞ্চুরি করে দলকে দুইশ পার করানোর পর হঠাৎ ছন্দপতন। ৮৭ বলে নিজের দ্রুততম সেঞ্চুরি করে বাঁহাতি ওপেনার জয়ের ভিত গড়ে দেন। মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ৫৭ রান যোগ করে দলীয় ২০৪ রানে তিনি থামেন ১১২ রান করে। দুইশতম ম্যাচ খেলতে নেমে মাহমুদউল্লাহ গোল্ডেন ডাক। মাইলফলকের ম্যাচে কেবল বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে সফল তিনি। এক ওভারে দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে যখন বিপদে পড়ে বাংলাদেশ, তখন মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে হাল ধরেন সোহান।

মিঠুন দলীয় ২৬৮ রানে আউট হন, তবে তাদের ৬৪ রানের জুটিতে তখন ম্যাচ বাংলাদেশের হাতের মুঠোয়। আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের ক্যানভাসে শেষ তুলির আঁচড় দেন সোহান। ৩৯ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। দলকে জেতালেও প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপ থেকেই যেতে পারে। আফিফ ৪৮তম ওভারের শেষ দুই বলে ছয় ও চার মেরে ৫ উইকেটে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। তাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের মাইলফলক স্পর্শ করে বাংলাদেশ। আর এই জয়ে সুপার লিগের পুরো ৩০ পয়েন্ট সংগ্রহ করে তারা। একই সঙ্গে হোয়াইটওয়াশ, ৫০তম জয় আর ৩০ পয়েন্ট। আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে দারুণ একটা দিন পার করলো বাংলাদেশ।

ঢাকা/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়