বাংলাদেশের জয়রথ থামালো অসাধারণ জিম্বাবুয়ে
টসের সময়ই সিকান্দার রাজা বলেছিলেন, ‘আমরা পরিকল্পনায় কোনও পরিবর্তন আনবো না। গতকাল আমরা কিছু রান কম করেছিলাম। আজ আমাদের বড় রানের লক্ষ্য থাকবে। আশা করছি তাতেই হবে।’
জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের কথা রেখেছেন ব্যাটসম্যানরা। ওয়েসলি মাধেভেরের ৭৩ ও রায়ান বার্লের ১৯ বলে ৩৪ রানের ঝড়ে তাদের রান ৬ উইকেটে ১৬৬। আগের দিনের থেকে ১৪ রান বেশি। রান খুব বেশি না হলেও ওই ১৪ রানের ব্যবধানই বাংলাদেশের জন্য বড় হয়ে গেলো! ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশ করতে পারলো মাত্র ১৪৩ রান। ২৩ রানে ম্যাচ হেরে সফরের প্রথম পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো বাংলাদেশের।
ব্যাটিং-বোলিংয়ে পারফরম্যান্স নির্বিষ ও ধারাবাহিকতা না থাকায় জয় থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ এবং প্রথম টি-টোয়েন্টি হারের পর জিম্বাবুয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে তাদের জয়রথ থামালো।
রঙিন পোশাকে ১৮ ম্যাচ পর বাংলাদেশকে হারালো জিম্বাবুয়ে। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে ২০১৬ সালে খুলনায় বাংলাদেশকে হারিয়েছিল তারা। পাঁচ বছর পর পাওয়া জয় সত্যিই কি তাদের জন্য বড় নয়?
জিম্বাবুয়েকে বড় ইনিংসের ভিত গড়ে দেন মাধেভেরে। তরুণ ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসানকে উইকেটে স্বাগত জানান দারুণ ছক্কা হাঁকিয়ে। ইনসাইড আউট শটে লং অন বল পাঠান সীমানার বাইরে। পরের বল আবার চার। এভাবেই চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে সাজান তার ৭৩ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস। ৫৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকান তিনি। এছাড়া চারে নেমে ডিয়ন মায়ার্স ২৬ রান করেন। তবে দলের স্কোর বড় করার পেছনে বার্লের শেষ ঝড়টাই ছিল সবচেয়ে কার্যকরী। ১৯তম ওভারে সাইফ উদ্দিনকে চার-ছক্কা উড়িয়ে ১৬ রান আদায় করেন। শেষ ওভারে শরিফুলকেও হাঁকান ছক্কা। শেষ পর্যন্ত ২টি করে চার ও ছক্কায় ১৯ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
বোলিং চোটে পড়া মোস্তাফিজের অভাব অনুভব হচ্ছিল। তাসকিন তার পরিবর্তে ফিরলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন ২৮ রান। কোনও উইকেট পাননি। শরিফুল ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। সাইফউদ্দিন ৩৬ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। সাকিব ৩২ রানে পেয়েছেন ১ উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় ১৭ রানে দুই ওপেনার সাজঘরে। নাঈম ও সৌম্য মুজারাবানির পেসে পরাস্ত হয়ে সাজঘরে ফেরেন। মেহেদীকে সঙ্গে নিয়ে সাকিব এগিয়ে গেলেও বেশিদূর যেতে পারেননি। স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা আক্রমণে আসার পর তালগোল পাকিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ১০ বলের ব্যবধানে নেই সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদীর উইকেট। প্রত্যেকটি উইকেট নেন মাসাকাদজা।
টিকতে পারেননি কাজী নুরুল হাসান সোহানও। ৬৮ রানে নেই ৬ উইকেট। এরপর অভিষিক্ত শামীমের কারিশমা। তার ১৩ বলে ২৯ রানের ক্যামিওতে আশার সঞ্চার হয়। মনে হচ্ছিল বাংলাদেশকে তিনি একাই জেতাবেন। কিন্তু বাড়তি আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন শামীম। জংউইর বল উড়াতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন। তাতে প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংসটি থেমে যায়। এরপর আফিফের ২৪ ও সাইফউদ্দিনের ১৯ রান পরাজয়ের ব্যবধান কমায় মাত্র।
মাসাকাদজার বোলিংয়ে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে যায়। শেষে লেজটা কাটেন জংউই। তাতে জয়টা অনায়াসে চলে আসে জিম্বাবুয়ের। একদিন পর একই মাঠে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। শেষ ম্যাচটা জমজমাট হবে তা বলাই যায়।
ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম
আরো পড়ুন