ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সব প্রতিকূলতা ঠেলে অলিম্পিকের জমকালো উদ্বোধনী

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪২, ২৩ জুলাই ২০২১   আপডেট: ২২:৩৬, ২৩ জুলাই ২০২১
সব প্রতিকূলতা ঠেলে অলিম্পিকের জমকালো উদ্বোধনী

কতশত প্রতিকূলতা। করোনাভাইরাসের জেরে নিজ দেশের নাগরিকদের বিরোধিতা, স্পন্সরদের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা, আয়োজক কর্মকর্তাদের পদত্যাগ ও বরখাস্ত, অ্যাথলেটদের আক্রান্ত হওয়া! শেষ মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা। সব প্রতিকূলতা ঠেলে শুক্রবার টোকিওর অলিম্পিক স্টেডিয়ামে হয়ে গেলো এক জমকালো, বর্ণিল, উৎসবমুখর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা উঠলো গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থের।

সাবেক জাপানি অলিম্পিয়ানদের পতাকা বহন করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। তাদের সঙ্গে স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন সম্রাট নারুহিতো, সঙ্গে ছিলেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রধান থমাস বাখ। দেশের জনপ্রিয় গায়ক মিসিয়ার কণ্ঠে পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত কিমিগায়ো। তারপর এক মিনিটের নীরবতা পালন, স্মরণ করা হয় করোনায় প্রাণ হারানো অগণিত মানুষদের। ১৯৭২ সালের বার্লিন অলিম্পিকে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ইসরায়েলি অ্যাথলেটদেরও স্মরণ করা হয়। এরপর বাংলাদেশর নোবেল জয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে ভার্চুয়ালি বিশেষ সম্মাননা পদক অলিম্পিক লরেল দেওয়া হয়।

পরের পর্বে শুরু হয় অলিম্পিকে অংশ নিতে যাওয়া দেশের প্যারেড। সবার আগে পতাকা নিয়ে ঢোকেন অলিম্পিকের উৎপত্তিস্থল গ্রিসের অ্যাথলেটরা। এরপর একে একে শরণার্থী অলিম্পিক দল, গ্রেট ব্রিটেন, ইতালি, আমেরিকার অ্যাথলেটরা। বাংলাদেশের অ্যাথলেটরাও অংশ নেন প্যারেডে। পতাকা যৌথভাবে বহন করেন সাঁতারু আরিফুল ইসলাম ও দিয়া সিদ্দিকী। কেনিয়া ও টোঙ্গার অ্যাথলেটরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে প্যারেড করে সবার নজর কাড়েন। সব শেষে জাপানের অ্যাথলেট দল মাঠে ঢোকে।

পরে হয় শপথ অনুষ্ঠান। অ্যাথলেট, কোচ ও জাজরা শপথ নেন। তারপর রাতের আকাশে নীল আলোর ঝলকানি। ১৮২৪টি ড্রোন ব্যবহার করে টোকিও অলিম্পিকের প্রতীক তৈরি করা হয়। বিশ্বের প্রতীকও তৈরি করা হয়, যা মুগ্ধ করেছে উপস্থিত সবাইকে।

আয়োজক কমিটির প্রেসিডেন্ট হাশিমোতো সেইকো তার বক্তব্যে বলেন, ‘কোভিডের কারণে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে গোটা বিশ্ব। স্বাস্থ্যসেবা ছাড়াও সব সম্মুখযোদ্ধাতের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সম্মান জানাই।’ তার পরে বক্তব্য রাখেন বাখ, ‘এই মুহূর্তটা আশার। চলুন সবাই এই মুহূর্ত উপভোগ করি, কারণ শেষ পর্যন্ত আমরা এখানে, সবাই একসঙ্গে। ২০৫টি জাতীয় অলিম্পিক কমিটি ও আইওসি শরণার্থী অলিম্পিক দলের অ্যাথলেটরা অলিম্পিক ভিলেজে এক ছাদের নিচে একসঙ্গে হয়েছে। এটাই ক্রীড়ার একত্রীকরণ শক্তি।’

সব শেষে বাখ আমন্ত্রণ জানান জাপানের সম্রাট নারুহিতোকে। ৩২তম অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী ঘোষণা করেন তিনি, ‘আমি টোকিও গেমসের উদ্বোধনী ঘোষণা করছি, আসুন আধুনিক যুগের ৩২তম অলিম্পিয়াড উপভোগ করি।’ সঙ্গে সঙ্গে আরেকবার লাল-নীল আতশবাজির ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে গোটা টোকিও। তারপর ভেন্যুর অলিম্পিক কলড্রনে মশাল রাখেন জাপানের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী টেনিস তারকা নাওমি ওসাকা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ডিরেক্টর সেইকো হাশিমোতো একদিন আগেই বরখাস্ত হয়েছেন। তাকে ছাড়াই বর্ণিল আয়োজন ভালোভাবে শেষ  করলো আয়োজকরা, সেই অনুষ্ঠানের কিছু মুহূর্ত তুলে ধরা হলো:

মঞ্চে পারফর্ম করছেন শিল্পীরা।

মঞ্চ মাতিয়ে রাখলেন উপস্থিত সবাই।

জাপানিরা তাদের ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরলো।

১৯৬৪ সালে আয়োজক ছিল টোকিও। ওই অলিম্পিকে দেশের অ্যাথলেটরা যে গাছগুলো লাগিয়েছিলেন, তারই কাঠ থেকে তৈরি হলো এবারের অলিম্পিক রিং।

আইওসি শরণার্থী অলিম্পিক দলের প্যারেড।

ঐতিহ্যবাহী পোশাকে প্যারেডে অংশ  নেয় কেনিয়া।

আরিফুল ও দিয়া বহন করেছেন বাংলাদেশের পতাকা।

৬ জন ক্রীড়াবিদ এবার বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন। প্যারেডে বাংলাদেশের বহর।

এটা চাঁদ নয়। টোকিওর আকাশে ১৮২৪টি ড্রোন ব্যবহার করে তৈরি করা হয় টোকিও অলিম্পিকের প্রতীক, এক পৃথিবী।

সম্রাট নারুহিতো উদ্বোধনী ঘোষণা করতেই আতশবাজির ঝলকানি দেখা যায়।

টোকিও অলিম্পিকের জ্বলন্ত মশাল কলড্রনে রাখেন টেনিস তারকা নাওমি ওসাকা।

ঢাকা/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়