ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অ্যাডভান্টেজ বাংলাদেশ, আজই হয়ে যাক ৩-০

সালেক সুফী, মেলবোর্ন থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৫, ৬ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১৩:১৬, ৬ আগস্ট ২০২১
অ্যাডভান্টেজ বাংলাদেশ, আজই হয়ে যাক ৩-০

বাংলাদেশ ২: অস্ট্রেলিয়া ০।

পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এখন এই অবস্থায়। আজ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ। জিতলেই ট্রফি বাংলাদেশের। আর ট্রফি জিততে হলে অস্ট্রেলিয়াকে জিততে হবে সিরিজের বাকি তিনটি ম্যাচই।

নিঃসন্দেহে এখন বড় অ্যাডভান্টেজে বাংলাদেশ। আমি পুরো ব্যাপারটাকে একটু ফুটবলের টাইব্রেকারের সঙ্গে তুলনায় নিয়ে গেলে বুঝতে আরেকটু সহজ হবে। ধরে নিন বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে এখন টাইব্রেকার চলছে।

তিনটি শট নিতে হবে। এই তিনটি শটের একটি গোল হলেই ট্রফি বাংলাদেশের। আর অস্ট্রেলিয়াকে তিনটি শটেই গোল করতে হবে। গোলের শুরুটা করছে বাংলাদেশ। ব্যাস এবার আপনি হিসেব মিলিয়ে নিন।

তাহলে কি বুঝলেন?

এই সিরিজের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত এখন বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আর সেই সম্ভাবনা শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ থেকেই। এতবেশি হিসেব নিকেষও কষতে হবে না, যদি আজ তৃতীয় ম্যাচটাই জিতে নেয় বাংলাদেশ।

তাতেই ট্রফি জয়ের উল্লাস। এবং এরপর পুরো সিরিজের টার্গেটই বদলে যাবে- যে মিশনের নাম হবে ‘ হোয়াইটওয়াশ অস্ট্রেলিয়া’! সেই সম্ভাবনা তৈরি হবে কিনা তা জানা যাবে আজ রাতের তৃতীয় ম্যাচের পর।

পাঁচ ম্যাচের সিরিজ যে শুরুতেই ০-২ হয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া কি এমন চিন্তা ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করেছিল? সম্ভবত না। আরে ভাই, অস্ট্রেলিয়া তো বাংলাদেশের সঙ্গে খেলার প্রসঙ্গ উঠলেই সেটা কিভাবে এড়ানো যায় বা পিছিয়ে দেওয়া যায়, সেই কৌশলই খুঁজে!

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়া কখনোই খুব একটি আগ্রহী থাকে না। শেষবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বাংলাদেশ খেলেছে ১৮ বছর আগে। ২০০৩ সালের পর আর কখনোই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার দাওয়াত পায়নি বাংলাদেশ। ২০০৩ সালের সেই সিরিজে দুটি টেস্ট ম্যাচও হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রায় অখ্যাত টেস্ট ভেন্যু; কেয়ার্নস ও ডারউইনে।

বাংলাদেশ সফর নিয়েও অস্ট্রেলিয়া নানা টাল-বাহানা করে। শুধু জাতীয় দল নয়, ওদের অনুর্ধ্ব-১৯ দলও বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে একটা নাকউঁচু ভাব দেখায়। অনুর্ধ্ব১৯ বিশ্বকাপে ক্রিকেট বিশ্বের সবাই এলো বাংলাদেশে খেলতে, এলো না শুধু অস্ট্রেলিয়ার অনুর্ধ্ব-১৯ দল।

এবার যেহেতু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারতে হবার কথা ছিল তাই অস্ট্রেলিয়া তাদের পরিকল্পনায় বাংলাদেশের মাটিতে ৫ ম্যাচের সিরিজ খেলাকে পরিকল্পনায় রেখেছিল। ভারত থেকে সরে গিয়ে সেই বিশ্বকাপ হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানকার উইকেটের সঙ্গে বাংলাদেশের উইকেটের কিছুটা সাযুজ্য রয়েছে। তাই বিশ্বকাপের আগেভাগে এমন উইকেটের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশ সফরে সম্মত হয় তারা।

সাইড বেঞ্চের শক্তির ধার পরীক্ষার জন্য সেরা খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিয়ে অপেক্ষাকৃত খর্ব শক্তির দল পাঠালো ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং বাংলাদেশ সফরে। ভাবনা হয়তো ছিল কী আর খেলবে বাংলাদেশ?

বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি ভালো না, অস্ট্রেলিয়াও যে খুব ভালো সামাল দিচ্ছে বলা যাবে না। তবুও অস্ট্রেলিযার যাচিত অযাচিত সব চাহিদা আবদার মেনে নিলো বাংলাদেশ। সিরিজ থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু অর্জনের আছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি মিশনে।

ইনজুরি এবং ব্যক্তিগত কারণে বাংলাদেশের কয়েকজন শীর্ষ ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এই সিরিজে নেই। তারপরও বাংলাদেশ সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ ক্রিকেট খেলে এখন ট্রফি জয় থেকে মাত্র এক ম্যাচ দুরে।

ধীরগতি এবং গ্রিপ করা বলের এই উইকেটে বাংলাদেশ বোলিং সামাল দিতে খাবি খাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের শুরুতে যে পরিকল্পনা এবং ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ, আর একটি ম্যাচে সেটা অনুদিত করতে পারলেই ট্রফি আমাদের। স্বস্তির বিষয় হলো জয়ী দুই ম্যাচে আমাদের ম্যাচ উইনার দুই তরুণ। টি- টোয়েন্টি ফরম্যাটে তরুণ খেলোয়াড়দের এই সাফল্য বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন সকালের সন্ধান দিচ্ছে।

 লেখক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ক্রিকেট বিশ্লেষক

রিয়াদ/ইয়াসিন

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়