ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অপেক্ষা এখন ৫-০`র

সালেক সুফী, মেলবোর্ন থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৭, ৭ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১৭:২৯, ৭ আগস্ট ২০২১
অপেক্ষা এখন ৫-০`র

অভিনন্দন বাংলাদেশ। অনেক নতুন মাইল ফলক স্থাপন করে সিরিজের দুটি ম্যাচ বাকি রেখেই প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জিতে নেয়ায়। ক্রিকেট ইতিহাসে লেখা থাকবে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ সফরে চার দিনে তিন ম্যাচ হেরে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ধবল ধোলাই সম্ভাবনায়।  দুটি দলেই নানা কারণে কিছু খেলোয়াড় অনুপস্থিত। যারা খেলেছে তারাও জাতীয় দলের টুপি মাথায় জাতীয় দলকেই প্রতিনিধিত্ব করেছে।

দুটি দলের মাঝে অনুষ্ঠিত প্রথম দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে ক্রিকেট অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জল করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে টুপি খোলা অভিনন্দন।

অগাস্ট মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে আয়োজিত বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজে ঐতিহাসিক জয়ের হ্যাটট্রিক করে প্রমাণিত হলো জয়ের স্বাদ পাওয়া বাংলাদেশকে সত্যিই কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। সব ফরম্যাটে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে সব বিভাগে কোনঠাসা করে ইতিমধ্যে সিরিজ জয় নিশ্চিত করা বাংলাদেশ এখন বাংলাওয়াশ অর্জনের অপেক্ষায়। ভেঙে পড়ছে রেকর্ড। তৈরি হচ্ছে নতুন মাইল ফলক। প্রথম ম্যাচটি সাফল্যের সঙ্গে ১৩১ রান প্রতিরক্ষা।

দ্বিতীয় ম্যাচে কোণঠাসা অবস্থান থেকে সোহান ও আফিফের সাহসিকতায় ১২১ রান তাড়া করে জয়। তৃতীয় ম্যাচে অবিশ্বাস্য দুর্দান্ত বোলিং ফিল্ডিং করে ১২৭ রানের মামুলি সংগ্রহ প্রতিরক্ষা করে সিরিজ জিতে নেয়া। স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে তরতরিয়ে উড়ছে বাংলাদেশ।

এ যেন সেই বহুশ্রুত বাণী "বিশ্ব অবাক তাকিয়ে রয় জলে পুড়ে ছারখার তাই মাথা নোয়াবার নয়।"

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অনুপ্রেরণাদায়ী নেতৃত্ব দলের রসায়ন পাল্টে দিয়েছে। হার না মানা দৃঢ় মনোভাব থেকে জয়ের মানসিকতা সবার মাঝে। সাকিব আছেন ছন্দে। মোস্তফিজের জাদুকর বোলিং রহস্য নিয়ে মতিভ্রমে অস্ট্রেলিয়া।  তরুণ আফিফ, শরিফুল, মেহেদী, নাসুম যেন ওই নতুনের কেতন ওড়ে ছন্দে।

কালকের ম্যাচটিতে কিছু পরিবর্তন করে নতুন পরিকল্পনায় নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। শরীরী ভাষায় , পরিকল্পনায় অনেক উপযোগী উপকরণ ছিল। বাংলাদেশ টস জয় করে ব্যাটিং সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বৃষ্টির হুমকিতে থাকা ম্যাচটিতে।  নড়বড়ে ওপেনিং জুটি সহসা ধসে পড়ার পর সাকিব মাহমুদুল্লাহ ঘুরে দাঁড়ালো। কিন্তু ধীর উইকেট এদিন অস্ট্রেলিয়ার বোলিং উপযোগী ছিল। ফিল্ডিং ছিল তুখোড়।  তবু একপ্রান্তে উইকেট আগলে রাখেন রিয়াদ।

তরুণ আফিফ, সোহানের ছোটোখাটো সহায়তায় বাংলাদেশ ১২৭/৯ সীমিত পুঁজি গড়ে তুলেছিল। উইকেটের যে অবস্থাই থাক এই ধরণের সঞ্চয় প্রতিরক্ষা করতে যে ধরণের মুষ্টিবদ্ধ প্রতিশ্রুতি দরকার সেটি পুরো মাত্রায় থাকাই  নতুন বাংলাদেশ দলের প্রধান অর্জন।

অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ওয়েড দ্রুত ফিরে যাবার পর চোখ রাঙ্গাচ্ছিলো ম্যাকডরমেট এবং মার্শ ( দুজনের বাবা অস্ট্রেলিয়া দলের প্রাক্তন খ্যাতনামা খেলোয়াড় ছিলেন) তবে এই উইকেটে রান তোলায় ধীরগতি থাকায় এবং সঠিক সময়ে সাকিব ,শরিফুল উইকেটে টিকে থাকা ব্যাটসম্যানদের ফিরিয়ে দেয়ায় রানের ফাঁস সৃষ্টি হয়েছিল।

১৭ এবং  ১৯ নম্বর ওভারে নিখুঁত লেংথ লাইনে মোস্তাফিজ  কৃপণ বোলিং করে ম্যাচ এবং সিরিজ জয় করে আনন্দে ভাসালেন বাংলাদেশকে। নিম্নতম স্কোর প্রতিরক্ষার নিজেদের গড়া রেকর্ড ভেঙে নতুন মাইলস্টোন সৃষ্টি হলো। ৩-০ এগিয়ে থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।  অপেক্ষা এখন বাংলাওয়াশ দেখার।

জানা কথা, জয় জয়ের জনক হয়। বাংলাদেশের এখন জয়ের মোমেন্টাম। ব্যাটিং আরো একটু পরিশীলিত হলে জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে ভরসা করতে পারি, সিরিজ ৫-০ হচ্ছে।

লেখক: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ক্রিকেট বিশ্লেষক

ঢাকা/রিয়াদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়