ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মাহমুদউল্লাহর টেস্ট অবসর ‘পেন্ডিং’!

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৭, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১  
মাহমুদউল্লাহর টেস্ট অবসর ‘পেন্ডিং’!

মাহমুদউল্লাহর পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালে সতীর্থদের কাছে টেস্ট অবসরের সিদ্ধান্ত জানানো এবং পরের আনুষ্ঠানিকতাগুলি যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।  

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে টেস্টের তৃতীয় দিন সকালে মাহমুদউল্লাহ ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের জানান, সাদা জার্সি তুলে রাখবেন। সেদিনের ম্যাচ শেষে তার অবসরের সিদ্ধান্তের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানাননি তিনি। বিসিবি থেকেও আসেনি কোনো ঘোষণা। ম্যাচের পঞ্চম দিন সকালে মাহমুদউল্লাহকে গার্ড অব অনার দেন সতীর্থরা। বিসিবি বলছে, এ আনুষ্ঠানিকতাও তাদেরকে না জানিয়ে হয়েছে।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) নাজমুল হাসান বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহর টেস্ট অবসর অপ্রত্যাশিত ছিল। এমন হওয়া উচিত না। একটা সিরিজ চলার মাঝখানে কারো সঙ্গে কোন আলোচনা না করে এমন ঘোষণা কোনো পেশাদার খেলোয়াড় দিতে পারে না।’

অবসরের সিদ্ধান্ত মাহমুদউল্লাহ টিম ম্যানেজমেন্ট ও সতীর্থদের জানান। এ নিয়ে বোর্ডের কারো সঙ্গে কথাও বলেননি। তাকে এজন্য লাল বলের চুক্তিতেও রাখেনি বোর্ড। নাজমুল হাসান আরো যোগ করেন, ‘একটার পর একটা সিরিজ চলছে। বায়ো-বাবল থেকে আলোচনায় বসা কঠিন। সবার সামনে বসা হয় না। তাই এটা (মাহমুদউল্লাহর অবসর) এখনো পেন্ডিং আছে। এরপর আর আমাদের সঙ্গে বসেনি, এজন্য ও টেস্টে (কেন্দ্রীয় চুক্তি) নেই এখন। এই চুক্তি ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর আবার পরিবর্তন হতে পারে।’

তবে টেস্ট খেলার ইচ্ছা মাহমুদউল্লাহর আছে বলে ধারণা বোর্ড প্রধানের, ‘মাহমুদউল্লাহ কিন্তু টেস্ট দলে ছিল না। ওকে আমার বাসায় নিয়ে বসেছিলাম। জিজ্ঞাসা করেছি বারবার, টেস্টে সে আগ্রহী কি না? জানা মতে, তিন সংস্করণের মধ্যে সে সবচেয়ে উপযুক্ত টেস্টে। সে আমাকে প্রতিবার বলেছে খুব আগ্রহী টেস্ট খেলতে। আমরা বলেছিলাম কে কোন সংস্করণ খেলবে লিখে দাও। সে লিখে দিয়েছে টেস্ট খেলবে যদি দলে নেওয়া হয়।’

ক্যারিয়ারের ‘শেষ ম্যাচ’ খেলতে মাহমুদউল্লাহ দলে ফেরেন ১৬ মাস পর। ফিরেই ১৫০ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেছেন। শেষটা রাঙালেও তার ক্যারিয়ার অনেকটাই বিবর্ণ। ৫০ ম্যাচে ৯৪ ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর রান ২৯১৪। ৩৩.৪৯ গড়ে ৫ সেঞ্চুরি ও ১৬ হাফসেঞ্চুরি আছে তার নামের পাশে। এছাড়া ৬৬ ইনিংসে বোলিং করে ৪৩ উইকেট নিয়েছেন।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে বলা হয়েছিল মাহমুদউল্লাহকে। বাদ দেওয়া হয়েছিল লাল বলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে। ১৬ মাস পরে টেস্ট দলে আকস্মিকভাবে সুযোগ পান তিনি। জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য টেস্ট দলে তিনি ছিলেন না। কিন্তু সফরে যাওয়ার আগে দলের শীর্ষ দুই ব্যাটসম্যান ইনজুরিতে থাকায় তাদের সম্ভাব্য ব্যাকআপ হিসেবে তাকে নেওয়া হয়। দলে ফিরে একাদশে সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করেন।

প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারানো দলকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করতে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন। এই সেঞ্চুরির পরই সতীর্থদের কাছে তিনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত জানান।

টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা এই ইনিংসে মিলেছে প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার। দলও জিতেছে। নিজের ব্যক্তিগত অর্জনও হয়েছে। এর চাইতে বেশি কিছু মাহমুদউল্লাহ আর কী প্রত্যাশা করতে পারেন? সব মিলিয়ে মাহমুদউল্লাহ বেশ তৃপ্ত। তবে দল জেতায় এবং সবার মুখে হাসি থাকায় তার আনন্দ বেশি। সেদিন পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তিনি বলেন, ‘সব সময় একজন টিমম্যান হয়ে দলে জন্য অবদান রাখতে পছন্দ করি। আমরা ম্যাচটা জিতেছি এবং দলের প্রত্যেকের মুখে হাসি দেখে ভালো লাগছে।’

সেদিন পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তাকে অবসর নিয়ে প্রশ্ন করা হয়নি। নিজ থেকেও কিছু বলেননি মাহমুদউল্লাহ। এমনকি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট দলের অধিনায়ক মমিনুল হকও একসময় মাহমুদউল্লাহর অবসর প্রসঙ্গে বলেন, ‘নো কমেন্টস’।

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়