ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

প্রস্তুতি ম্যাচে মিলল অশনি সংকেত!

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৩, ১৪ অক্টোবর ২০২১  
প্রস্তুতি ম্যাচে মিলল অশনি সংকেত!

সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রাতেই ওমানে ফিরছে বাংলাদেশ। মিশন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে খেলার জন্য আরেকবার কি আমিরাতে ফিরতে পারবে বাংলাদেশ? নাকি ওমানেই শেষ বিশ্বকাপ মিশন! প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্স বিবেচনায় আনলে এমন শঙ্কা স্বাভাবিক।

ওমানে ক্যাম্প শেষে আবু ধাবিতে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তবুও একটু আধটু লড়াই করেছিল। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের কাছে! স্রেফ উড়ে গেল বাংলাদেশ। না হয়েছে ব্যাটিং, না বোলিং। ছন্নছাড়া এক বাংলাদেশকে পাওয়া গেল বিশ্বকাপ শুরুর তিন দিন আগে। প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্স রীতিমতো অশনি সংকেত। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ চোটের কারণে সতর্কতা হিসেবে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের একটিও খেলেননি। দলের সবচেয়ে বড় ধ্রুবতারা সাকিব আল হাসান ব্যস্ত আইপিএলে। দলের নির্ভরযোগ্য দুই ক্রিকেটার মুশফিক ও মোস্তাফিজ নিজেদের ছায়া হয়ে রইলেন।

বাকিরা টুকটাক যা রান করেছেন, তারা প্রত্যেকেই বড় কিছু করার সুযোগ হারিয়েছেন। ফলে কারো প্রস্তুতি সন্তোষজনক নয়। জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বিশ্বমঞ্চে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডকে ডেকে এনে ১০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে ৭টিতেই জয় বাংলাদেশের। কিন্তু বাংলাদেশের বড় দুশ্চিন্তা ছিল ব্যাটিং। ধীর গতির, টার্নিং উইকেট বানিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি নিজেদের ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলে টিম ম্যানেজমেন্ট। রান করার যে অভ্যাস, তা ভুলেই গেছেন সৌম্য, লিটন, নাঈমরা। রান করার অভ্যাস না থাকার খেসারতই প্রস্তুতি ম্যাচে দিলেন ব্যাটসম্যানরা।

প্রথম আট ব্যাটসম্যানের সাত জনই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ২০ ছাড়াতে পারেন কেবল সৌম্য। তার সর্বোচ্চ ৩৪ রানে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৪৮। এবার ১৭৮ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম আট ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছান মাত্র তিনজন। কিন্তু ২০ ছাড়াতে পারেন কেবল সৌম্য (৩৭) ও সোহান (৩৮)। আফিফের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৪ রানে তাসকিন অপরাজিত ছিলেন। বাকিরা পুরোপুরি হতাশ করলেন।

ধারাবাহিকভাবে রান করা ও ইনিংস বড় করার অভ্যাস না থাকায় ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের এতটা হতশ্রী চিত্র। বোলিংয়ের চিত্রটা খুব ভয়ানক না হলেও বড় আশা করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে স্লগ ওভারে এলোমেলো বোলিং। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ৪ ওভারে মোস্তাফিজ ও শরিফুল মিলে রান দিয়েছেন ৫৩। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ৩ ওভারে বোলাররা দিয়েছিলেন ২৬ রান। দুই ম্যাচেই শেষ ওভারের বোলিং বিপর্যয় ভুগিয়েছে দলকে।

প্রস্তুতি ম্যাচের এমন পারফরম্যান্স কতটা ভাবাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। খুব বেশি চিন্তিত মনে হলো না জাতীয় দলের নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে, ‘প্রস্তুতি ম্যাচে উত্থান-পতন থাকবেই। কারণ এই ম্যাচগুলোতে অনেক কিছু পরখ করা দেখা হয়। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সবকিছু মিলে সবাইকে মূল্যায়ন করা হয় আর কী। সবাই এখানে প্রস্তুত হচ্ছে। সেই হিসেবে সবাই ভালো একটা সুযোগ পেয়েছে। ব্যাক টু ব্যাক অনেকগুলো ম্যাচ খেলছে। সহসা কিন্তু এতগুলো ম্যাচ পাওয়া যায় না। তো নিজেদেরকে প্রস্তুত করার মতো দারুণ একটা সুযোগ পাওয়া গেছে।’ 

দুই বিভাগের ব্যর্থতায় দুই ম্যাচেই একই ফল বাংলাদেশের। প্রস্তুতি ম্যাচে জয় পরাজয় মুখ্য বিষয় না হলেও ধারাবাহিক ব্যর্থতা আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরায়, বাড়ায় দুশ্চিন্তা। দিনশেষ জয় অভ্যাস বড় বিষয়। বিশ্বকাপের আগে সেই অভ্যাসে বড় ধাক্কা দিচ্ছে অশনি সংকেত!

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়