ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ: নতুন লড়াইয়ে কঠিনতম চ্যালেঞ্জ

ইয়াসিন হাসান, চট্টগ্রাম থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪১, ২৪ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ২১:৪১, ২৪ নভেম্বর ২০২১
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ: নতুন লড়াইয়ে কঠিনতম চ্যালেঞ্জ

টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ বা টেস্ট বিশ্বকাপ আইসিসির নতুন সংযোজন। টেস্ট ক্রিকেটের মাহাত্ম্য ও টেস্ট ক্রিকেটকে জাগিয়ে তুলতে এই ধরনের আয়োজন নিঃসন্দেহে আইসিসির সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। করোনার কারণে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসর খুব বেশি আলোচনা তৈরি করতে পারেনি। নিউ জিল্যান্ড ও ভারতের ফাইনাল নিয়েই ছিল যত উন্মাদনা। 

আর বাংলাদেশ এই প্রতিযোগিতায় রীতিমতো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলেছে। সাত ম্যাচে একটি ড্র। বাকি ছয়টিতেই হার। ২০ পয়েন্ট নিয়ে ছিল তালিকার তলানিতে। 

টেস্ট ক্রিকেটের এই বিশাল আসরে আবার মাঠে নামার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট দিয়ে আবার শুরু হচ্ছে নতুন লড়াই। যে লড়াই বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে পুরোনো চ্যালেঞ্জ। তবে এবারের লড়াইটা আরো কঠিন, আরো ঝাঁঝালো। সঙ্গে সাদা পোশাকে ভালো ও উন্নতি করার চ্যালেঞ্জ তো রয়েছেই। 

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরে বাংলাদেশের জন্য ম্যাচ বাড়েনি। প্রথম আসরের মতো এবারও বাংলাদেশের ভাগ্যে ১২ ম্যাচ। যা অন্য সব দলের চেয়ে কম। প্রথম আসরে ১২ ম্যাচ থাকলেও করোনার কারণে বাংলাদেশ মাত্র ৭ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিল। এবার হোম ও অ্যাওয়েতে মোট ৬টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। প্রতি সিরিজে রয়েছে ২টি করে ম্যাচ। কিন্তু ঘরের মাঠে এবার বাংলাদেশ ৬টি ম্যাচই খেলবে এশিয়ার তিন দল পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। 

চট্টগ্রামের পর ঢাকাতে পাকিস্তানকে আতিথেয়তা দেবে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা ও ভারত আগামী বছর বাংলাদেশ সফরে আসবে। শ্রীলঙ্কা আসবে মে মাসে। ভারত নভেম্বর-ডিসেম্বরে। আর অ্যাওয়ে সিরিজ নিউ জিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ফলে বিদেশের মাটিতে চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি এবার দেশের মাটিতেও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য।

দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অনেক সময় বিদেশি দলগুলো মূল খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিয়ে নতুন ও তরুণ খেলোয়াড়কে পাঠায়। কিন্তু এবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে কেউই ছাড় দেয় না। এখানে প্রতিটি পয়েন্ট মহামূল্যবান। পাকিস্তান যেমন নিজেদের সেরা দল নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। ভারত, শ্রীলঙ্কাও তাই করবে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের মূল অস্ত্র স্পিন আক্রমণ। বছরের পর বছর এমন রণকৌশলই অনুসরণ করছে। কিন্তু এশিয়ার তিন দলের বিরুদ্ধে চাইলেই মন্থর ও স্পিনস্বর্গ বানিয়ে ম্যাচ জয় সম্ভব নয়। কারণ এশিয়ার অন্য তিন দলেও সামর্থ্যবান স্পিনার রয়েছে। রয়েছে বিশ্বমানের লেগ স্পিনার। ফলে দেশের মাটিতেই বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বাংলাদেশ। 

আর দেশের বাইরে বাংলাদেশের টেস্ট মানে বিভীষিকাময় অধ্যায়। বিরুদ্ধ কন্ডিশন, বিশ্বমানের বোলার ও নিজেদের নড়বড়ে আত্মবিশ্বাস; তিনে মিলে সাদা পোশাকে দেশের বাইরে বাংলাদেশকে দুরূহ সময় কাটাতে হবে। নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশ তিন ফরম্যাট মিলে ৩২ ম্যাচ খেলেছে। জিতেনি কোনো ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও একই ফল। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স আশা দেখালেও মনে রাখতে হবে দেশের মাটিতেই তারা বাংলাদেশকে এই বছর ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে। ফলে দেশের বাইরেও এ ফরম্যাটে বাংলাদেশকে পুরোনো চ্যালেঞ্জেরই মুখোমুখি হতে হবে।    

এবারের পয়েন্ট বন্টনে এসেছে নতুনত্ব। এবার সিরিজ ভিত্তিতে নয়, ম্যাচ প্রতি পয়েন্ট পদ্ধতি করা হচ্ছে। প্রতি ম্যাচে জয়ী দল পাবে ১২ পয়েন্ট, ড্রর জন্য ৪ পয়েন্ট আর টাই হলে দুই দল পাবে ছয়টি করে পয়েন্ট। স্লো ওভার রেটে অভিযুক্ত হলে প্রত্যেক ওভারের জন্য একটি করে পয়েন্ট কাটা যাবে।

সাদা পোশাকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ভঙ্গুর। তবুও নতুন দিনে নতুন লড়াইয়ে নতুন করে স্বপ্ন বোনা। নতুন প্রত্যাশা, উদ্দীপনা, চ্যালেঞ্জ, আত্মবিশ্বাস, ভয় না পাওয়ার মন্ত্রে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া। একটা আগের থেকেও কঠিন। তবে নতুন দিনের স্লোগান তো হতেই পারে,‘চলো বাংলাদেশ।’

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়