ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মেঘলা দিনে তাইজুল ঝলক

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০০, ৪ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৯:৪৩, ৪ ডিসেম্বর ২০২১
মেঘলা দিনে তাইজুল ঝলক

তাইজুল ইসলামকে চাইলে বোলিং মেশিন বলা যেতে পারে। চট্টগ্রামে এক স্পেলে ১৬ ওভার হাত ঘুরিয়ে চমকে দিয়েছিলেন। ঢাকায় ছাড়িয়ে গেলেন নিজের কীর্তিও। ১৭ ওভার টানা বোলিং করে মিরপুরে নিষ্প্রাণ দিন রাঙিয়ে তুলেছেন। পেয়েছেন ২ উইকেট। যা মেঘলা আবহাওয়ায় আলোর স্বল্পতায় পণ্ড হওয়া দিনের একমাত্র প্রাপ্তিই বলা চলে।

বাবর আজমের তুলির আঁচড় ছড়ানো ইনিংসও প্রশংসার দাবিদার। তাইজুলের পাশাপাশি সাকিবকে সামলে যেভাবে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তা নিশ্চয়ই মিরপুরে ক্যানভাসে রংধনুর সাত রং ছড়িয়েছে। সাদা পোশাকে লড়াইয়ের এমনদিনে গুমোট আবহাওয়া কেড়ে নিয়েছে ৩৩ ওভারের খেলা।

৫৭ ওভারের খেলার দিনে পাকিস্তান ২ উইকেটে হারিয়ে তুলেছে ১৬১ রান। আজহার আলী ৩৬ ও বাবর আজম ৬০ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। তাদের প্রতিরোধ গড়া জুটিতে এসেছে ৯১ রান।

দিনের শেষ সেশন পুরোটাই ভেস্তে গেছে। চা-বিরতির পর খেলা শুরু করতে পারেননি আম্পায়াররা। বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে মাঠ পরিদর্শনের জন্য বের হন দুই আম্পায়ার সৈকত ও গফ। কিন্তু তাদের মাঠে প্রবেশের আগেই ঢুকে যায় কভার। ঢেকে দেওয়া হয় মিরপুরের ২২ গজ। আনুষ্ঠানিকভাবে ৪টা ১০ মিনিটে দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের জন্য মাঠ চক্কর কাটেন। বাংলাদেশের একাদশের বাইরের খেলোয়াড়রাও রানিং করেছে। অলস বসে না থেকে মুশফিকুর রহিম ব্যাট-প্যাড পড়ে চলে যান ইনডোরে। সঙ্গে ছিলেন স্পিনার নাঈম হাসান।

বাংলাদেশের দুই পেসার ইবাদত ও খালেদের শুরুর আক্রমণে বেশ ধার ছিল। কিন্তু উইকেট নেওয়ার মতো ডেলিভারী ছিল কমই। ফলে থিতু হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ পান আবীদ আলী ও আব্দুল্লাহ শফিক। দুই বছরেরও বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে খালেদ শুরুটা ভালো করেছিলেন। প্রথম দুই ওভারে সুইং আদায় করে রান দিয়েছেন মাত্র ৪। কিন্তু তৃতীয় ওভারে অফস্টাম্পের বাইরের আলগা বলে আবীদ আলী তাকে শাসন করেন।

পাকিস্তানের খেলার চিত্র পাল্টে যায় স্পিন আক্রমণ আসতেই। দশম ওভারে মুমিনুল বল তুলে দেন সাকিবের হাতে। আরেকপ্রান্তে বোলিংয়ে আসেন তাইজুল। দুজন মিলিয়ে ২২ ওভার হাত ঘুরান ২২ গজে। ওই সময়েই বাংলাদেশ পেয়ে যায় জোড়া সাফল্য। দুটি উইকেটই পেয়েছেন তাইজুল। 

দারুণ এক ঘূর্ণিতে ওপেনার আব্দুল্লাহর অফস্টাম্প উপচে ফেলেন তাইজুল। এরপর আবীদ আলীকেও ভেতরে ঢোকানো বলে ইনসাইড এজে বোল্ড করেন বাঁহাতি স্পিনার। সাকিব ও তাইজুলের জমাট জুটিতেই এসেছে সাফল্য। ২৩ থেকে ২৮ পর্যন্ত সবকটি ওভারই ছিল মেডেন। আবার ২৯ থেকে ৩১ পর্যন্ত এসেছে মাত্র ৬ রান। দুই বাঁহাতির ধারাবাহিক এ আক্রমণে বেশ কয়েকটি সুযোগও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু উইকেট ভাগ্য ছিল না বাংলাদেশের।

প্রথম সেশনে সাকিব টানা ১১ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৬ মেডেনে দিয়েছেন ১৬ রান। তাইজুল বিরতির পরও এসে হাত ঘোরান। টানা ১৭ ওভারে তার মেডেন ছিল ৫টি। রান দিয়েছেন ৪৯। তবে এদিন ছন্দ পাননি মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রায় প্রতি ওভারেই বাজে বল করেছে। তাতে সহজেই রান তুলেছেন বাবর আজম। অনেকটা ওয়ানডে স্ট্যাইলে খেলে রান তুলেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। ৯৯ বলে ৬০ রান তুলেছেন ৭ চার ও ১ ছক্কায়। আজহার আলী ছিলেন পুরো রক্ষণাত্মক। ১১২ বলে করেছেন ৩৬ রান। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার।

ঘুমোট আবহাওয়ায় স্পিনাররা সাহায্য পেয়েছিল। তাইজুল ও সাকিব তা কাজে লাগিয়েছেন ভালোভাবে। ঘূর্ণিঝড় জওয়াদ চোখ রাঙানি দিচ্ছে। টেস্টের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বেরসিক বৃষ্টি ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয় কিনা সেটাই দেখার।

ঢাকা/ইয়াসিন

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়