ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মুমিনুলকেই বাদ পড়তে হলো

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ২৪ জুন ২০২২   আপডেট: ২২:৫৬, ২৪ জুন ২০২২
মুমিনুলকেই বাদ পড়তে হলো

অধিনায়কত্ব ছাড়ার এক ম্যাচ পরই দল থেকে বাদ পড়তে হলো মুমিনুল হককে। রান খরায় থাকা এ ব্যাটসম্যানকে ছাড়া সেন্ট লুসিয়া টেস্ট খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। তার পরিবর্তে সুযোগ পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়। টানা ৩২ ম‌্যাচ খেলার পর অবশেষে দল থেকে বাদ পড়লেন মুমিনুল।

মুমিনুলের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার দল থেকে বাদ পড়লেন। ২০১৩ সালে গলে মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি করা ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল মুমিনুলের। ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে মুমিনুল তার আগমণী বার্তা দিয়েছিলেন। পরের ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তৃতীয় টেস্ট খেলার আগে তাকে দর্শক হয়ে থাকতে হয়।

মিডল অর্ডারে মাহমুদউল্লাহকে জায়গা করে দিতে ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল হারারেতে মাঠে নামতে পারেননি মুমিনুল। অবশ্য দ্বিতীয় টেস্টে সেই মাহমুদউল্লাহর পরিবর্তে মুমিনুল আবার দলে ফেরেন। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

মুমিনুল হয়ে উঠেন বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ভরসার আরেক নাম। ব্যাট হাতে নিয়মিত রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে মুমিনুল নিজের অবস্থান শুধু শক্তিশালীই করেননি, বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের নাম ফুটিয়ে তোলেন। এক সময় ম্যাচে টানা ১২ ফিফটির বিশ্ব রেকর্ডেরও সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এ ব্যাটসম্যান।

কিন্তু মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখে এখন মুমিনুল বাদ পড়ার তালিকায়। মাঝে দুই ম্যাচ বাদ পড়েছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কারণে। শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের শততম টেস্টে মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, লিটন, তাসকিন কেউ খেলেননি। মুমিনুলের শর্ট বলে দুর্বলতা আছে বলে শ্রীলঙ্কায় ও ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঢাকায় খেলাননি হাথুরুসিংহে। চট্টগ্রামে আবার তাকে ফেরানো হয়।

এরপর সবগুলো টেস্টেই ছিল তার উপস্থিতি। ইনজুরির কারণে কেবল নিউ জিল্যান্ডে ২০১৭ সালে তাকে একাদশের বাইরে থাকতে হয়েছিল। মুমিনুলের অভিষেকের পর বাংলাদেশ ৫৯ টেস্ট খেলেছে। মুমিনুল যেখানে খেলেছেন ৫৪ টেস্ট। পরিসংখ্যান স্পষ্ট বলে দেয়, বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান দলের জন্য কতটা বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। ৫৪ টেস্টে মুমিনুলের রান ৩৫২৯। ব্যাটিং গড় ৩৭.৫৪। সেঞ্চুরি সবচেয়ে বেশি ১১টি।

তবে সুন্দরতম ক্যারিয়ারে মুমিনুলকে এবার কঠিনতম পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর তাকে বাদ পড়তে হয়েছে বাজে ফর্মের কারণে। শেষ ১০ ইনিংসের নয়টিতেই মুমিনুল দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি।  মাউন্ট মঙ্গানুইতে ৮৮ রানের ইনিংসের পর ১২ ইনিংসে তার মোট রান ৭৮! এ সময়ে চার ইনিংসেই রানের খাতা খুলতে পারেননি। দশ ইনিংসে যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। সবশেষ টানা নয় ইনিংসে একই দুর্দাশা। সর্বোচ্চ রান ৩৭, যেখানে ইনিংসের শুরুতেই পেয়েছিলেন জীবন।

বলা হচ্ছে, অধিনায়কত্ব মুমিনুলের ক্যারিয়ারের কাল হয়েছে। সাকিবের পরিবর্তে তাকে অধিনায়ক করা হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই থেকে মুমিনুল যাচ্ছিলেন ব্যাকগিয়ারে। এবার দল থেকে ছিটকে গেলেন।

টেস্ট স্পেশালিস্ট খেতাব পাওয়া এ ব্যাটসম্যানের জন্য দল থেকে বাদ পড়া ভালো লক্ষণ নয় অবশ্যই। খারাপ সময় কাটিয়ে মুমিনুল ফিরে আসুক স্বরূপে, চেনা ছন্দে, আপন মহিমায় এমনটাই তো চাওয়া কোটি ক্রিকেটপ্রেমির।

ইয়াসিন/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়