ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

আগে দেশে জেতো, পরে বাইরে: টেস্ট নিয়ে মাশরাফি

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ২৮ জুন ২০২২   আপডেট: ১৯:১৯, ২৮ জুন ২০২২
আগে দেশে জেতো, পরে বাইরে: টেস্ট নিয়ে মাশরাফি

ওয়ানডেতে বাঁক বদলের নায়ক হিসেবে খ্যাত মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্ব দরবারে নিজেদের জায়গা শক্ত করেছিল। সেই তুলনায় টেস্টে সাফল্য বলতে গেলে আসেই না। সেন্ট লুসিয়ায় ১৩৪তম টেস্ট খেলে পূর্ণ করেছে হারের সেঞ্চুরি। এই ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে পরামর্শ দিলেন মাশরাফি- আগে দেশের মাটিতে জেতার অভ্যাস গড়তে হবে, তারপর বিদেশে। 

‘আমাদের প্রথম পরিকল্পনা ছিল আমরা ঘরের মাঠে যতটা সম্ভব ম্যাচ জিতবো, ৮০ শতাংশ ম্যাচ আমরা কীভাবে জিততে পারি। তো ওই যে বললাম টেস্ট ক্রিকেটেও আমাদের শুরু হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিলাম। ওই জায়গা থেকে একটু পিছিয়ে সমস্যা হয়ে গেছে। তবে হোমে সর্বাধিক ম্যাচ এখন আমাদের জিততে হবে।’- মঙ্গলবার (২৮ জুন) এভাবেই কথাগুলো বলেছেন মাশরাফি। 

ওয়ানডেতে টানা ৪৫ ম্যাচে হারের রেকর্ড বাংলাদেশের। এ ছাড়া বিশ্বের কোনো দলই টানা ২০টি ম্যাচে হারেনি। এরপর ধীরে ধীরে আসতে শুরু করে জয়। বিদেশের চেয়ে ঘরের মাঠেই সাফল্যের হার ছিল বেশি। এরপর মাশরাফির নেতৃত্বে ঘটে বিবর্তন। বাংলাদেশ হয়ে ওঠে অন্যতম শক্তিশালী দল। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল অন্যতম সাফল্য। 

যার নেতৃত্বে এমন বদল সেই মাশরাফি বলছেন ঘরের মাঠে টেস্ট জয়ের অভ্যাস গড়তে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ খেলে ৬৯টি ম্যাচ। তাতে হার ৪৫টি ম্যাচে। ১০টি জয় ও ১৪টি ড্র। আর বিদেশের মাটিতে ৫৫টি হারের বিপরীতে জয় মাত্র ৬টিতে। ড্র ৪টিতে।

মাশরাফি বলেন, ‘প্রথমত টেস্ট ক্রিকেটে (বাংলাদেশ) কখনোই ভালো ছিল না। আমরা মাঝে হোমে কিছু ম্যাচ জিতেছিলাম, একটা উন্নতির দিকে যাচ্ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে আবার নিচের দিকে। টেস্টে আমরা কখনোই ধারাবাহিক ছিলাম না। যে ফরম্যাটে ধারাবাহিক সেটা হলো ওয়ানডে।’ 

ওয়েস্ট সিরিজ থেকে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটের নেতৃত্বে সাকিব আল হাসান। তাতে ইতিবাচক বিষয় দেখছেন মাশরাফি। তার মতে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের হাতেই থাকা উচিত টেস্টের নেতৃত্ব। সাকিবের নেতৃত্বে টেস্টে উন্নতি করবে বাংলাদেশ এই বিশ্বাস মাশরাফির, ‘টেস্ট ক্রিকেটে ইতিবাচক ব্যাপার হলো সাকিব বেশ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। সাকিব এখন অধিনায়ক, কিন্তু রাতারাতি কিছু হওয়া সম্ভব না। সাকিব কিছু কথা বলেছে যেগুলোর গভীরতা আছে।’

‘সাকিব যে অধিনায়ক হয়েছে এটা আমি মনে করি আমাদের জন্য আশীর্বাদ। এ কারণে মনে করি টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ও পারফর্মারের হাতে অধিনায়কত্ব থাকা উচিত এবং সেটা আছে। আমি যেটা বললাম রাতারাতি কোনো কিছু চিন্তা করলে হবে না। সাকিবের হাতে গিয়েছে মানে জিতে যাবো, এটা কোনো আকস্মিক সাফল্য না। বাকি ১০ জনকেও পারফর্ম করতে হবে।’- আরও যোগ করেন মাশরাফি। 

২০০৯ সালে মাশরাফি উইন্ডিজ সিরিজের মাঝে  ইনজুরিতে পড়লে  নেতৃত্ব পান সাকিব। আর এবার তৃতীয় দফায় অধিনায়কত্ব পেয়ে সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজেই গেলেন তিনি। মাশরাফি চান, এই অধিনায়ককে আরও সময় দেওয়া হোক। 
 
‘ওকে (সাকিব) সময় দিতে হবে। আমার বিশ্বাস সময় দিলে এটা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো আবার। কিছুটা সময় লাগবে। কারণ আপনি অনেক বেশি পিছিয়ে গেছেন, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। আপনি হুট করে দলকে চাপ দিলেও তো হবে না।’- বললেন মাশরাফি।
 
দীর্ঘদিন ২২ গজে খেলা সাকিবের সঙ্গে খেলেছেন, তাকে কোনো বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মাশরাফি মনে করেন, ‘আমি আগেও বললাম সবচেয়ে অভিজ্ঞ মস্তিষ্ক যার, তাকে আমরা পেয়েছি। সুতরাং সাকিবকে বার্তা দেওয়ার কিছু নেই। সাকিব জানে কীভাবে দল পরিবর্তন করতে হবে। এর আগেও দুইবার সে অধিনায়কত্ব করেছে। আমি মনে করি সাকিব সব জানে কীভাবে সামলাতে হয়।’

বাকিরা পারফরম্যান্স না করলে সাকিব একা কিছু করতে পারবেন না। এটা স্পষ্ট উইন্ডিজ সিরিজেই। ১৩৮ রান করে এই সিরিজে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান তিনি। তাতে কী? অ্যান্টিগা টেস্টে ৭ উইকেটে হারের পর সেন্ট লুসিয়ায় হার ১০ উইকেটে। সাকিবের সঙ্গে বাকিরা জ্বলে উঠবেন কবে? 

ঢাকা/রিয়াদ/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ