ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

উইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে বন্ধুত্বে ফাটল চায় না বিসিবি

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪৫, ৫ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১৯:৫২, ৫ জুলাই ২০২২
উইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে বন্ধুত্বে ফাটল চায় না বিসিবি

সুসময় কিংবা দুঃসময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডকে (ডব্লিউআইসিবি) পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কোভিড পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জৈব সুরক্ষা বলয় নিয়ে কোনো প্রশ্ন না তুলেই প্রথম দল হিসেবে এক মাস সফর করে গিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটাররা। 

এছাড়া নানা সময়ে দুই বোর্ড একে অপরকে পাশে পেয়েছে। ২০১৪ সালে আইসিসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আ হ মুস্তফা কামালকে মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে সহায়তা করেছিল ডব্লিউআইসিবি। পরবর্তীতে আইসিসির তিন মোড়ল তত্ত্বের বিরোধিতা করতেও পাশাপাশি অবস্থান করেছে বিসিবি ও ডব্লিউআইসিবি। দুই বোর্ডের এই বন্ধুত্বে ফাটল চায় না বিসিবি। 

সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উত্তাল আন্টলান্টিক ফেরিতে পাড়ি দিয়ে সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকায় নিয়ে আসায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের আয়োজন ও সুযোগ সুবিধা প্রদান নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে প্রবল। ফেরি ভ্রমণে বাংলাদেশের একাধিক ক্রিকেটার অসুস্থ হয়ে পড়েন। মোশন সিকনেসে আক্রান্ত হয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারান তারা। তবে ওই ফেরিতে যাত্রা করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সীমিত পরিসরের ক্রিকেটার, ব্রডকাস্ট ও ধারাভাষ্যকাররাও। 

সিরিজ শুরুর আগে দুই বোর্ডের মধ্যে এমওইউ বা মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্টাডিং সাইন হয়। বিসিবি কীভাবে এমন আয়োজনে রাজি হলো তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী মিরপুরে সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিষয়টা যেভাবে এসেছে আসলে ওরকম ছিল না। আমাদের সাথে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড যোগাযোগ করে আমরা কিন্তু সাথে সাথেই আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছিলাম। আমাদের দলের এই ধরনের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেই। এটা আমরা জানিয়েছিলাম। পরবর্তীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড জানায়- বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে, বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিমান চলাচল সীমিত হয়ে গেছে, খুব ছোট ছোট বিমান এখানে যাতায়াত করে।’ 

‘একইসাথে আমাদের জানালো তারা ফেরি সার্ভিসে ব্যবস্থা করছে যা ছোট ক্রুজ শিপের মতো। এটা নিয়মিত চলাচল করে এবং বাংলাদেশ দল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল, আইসিসির অফিসিয়াল, টিভি ক্রু ও ধারাভাষ্যকাররা একইসাথে যাবেন। এই বিষয় নিশ্চিত করার পর আমাদেরও আলোচনা থামিয়ে দিতে হয়। কারণ দুই দল একইসঙ্গে ট্রাভেল করছে। তখন বিষয়টা মেনে নিতে হয়। যখন আমাদের দল কোনো দেশে যাবে, যাবতীয় সব দায়িত্ব ওই বোর্ডেরই। যেমন কোনো বিদেশি দল আসলে আমাদের ওপর নির্ভর করতে হয়।’- বললেন এই কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেছেন, ‘এ ধরনের ভ্রমণে কিছু মোশন সিকনেস হয়। এটার ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে, কী কী গাইডলাইন মানতে হবে আগে বলা হয়েছে। এটা যে একদম অস্বাভাবিক কিছু তা কিন্তু না। সমুদ্রে নড়াচড়ার সময় এসব সমস্যা হয়। শুধু বাংলাদেশের দলের খেলোয়াড়রাই অসুস্থ হয়েছেন তা না। বাজে আবহাওয়ার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দেরও একইরকম অবস্থা হয়েছে। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের এই অভিজ্ঞতা নেই তাই তাদের প্রতিক্রিয়া বেশি ছিল, এটাই স্বাভাবিক।’

ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকার কথা জানিয়ে দুই বোর্ডের সম্পর্কে কোনো ফাটল সৃষ্টি যেন না হয়, সেই কথা বলেছেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী, ‘বোর্ডের সাথে বোর্ডের একটা যোগাযোগ থাকে। এটাকেই গুরুত্ব দেই। আমরা অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলবো এবং আমাদের উদ্বেগ জানাবো, যেন ভবিষ্যতে এমন না হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে- ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সাথে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বজায় রেখেই আমাদের ফিউচার ট্যুর প্ল্যান বা এ দলের প্ল্যান করে থাকি। এক্ষেত্রে বোর্ড টু বোর্ড সুসম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটা বিষয় হলো, আর সাথে সাথে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম, এ বিষয়টা ঠিক হবে না বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়