রোনালদো যেভাবে পেনাল্টি আদায় করে চতুরতা দেখিয়েছেন
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে নিয়ে কম ট্রল করা হয় না। পেনাল্টি থেকে নিয়মিত গোল করেন বলে তাকে ‘পেনালদো’ নামেও ডাকা হয়। কিন্তু ফুটবল মাঠের রাজার তাতে কি কিছু আসে যায়? গোল করাই তার কাজ। প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে সর্বোচ্চ ৮১৯ গোল বলেই দিচ্ছে রোনালদোর অর্জন।
কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও পর্তুগালের অধিনায়ক রোনালদো গোল পেয়েছেন। দ্বিতীয়ার্ধে তার স্পটকিক থেকে দেওয়া গোলেই পর্তুগাল লিড নেয়। পরবর্তীতে ঘানা ফিরে এলেও পর্তুগাল বিজয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
তবে রোনালদোর পাওয়া পেনাল্টি নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক ছড়াচ্ছে। ডি বক্সের ভেতরে তাকে ফেলে দেওয়ায় রেফারি সরাসরি পেনাল্টি দেয়। ঘানার ফুটবলাররা ভিএআর (ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারি) সাহায্য চাইলেও তাতে কর্ণপাত করেননি রেফারি।
রোনালদো নিজেকে শান্ত রেখে সফল স্পটকিকে গোল করে ইতিহাসও গড়েন। টানা পাঁচ বিশ্বকাপের প্রতিটিতে গোল করা একমাত্র ফুটবলার এখন সিআরসেভেনই। তবে ঘুরে ফিরে আলোচনায় সেই পেনাল্টি-ই। তবে প্রশ্ন উঠেছে, রোনালদোর ওই পেনাল্টিটা সঠিক সিদ্ধান্ত কি ছিল?
ঘানার ম্যানেজার ওট্টো অডো ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রেফারির বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক রেফারিংয়ের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রেফারি পেনাল্টি দিয়েছিল, যদিও সেটা পেনাল্টি ছিল না। প্রত্যেকেই সেটা দেখেছে। কেন দিয়েছে? কারণ সেটা রোনালদো ছিল, নয় অন্যকিছু। রেফারি আমাদের পক্ষে ছিলেন না।’
কিন্তু সত্যিই কি কিছু হয়েছিল নাকি চোখের সামনে কিছু মিস হয়ে গেছে? আবার পেনাল্টি পাওয়ার আইন কি বলে? ম্যাচের ৬২ মিনিটে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন রোনালদো। বল ছিল রোনালদোর পায়ের কাছে। কিন্তু তিনি বল স্পর্শ করেননি। ঘানার সালিসু ছিনিয়ে নিতে বল স্পর্শ করেন এবং এরপরই রোনালদো বলে টোকা দেন। সালিসু সেখানে ভুল করে বসেন। দ্বিতীয়বার বল নিতে গিয়ে রোনালদোকে ফেলে দেন মাটিতে।
রেফারি কাছে থেকেই পুরো ঘটনা দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। রেফারির চোখে দৃশ্যমান কোনো ভুল না হওয়ায় সিদ্ধান্ত ভিএআরে যায়নি। যদি রোনালদো আগে বল স্পর্শ করতেন তাহলে সেটা ভিএআরে যেত এবং সেখানে রেফারি টিভি রিপ্লে দেখার কথা জানাতেন। কিন্তু রোনালদোর চতুরতায় তেমন কিছু হয়নি।
পেনাল্টি আদায়ের পুরো ঘটনাকে রোনালদোর চতুরতা হিসেবে দেখছেন নাইজেরিয়ার সাবেক অধিনায়ক, কোচ এবং ফিফার টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপের সদস্য অলিশেহ। পর্তুগাল সুপারস্টারের পেনাল্টি পাওয়ার পুরো ঘটনাকে রোনালদোর কৃতিত্ব বলে মনে করছেন অলিশেহ।
দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘হয়তো স্ট্রাইকাররা আরও স্মার্ট হচ্ছে। রোনালদোর পেনাল্টি…আসলে লোকেরা তার সম্পর্কে যা চায় তা বলতে পারে। কিন্তু স্মার্টনেস বিষয়টি হলো, ওখানে এক সেকেন্ড অপেক্ষা করে বলটাকে টাচ করা। এরপর বল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে প্রতিপক্ষের কাছাকাছি যাওয়া। এটা বিশেষ এক দক্ষতা। এজন্য স্ট্রাইকারকে স্মার্ট হওয়ার কৃতিত্ব দিতে হবে। ভিএআর অন্যতম কারণ এসব মূল বিষয় নজরে আসার। রেফারি চাইলেই তিন থেকে চারবার সব ঘটনা দেখতে পারে।’
ইয়াসিন/আমিনুল
আরো পড়ুন