৮৩ ইনিংস পর বাবরের সেঞ্চুরি, জয়ে সিরিজ নিশ্চিত পাকিস্তানের
‘‘হেয়ার উই গো। বিগ মোমেন্ট। লং ওয়ে…দেয়ার উই গো…দ্যাট ইজ ম্যাজিক। পিউরলি ম্যাগনিফিসেন্ট। বিগ স্মাইল অন হিস ফেইস। ক্রাউড এনজয়ের ইট। থ্যাংকস টু হেভেন। ডাউন হি গোউস। টু অ্যান্ড হাফ ইয়ার্স হি ওয়েটেড ফর দিস ওকেসন। এইটি থ্রি ইনিংস হি প্লেইড। ডিডেন্ট গেট আ হানড্রেড। অ্যাট লাস্ট হি গেট দ্য ওকেশন।’’
ধারাভাষ্যকারের কণ্ঠ ধরে আসে। কিন্তু থামেন না। এই উপলক্ষ্যটা বেশ বড়। বেশ আকর্ষণীয়। রাওয়ালপিন্ডি উন্মাতাল। ৮৩ ইনিংস, ৮০৭ দিনের অপেক্ষা যে ফুরাল এই মাহেন্দ্রক্ষণে। অবশেষে বাবর আজম করলেন সেঞ্চুরি।
৯৯ রান থেকে প্রামো মাদুশানের বল স্কয়ার লেগে পাঠিয়ে প্রান্ত বদল করলেন বাবর। পুরো গ্যালারি, ধারাভাষ্যকক্ষ, ড্রেসিংরুম করতালিতে মাতোয়ারা। এই উপলক্ষ্যের জন্য তাদের কতদিনের অপেক্ষা। দলের সেরা তারকার রানে ফেরা, সেঞ্চুরি পাওয়া বলে কথা।
বাবর পূর্ণ করলেন সবার চাওয়া। নিজের ছায়া থেকে বের হয়ে পেলেন ওয়ানডে ক্রিকেটের ২০তম সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের হয়ে এতোদিন এই রেকর্ডটি ছিল কেবল সাঈদ আনোয়ারের। বাবর সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন। সামনেই হয়তো ছাড়িয়ে যাবেন।
সেঞ্চুরি তার কাছে কতটা আরাধ্য ছিল বোঝা গেল উদযাপনে। রান পূর্ণ করার আগেই হেলমেটের ফাঁক দিয়ে হাসি ভরা মুখটা দেখা গেল। হেলমেট খুললেন। ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন। ওপরে তাকিয়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের পর হাঁটু গেঁড়ে বসে রইলেন কিছুক্ষণ, আবার ব্যাট উঁচিয়ে ধরার পর দিলেন সিজদাহ। এরপর উঠে দাঁড়িয়ে সতীর্থ মোহাম্মদ রিজওয়ানকে জড়িয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করলেন।
তার সেঞ্চুরি খরা কাটানোর দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কা ৮ উইকেটে ২৮৮ রান করে। জবাবে পাকিস্তান ১০ বল আগে ৮ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে। এক ম্যাচ হাতে রেখেই পাকিস্তান জিতেছে ওয়ানডে সিরিজ।
সাঈদ আনোয়ার ২০ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ২৪৪ ইনিংসে। বাবরের লাগল ১৩৬ ইনিংস, ১০৮ ইনিংস কম। বাবরের চেয়ে কম ইনিংসে ২০ সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন কেবল বিরাট কোহলি (১৩৩) ও হাশিম আমলা (১০৮)। ছন্দ হারিয়ে পথ না ভুললে হয়তো তাদেরকেও ছাড়িয়ে যেতে পারতেন কিং বাবর।
শ্রীলঙ্কার হয়ে এদিন ব্যাটিংয়ে আলো ছড়ান জানিথ লিয়ানাগে। ছয় নম্বরে নেমে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৬৩ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। প্রথম ওয়ানডের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে রান পেয়েছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ২৬ বলে ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। শুরুর চার ব্যাটসম্যানই উইকেটে থিতু হয়েছিলেন। কিন্তু কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৪২ রান করেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। পাকিস্তানের সেরা বোলার ছিলেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ। দুজন ৩টি করে উইকেট নেন।
লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানের হয়ে বাবরের সেঞ্চুরি ছাড়া ফিফটি করেন ফাখার জামান (৯৩ বলে ৭৮) ও মোহাম্মদ রিজওয়ান (৫৪ বলে ৫১*)। তাতে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় অতি সহজে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান সেঞ্চুরি করা বাবর। ২০২৩ সালের ৩১ আগস্টের পর প্রথম সেঞ্চুরি পেলেন বাবর। ৮০৭ দিনের অপেক্ষা ফুরাল তার। সামনের সেঞ্চুরি পেতে কতদিনের অপেক্ষা করতে হয় সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন