ঢাকা     বুধবার   ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৭ ১৪৩১

মাচায় ঝুলছে নজরকাড়া হলুদ রঙের তরমুজ

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ২ আগস্ট ২০২৪  
মাচায় ঝুলছে নজরকাড়া হলুদ রঙের তরমুজ

হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলের হাফিজপুর গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে প্রায় ২৫ শতক জমিতে মালচিং পেপার পদ্ধতিতে মাচায় তরমুজ চাষ করে চমক দেখিয়েছেন কৃষক আব্দুস ছালাম।

হাফিজপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ কচি লতাপাতার মাঝে মাচায় ঝুলছে হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ। ছোট-বড় তরমুজে নুয়ে পড়েছে মাচা। এখানে কালোর চেয়ে হলুদ রঙের তরমুজ বেশী ফলন হয়েছে। দেখতে যেন হলুদের সমারোহ। 

এই বর্ষাকালে ফলন এতটাই ভালো হয়েছে যে, দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। আর খেতেও রসালো ও সুস্বাদু এই তরমুজ। বিক্রি করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

হাইব্রিড জাতের হলুদ ও কালো রঙের এই তরমুজ চাষে তিনি পোকা দমনে ব্যবহার করেছেন হলুদ ফাঁদ ও ফেরোমন ফাঁদ। জমিতে প্রয়োগ করেছেন গোবর ও কিছু পরিমাণে সার। এসব ব্যবহার করায় তরমুজের প্রচুর ফলন হয়েছে। রাসায়নিক ব্যবহার না করায় তার উৎপাদিত তরমুজ বিষমুক্ত। 

কৃষক আব্দুস ছালামের এ রঙীন তরমুজ দেখতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।

বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের পরামর্শ গ্রহণ করে হলুদ রঙের তরমুজের চাষ করেন এই কৃষক। হাইব্রিড জাতের এ তরমুজ চাষে সফল হবেন বলে আশাবাদী ওই কৃষক। এর আগে একই জমিতে সবজি চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।

স্থানীয় কৃষক তৌহিদ মিয়া বলেন, কয়েক বছর আগে মাচায় কালো রঙের তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছি। এবার কৃষক আব্দুস ছালাম হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ চাষ করে সফল। আগামীতে আমিও তরমুজ চাষ করতে চাই। কারণ অসময়ে তরমুজ চাষে লাভবান হওয়া সম্ভব।

স্থানীয় কৃষক শাহীন মিয়া, আফরোজ মিয়া, ফয়সল মিয়া বলেন- এমন বর্ষাকালে গাছে গাছে তরমুজ ঝুলছে মাচায়। এ দৃশ্য আমাদেরকে মুগ্ধ করছে। আগামীতে আমরাও নিজ নিজ জমিতে এ জাতের তরমুজ চাষ করতে চাই।  

কৃষক আব্দুস ছালাম জানান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ বছর তিনি ২৫ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেন। প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ তরমুজ আছে তার জমিতে। আর ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হবে এসব তরমুজ। তাই বর্তমানে গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে।

এখন পর্যন্ত তরমুজ চাষে প্রায় ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। বর্তমান বাজারে হলুদ রঙের তরমুজের প্রতি কেজির দাম প্রায় একশ টাকা। সে হিসেবে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন আব্দুস ছালাম।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। কৃষক ছালাম হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ আবাদ করে চমক দেখিয়েছেন। তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়েছে। তার তরমুজ চাষে সফলতা দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও এ জাতের তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তারাও আমার কাছে পরামর্শ চাইছেন। আমি পরামর্শ দিয়েছি। এক কথায় হলুদ রঙের তরমুজ চাষে আব্দুস ছালামের বাজিমাত।  

বাহুবল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, তরমুজ চাষ বাহুবলে ছিল না। আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়েছি। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে উপজেলার হাফিজপুর গ্রামে হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ চাষ করেন আব্দুস ছালাম। ফলন ভালো হয়েছে। বিশেষ করে প্রমাণ হলো, হলুদ রঙের তরমুজ চাষে বাহুবলের মাটি বেশ উপযোগী। এ জাতের তরমুজ রসালো। খেতেও সুস্বাদু।

/টিপু/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়