ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাঞ্জি জাম্প: ভীতিকর অনন্য অভিজ্ঞতা

ইকবাল মাহমুদ ইকু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২২, ১১ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাঞ্জি জাম্প: ভীতিকর অনন্য অভিজ্ঞতা

আপনার যদি উচ্চতা-ভীতি থাকে তাহলে প্রথমেই ভ্রমণ পরিকল্পনা থেকে বাঞ্জি জাম্প বাদ দিতে হবে। কেন বলছি কথাটা? কারণ বাঞ্জি জাম্প হলো শরীরের সঙ্গে ইলাস্টিকের শক্ত দড়ি বেঁধে অনেক উঁচু কোনো জায়গা থেকে নিচে ঝাঁপিয়ে পড়া। ঝাঁপিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মনে হতে পারে- জীবনে এই প্রথম আপনি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অথচ ফেরার আর উপায় নেই! 

অনেক উঁচু থেকে লাফ দিতে হয় বলে বাঞ্জি জাম্প বেশ ভীতিকর! লাফ দেয়ার আগে মনের ভিতর ভয় কাজ করে। অনেক সাহসী মানুষও এ সময় ভয়ে চোখ বুজে ফেলেন। হলফ করে বলছি, কয়েক সেকেন্ডের এই অভিজ্ঞতা আপনি সারাজীবন মনে রাখবেন।

বর্তমানে অনেক পর্যটক জীবনবাজি রেখে বাঞ্জি জাম্পিং করতে চান। তারা ছুটে যান চীনের ম্যাকাও। এই ম্যাকাও টাওয়ারে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বাঞ্জি জাম্প-এর ব্যবস্থা আছে। এখানে আপনাকে মাটি থেকে প্রায় ৭৬৫ ফুট উঁচু থেকে নিচে লাফিয়ে পড়তে হবে। উচ্চতার দিকে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে আমেরিকার পেরি ব্রিজ। সেখানকার উচ্চতা ৪৯৭ ফুট।

যাই হোক, বাঞ্জি জাম্প কেন্দ্র করে বর্তমানে ম্যাকাও শহর পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। হংকং থেকে ফেরীতে ম্যাকাও যেতে মাত্র এক ঘণ্টা লাগে। বর্তমানে শহরটিকে চীনের লাস ভেগাসও বলা হচ্ছে। ক্যাসিনো, চাকচিক্য এবং আকর্ষণীয় সব আয়োজন সমৃদ্ধ এই শহর পর্যটন সম্পর্কে আপনার ধারণা পাল্টে দিবে। এখানে একজন পর্যটকের ঘুরে দেখার মতো এবং অ্যাডভেঞ্চার করার মতো কিছুর অভাব হবে না। তবে মনে রাখবেন, ম্যাকাও টাওয়ারের বাঞ্জি জাম্পিং সবচেয়ে সেরা!

এ জে হ্যাকেট এক্সট্রিম স্পোর্টস প্রিয় মানুষ। তিনি বাঞ্জি জাম্প  বিশেষজ্ঞ। তিনিই ম্যাকাও টাওয়ারে এই ব্যবস্থা করেছেন। বিষয়টিকে নিরাপদ করার পেছনে তার রয়েছে কঠোর পরিশ্রম। ম্যাকাও টাওয়ার থেকে এই জাম্প ধনুক আকৃতির কর্ড দিয়ে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে মানুষ যেকোনো আবহাওয়ায় এখান থেকে লাফ দিতে পারে। এছাড়া শীত এবং গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমে মানুষ এখান থেকে রাতেও জাম্প দিতে পারবেন।

যারা এখানে লাফ দিতে আসেন তাদের জন্য ‘স্ট্যান্ডার্ড’ এবং ‘ফুল’ নামক দুই ধরনের প্যাকেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে আপনি যে প্যাকেজই নিতে যান না কেন, এর কোনোটিই অল্প টাকায় পাবেন না। এখানে ফুল প্যাকেজ কিনতে আপনাকে গুনতে হবে ৫০০ ডলার এবং স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজের জন্য খরচ হবে ৪৩০ ডলার। ফুল প্যাকেজে রয়েছে বাঞ্জি জাম্প, একটি টিশার্ট, ছবি, ভিডিও ফুটেজ এবং টাওয়ারের মধ্যে প্রবেশের টিকিট। স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজে ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ পাবেন না। তবে অতিরিক্ত দামের কারণে আপনি যদি ম্যাকাও টাওয়ারে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বাঞ্জি জাম্পিং করতে না পারেন তাতে দুঃখ পাবেন না। খুব অল্পের মধ্যে আপনি ম্যাকাও টাওয়ারের স্কাই ওয়াক এবং টাওয়ার বেয়ে ওঠার সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। 

নেপালের পোখরাতেও রয়েছে বাঞ্জি জাম্পিং সুবিধা। সেখানে আপনি খুব অল্প খরচের মধ্যেই এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার স্বাদ গ্রহণ করতে পারবেন। সেখানে আপনার খরচ হবে মাত্র ছয় হাজার আটশ নেপালি রুপি। তবে আপনি যদি ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ চান তাহলে আলাদা দুই হাজার রুপি দিতে হবে। এর উচ্চতা প্রায় ৭০ মিটার; আনুমানিক ২২ তলা। 


ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়