ইংল্যান্ডের মন্ত্র, জড়তা রাখা যাবে না
লন্ডন থেকে ক্রীড়া প্রতিবেদক : অনুশীলন শেষে স্টেডিয়ামের ভেতরে আইসিসি মার্চেন্ডাইস শপে আদীল রশিদ। বাচ্চার জন্য কিনছিলেন বিশ্বকাপের জার্সি, সুভেনিয়র। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার অপেক্ষায় থাকা এ লেগ স্পিনারকে দেখে বোঝার উপায় নেই কাল পাশের মাঠেই নামবেন শিরোপা যুদ্ধে। বেশ ফুরফরে, প্রাণবন্ত। কোনো চাপ নেই।
শুধু আলীদ রশিদ নয়, ইংল্যান্ডের পুরো দলের অবস্থা একই। নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের ফাইনালের ফোর্থ আম্পায়ার আলীম দার। ম্যাচের আগের দিন আম্পায়ার প্যানেল দাঁড়িয়েছিলেন লর্ডসের ব্যালকনিতে। সবুজের গালিচা দিয়ে ফেরার পথে বেন স্ট্রোকসের অনুশীলনে যোগ দেন পাকিস্তানের এ আম্পায়ার! মেশিনে ক্যাচ অনুশীলন করছিলেন স্টোকস। আলীম দারেরও ইচ্ছা হল ক্যাচ ধরবেন। পাঞ্জাবের হয়ে ১৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা আলীম দারকে পাঁচটি ক্যাচ ছোঁড়া হয়েছিল, ধরতে পারেননি একটিও! হাসতে হাসতে গড়াগড়ি করেন স্টোকস।
মরগান সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন লর্ডসের ড্রেসিং রুম থেকে বের হয়ে। মিডিয়া ম্যানেজারের সঙ্গে সে কি আড্ডা। মাঠের বাইরে ইংল্যান্ড দলের চিত্রটা এরকমই ছিল পুরোদিন। বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে শেষ চার বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে মরগান ব্রিগেড। এবার মাঠে নেমে শিরোপা উল্লাসের পালা! কাজটা মোটেও সহজ নয়। বিশ্বকাপের অন্যতম ধারাবাহিক দল নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে পেতে হবে শিরোপা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ভালো করতে মুখিয়ে মরগান।
তবে একটি ভয় হয়তো পাচ্ছে স্বাগতিকরা। বড় মঞ্চে তাদের দলের কোনো ক্রিকেটারের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা নেই। সেই চাপ তারা নিতে পারবে কিনা সেটাই দেখার। অবশ্য ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল তারা খেলেছিল। হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ বিসর্জন দিয়েছিল স্নায়ু ধরে রাখতে না পারায়। তাইতো লর্ডসের বিগ ফাইনালের আগে যতটা পেরেছে সময়টা উপভোগ করেছে।
মরগানের মুখেও একই সুর,‘সত্যি বলতে, আমি এখন খুব ফুরফুরে আছি। ঘরে ফিরতে পেরে অবশ্যই ভালো লাগছে এবং আগামীকালের ম্যাচের জন্য মুখিয়ে আছি। আমরা ম্যাচটি উপভোগ করব। এ ম্যাচের থেকে যতটা সম্ভব নেওয়ার চেষ্টা করব আমরা। বিশ্বকাপের ফাইনাল বলে আমরা পথ ভুলব না। হ্যাঁ এটা সত্য, ফাইনালের মঞ্চে জড়তা রাখা যাবে না। আমাদের পথে কোনো বাধা না আসলে আমরাই শিরোপা জিতব আশা করছি।’
২৭ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ড। তিন যুগের মধ্যে এটাই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে সবথেকে বড় ঘটনা। গোটা ইংল্যান্ড জুড়েই চলছে উৎসব। এমন উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন মরগান, বাটলাররা। সমর্থকদের ভালোবাসায় উচ্ছ্বসিত ইংলিশ অধিনায়ক,‘খুব বেশি করে প্রতিক্রিয়া দেখাব না। তবে যেভাবে সবার বার্তা পাচ্ছি, মানুষের সঙ্গে রাস্তায় দেখা হলে শুভকামনা জানাচ্ছে, তাতে আমরা উচ্ছ্বসিত।’
মাঠে নামার আগে সতীর্থদের উদ্দেশ্যে বাড়তি কোনে বার্তা নেই মরগানের। ২২ গজে খেলাটা উপভোগ করার পরামর্শ তার,‘সকালে ছেলেদের দেখে বোঝা যাবে কি করতে হবে। যদি দেখি তারা বেশি উত্তেজিত তাহলে সেটা কমাতে হবে। যদি দেখি কম, তাহলে সেটা বাড়াতে হবে। শেষ তিন-চার ম্যাচে যেটা দেখেছি সবার মধ্যে উত্তেজনা সমান-সমান ছিল। আশা করছি ফাইনালেও তারা একই উদ্যম ধরে রাখবে।’
রাইজিংবিডি/লন্ডন/১৩ জুলাই ২০১৯/ইয়াসিন/আমিনুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন