ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আদিনাথ মন্দিরে হয় ঘট পূজা ।। সুজাউদ্দিন রুবেল

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৯ অক্টোবর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আদিনাথ মন্দিরে হয় ঘট পূজা ।। সুজাউদ্দিন রুবেল

শ্রীশ্রী আদিনাথ মন্দির হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম তীর্থস্থান। হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবতা মহাদেব (শিব বা আদিনাথ)- এর নামানুসারে এই মন্দিরের নামকরণ করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর বঙ্গোপসাগর ঘেষা মৈনাক পর্বতের (রামায়ণের বর্ণনা মতে) সর্বোচ্চ চূড়ায় নৈসর্গিক পরিবেশে আদিনাথ মন্দিরের অবস্থান। আদিনাথের আরেক নাম মহেশ। এই ‘মহেশ’ দেবতার নামানুসারে মহেশখালীর নামকরণ।

রামায়ণ গ্রন্থের বর্ণনা মতে হিন্দুদের বিশ্বাস, এই তীর্থ দর্শন না করলে তীর্থ দর্শনের মতো পূণ্যময় কাজের অপূর্ণতা থেকে যায়। তাই বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বী এই তীর্থ দর্শনে আসেন।   

আদিনাথ মন্দিরের গোড়াপত্তনের ইতিহাস ষোড়শ শতাব্দীতে হলেও রামায়ণের বর্ণনা মতে হিন্দুদের বিশ্বাস, এই পাহাড় চূড়ায় আদিনাথের (শিব) অধিষ্ঠান হয়েছে প্রায় বিশ লাখ বছর আগে ত্রেতাযুগে।

আদিনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শংকর ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে জানান, এই মন্দিরের একটি ঐতিহাসিক সত্যতা রয়েছে এবং তা পাওয়া যায় হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন গ্রন্থ, রামায়ণ, পুরাণ ও ঐতিহাসিকদের বর্ণনায়। আদিনাথ (শিব) সর্ব গুণময় হয়েও গুণাতীত অব্যক্ত ভগবান। ব্যক্ত চরাচরে শিবরূপী উর্দ্ধরূপী শিবলিঙ্গ। সবাই নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত রেখে জ্ঞানময়, কল্যাণময়, মঙ্গলময় সর্বকলুষ বিনায়ক, সত্য শ্বাশত সনাতন।

তিনি বলেন, ‘সাগর পাড়ের পাহাড় ঘেষা নির্জন মনোমুগ্ধকর স্থানে শ্রীশ্রী আদিনাথের গোড়াপত্তন। তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিতি লাভের ইতিহাস ব্যাপক। শ্রীশ্রী আদিনাথ মন্দির হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম তীর্থস্থান। যে সনাতনী ব্যক্তি শ্রীশ্রী আদিনাথ দর্শন করেননি তিনি অন্য সকল তীর্থ দর্শন করলেও পরিপূর্ণ পূণ্যলাভে সফলকাম হন না। যেহেতু স্বয়ং মহাদেব একমাত্র এই স্থানেই আবির্ভূত হয়েছিলেন, সুতরাং তীর্থ দর্শনের মাধ্যমে মোক্ষ লাভের (চিরমুক্তি) এবং মনের ইচ্ছা পূরণের জন্য শ্রীশ্রী আদিনাথ দর্শনই সর্বশ্রেষ্ঠ।’

পুরোহিত শংকর ভট্টাচার্য্য রামায়ণ গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘ত্রেতাযুগে রাম ও রাবণের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

রাবণ লংকা যুদ্ধে রামের সঙ্গে জয় লাভের জন্য উদগ্রীব। আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও রাবণ যুদ্ধে পেরে উঠছিলেন না। তিনি মহাদেবের কাছে যুদ্ধজয়ের জন্য অমরত্ব লাভের বর (পণ) প্রার্থণা করেন। ওই সময়ে মহাদেব (শিব বা আদিনাথ) কৈলাস পবর্তে ধ্যানমগ্ন ছিলেন। রাবণের আরাধনায় মহাদেব সন্তুষ্ট হয়ে রাবণকে বর দিলেন। তবে তিনি সঙ্গে শর্ত জুড়ে দিলেন যে, শিবরূপী ঊর্ধ্বমুখী শিবলিঙ্গকে কৈলাস থেকে বহন করে লংকায় নিয়ে যেতে হবে। পথে কোথাও রাখা যাবে না। যদি পথে কোথাও রাখা হয় তা হলে মহাদেব সেই স্থানেই অধিষ্ঠান (অবস্থান) নিবেন। রাবণ শর্ত মেনে নিলেন এবং মহাদেবকে কাঁধে বহন করে রওনা দিলেন। যাত্রা পথে প্রাকৃতিক কাজে সাড়া দিতে গিয়ে এটি মৈনাক পর্বতের শিখরে রাখতে বাধ্য হন। ওই সময় এই স্থানে নারায়ণ ব্রাহ্মণ রূপে আবির্ভূত হলেন। রাবণ এই ব্রাহ্মণকে সাক্ষীস্বরূপ দাঁড় করিয়ে এই পর্বতের পেছনে প্রকৃতির কাজ সারতে গেলেন।
 


কিন্তু ব্রাহ্মণ রূপে নারায়ণ কালক্ষেপণ না করার জন্য সময় বেঁধে দিলেন। রাবণ প্রাকৃতিক কাজ কয়েক ঘণ্টায়ও শেষ করতে পারলেন না। ওই জায়গাটি এখনও বিদ্যমান, যার নাম স্থানীয়ভাবে এখন ‘মুদিরছড়া’ নামে পরিচিতি বহন করছে মন্দিরের পেছনে উত্তর-পশ্চিমে এক কিলোমিটার দূরে।

প্রকৃতির কাজ সেরে রাবণ এসে সেই স্থানে সাক্ষী হিসেবে রেখে যাওয়া ব্রাহ্মণকে দেখতে পেলেন না। শেষে শিলারূপী মহাদেবকে কাঁধে উঠাতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু কোন অবস্থাতেই সর্বশক্তি নিয়োগ করেও আর উঠাতে পারলেন না। যা ওই অবস্থায় এখনও স্থিতিত। এই অবস্থায় দেববাণী উচ্চারিত হতে লাগল ‘রাবণ তোমার অমরত্ব লাভ ব্যর্থ হল, তুমি খালি হাতে লংকায় চলে যাও। মহাদেব এই মৈনাক শিখরেই অবস্থান নেবেন।’ রাবণ লংকায় পৌঁছলেন এবং রামের সঙ্গে ভয়ংকর যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি রামের কাছে পরাজয় বরণ করলেন।

পুরহিত শংকর ভট্টাচার্য্য স্থানীয় জনশ্রুতির কথা জানিয়ে বলেন, ‘শ্রীশ্রী আদিনাথের মৈনাক পর্বতে অবস্থান নেওয়া এবং আবিষ্কার সম্পর্কে এক সুন্দর জনশ্রুতি আছে। এলাকাবাসীদের মতে ঘটনাটি বস্তুগতভাবে সত্য। এই সত্য আরো বদ্ধমূল হয়ে উঠেছে এলাকাবাসীর মধ্যে আদিনাথ মন্দিরের বিষয়ে সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের দৃষ্টান্তের ঐতিহ্যে।’

কথা হয় আদিনাথ মন্দিরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সুনীল চক্রবর্তীর সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নূর মোহাম্মদ সিকদার আরেকদিন স্বপ্নে আদেশ পান, শিবের শক্তি অষ্টভুজাকে (দুর্গা) সুদূর নেপাল থেকে এনে এই মৈনাক শিখরে অবস্থান করানোর। তখন এই মন্দিরে নাগা সন্ন্যাসীদের যাতায়াত ছিল। সেই সুবাদে তিনি নাগা সন্ন্যাসীর মাধ্যমে ১৬১২ সালে নেপাল স্টেটের মন্দির (রাজবাড়ীর মন্দির) থেকে চুরি করে নিয়ে আসার সময় ধরা পড়ে যান ও জেলে বন্দি হন।

যেদিন রায় ঘোষণা হবে তার পূর্ব রাতে ওই নাগা সন্ন্যাসী যোগমায়ায় (সাধনাবলে) মহাদেবের সান্নিধ্যে কৃপা লাভ করেন। স্বপ্নে মহাদেব অভয় বাণী দেন, ‘বিচারক তোমাকে যে প্রশ্নই করুক না কেন, তুমি নির্ভয়ে তোমার মুখ দিয়ে যা বের হবে তা-ই বলবে।   পরের দিন হলও তা-ই। রায় ঘোষণাকালে বিচারক নেপালের রাজাকে প্রশ্ন করে জানতে চান মূর্তির রং কি রকম ছিল।

রাজা উত্তরে মূর্তির রং কষ্টি পাথরের (কালো রং) বর্ণনা দেন। পরে ওই নাগা সন্ন্যাসীকে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে বলেন, আমার মূর্তির রং সাদা। তখন বিচারক প্রতেক্যের সম্মুখে উন্মোচন করে দেখলেন প্রকৃত সাদা রং-ই মূর্তির আসল রং। তখনই নাগা সন্ন্যাসীর পক্ষে রায় ঘোষণা করা হয় এবং নেপালের রাজা ক্ষমা প্রার্থণা করে প্রকৃত ঘটনা জানতে উদগ্রীব হন। তখন নাগা সন্ন্যাসী রাজাকে বিস্তারিত খুলে বলেন। এরপর রাজা নিজেই এই মূর্তিটিকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে এই মৈনাক পর্বতে শ্রীশ্রী আদিনাথের পার্শ্বেই স্থাপিত করেন এবং মূল মন্দির নির্মাণ করে যান। নেপাল রাজার নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ওই মন্দিরের বয়স পাঁচশত বছরের বেশি।’

তিনি জানান, এখনও নেপাল সরকারের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে যথাসাধ্য অনুদান এসে থাকে। এই মৈনাক পর্বত হিমালয়ের শাখা, পূরাকালে প্রাগৈতিহাস্পুর, ত্রিপুরা, চট্টগ্রাম, আরকান, ব্রহ্মদেশ, মালদ্বীপ ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত এক সমসূত্রে গাঁথা ছিল। বর্তমান সময়ের নিম্নবঙ্গ ছিল সাগর গর্ভে, আর্যরা এই অঞ্চলকে পূর্ব সাগর বলত।
 


অর্থাৎ মগদের পরই ছিল সমুদ্র। এমনকি বিন্দ পর্বত ও দক্ষিণ সাগর তীরবর্তী বলে উল্লেখ আছে। এই মৈনাকের অবস্থান লবণ সমুদ্রে, পূরাণ আদিতে উল্লেখ আছে। যা বর্তমানে চট্টগ্রামের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মহেশখালী দ্বীপ। এই দ্বীপেই মৈনাক, মৈনাক শীর্ষেই আদিনাথ শিবের অবস্থান।

সুনীল চক্রবর্তী বলেন, ‘মহেশখালীতে কোন দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে পূজা করা হয় না। কারণ, স্বয়ং অষ্টভূজা দুর্গা এখানে জাগ্রত আছেন। প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় প্রতিমার পরিবর্তে ঘট পূজা করা হয়।’

তিনি আরো জানান, নবাব আলীবর্দী খাঁ’র আমলে দেওয়ান ব্রজকিশোর লাল কানুনগোর প্রতিনিধি দেওয়ান কালিচরন নয় বৎসরের কিশোর শরৎচন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে এই দ্বীপে আসেন এবং দ্বীপটি ক্রয় করেন। পরে শরৎচন্দ্র ওই নাগা সন্ন্যাসীর সংস্পর্শে এসে দীক্ষা গ্রহণ করেন।

তিনি পরবর্তীতে তার জমিদারীর সকল সম্পত্তি ১৮৭৬ সালে শ্রীশ্রী আদিনাথ মন্দিরের নামে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে দান করে দেন। আদিনাথ দ্বৈত ব্যবস্থাপনা ‘পুরী অ্যাক্ট’ অনুযায়ী মোহন্ত শাসনে ছিল। পরে মোহন্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে ১৯১১ সালে এর ব্যবস্থাপনা সীতাকুন্ড স্রাইন কমিটির অধীনে চলে যায়। যা এখনও বর্তমান।

ভারত, নেপাল, ভূটান, আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সারা বছরই হাজার হাজার তীর্থযাত্রী পূণ্য অর্জনের জন্য প্রতিনিয়ত এখানে যাতায়াত করে থাকেন। তা ছাড়াও প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের শিব চতুর্দশী তিথিতে (কৃঞ্চপক্ষের চতুর্দশী) লাখ লাখ পূণ্যার্থী তীর্থ ভ্রমণে আসেন। পক্ষকালব্যাপী এই শিব চতুর্দশী মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের পূণ্যার্থী ছাড়াও হাজার হাজার মুসলমান ও বৌদ্ধের সম্মিলন ঘটে। সকল সম্প্রদায়ের লোকের ভিড়ে লোকারণ্য হয়ে পূণ্যক্ষেত্রে পরিণত হয় স্থানটি।

আদিনাথ মন্দিরে অবস্থানকারী ৮৫ বছর বয়সী পুরোহিত তপন ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে জানান, খুব ছোটকালে যখন তিনি এই মন্দির দর্শনে আসেন তখন এখানে গাছকে এই অবস্থায়ই দেখেছেন। আজও মনে হয় গাছটি একই রকম রয়েছে। পবিত্র বলে গাছটিতে এখনও প্রৌঢ়ত্ব ভর করতে পারেনি বলে তার ধারণা।  

চর্তুদিকে সাগর বেষ্টিত মহেশখালী দ্বীপের অন্যতম দর্শনীয় স্থান আদিনাথ মন্দির। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২৮৮ ফুট উঁচু মৈনাক পাহাড় চূড়ায় আদিনাথ মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরের দৈর্ঘ্য ১০.৮৭ মিটার,  প্রস্থ ৮.৬২ মিটার, উচ্চতা ৫.৯৩ মিটার। তিনভাগে বিভক্ত এই মন্দিরের প্রথম ভাগে ৩.৩৫ মিটার বর্গাকৃতির দুটি পূজা কক্ষ রয়েছে।
 


পূর্বকক্ষে বাণলিঙ্গ শিবমূর্তি আর পশ্চিম কক্ষে অষ্টভূজা দুর্গা মূর্তি। শিবের সঙ্গে মন্দিরের একটি গভীর সম্পর্ক বলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে থাকেন। প্রতিবছর আদিনাথ মেলার সময়ে মন্দির সংলগ্ন সনাতন ও রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজনের ঘরে ঘরে আগত অতিথিদের সাধ্যমত আপ্যায়নের জন্য স্থানীয়রা ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

আদিনাথ মন্দিরের পাশে পাহাড় চূড়ায় বৌদ্ধদের একটি প্রাচীন প্যাগোডা আছে। এটি তৈরি হয়েছে প্রায় তিন শত বছর আগে। দুটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থাপনার শত শত বছর ধরে অবস্থান আর আদিনাথ মেলায় সকল সম্প্রদায়ের লোকজনের অংশগ্রহণ আমাদের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের নিদর্শন।

মহেশখালী চ্যানেল সংলগ্ন পশ্চিম পাশে মৈনাক পাহাড়টি অবস্থিত। ষোড়শ শতাব্দীতে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হলেও আদিনাথ মন্দির ও মন্দির সংলগ্ন ২১৭ একর জমি এক সময়ে থাকলেও বর্তমানে প্রতিনিয়ত পাহাড় ভাঙনের কারণে মন্দিরের পূর্ব পাশের বিস্তর জমি সমুদ্রের করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে। এ মন্দিরের পাশেই কক্সবাজার জেলা পরিষদ কর্তৃক আদিনাথ জেটি নির্মিত হওয়ায় পর্যটকদের এখানে আগমন আরো সহজতর হয়েছে।

আদিনাথ মন্দিরের পাদদেশে রাখাইন সম্প্রদায়ের একটি পাড়া ও ঠাকুরতলা বৌদ্ধ বিহার নামে একটি বিহার রয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে পাক হানাদার বাহিনী বৌদ্ধ বিহারটিতে অগ্নিসংযোগ ও নির্বিচারে গোলাবর্ষণ করে। এতে পাঁচজন নিরীহ রাখাইন শহীদ হন। পাক হানাদারদের নির্মম তা-বলীলার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে এখনো বৌদ্ধ বিহারে গলাকাটা কয়েকটি শ্বেত পাথরের বুদ্ধমূর্তি কালের নীরব সাক্ষী হয়ে রয়েছে। আদিনাথ মন্দিরে আগত পর্যটকদের জন্য অস্থায়ীভাবে রাখাইন রমণীরা তাদের নির্মিত কাপড়, চাদর বিক্রি করার জন্য পসরা সাজিয়ে রাখেন।

আদিনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শংকর ভট্টাচার্য্য জানান, মন্দিরে ১৩ জন সেবায়েত আছেন। এর মধ্যে পুরোহিত পাঁচজন, পাহারাদার দুজন, ভোগ বা প্রসাদ তৈরির সেবায়েত পাঁচজন ও একজন ব্যবস্থাপক।

তিনি দাবি করনে, প্রতিবছর পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠিত আদিনাথ মেলায় লাখো লোকের সমাবেশ ঘটে। কিন্তু মেলায় আগত লোকজনের সমস্যা হচ্ছে- কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাট থেকে আদিনাথ মন্দির পর্যন্ত যাতায়াত ব্যবস্থার। সরকারের পক্ষ থেকে অন্তত মেলার সময়ে এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

কারণ, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নিলে প্রাণহানির মতো অনাকাঙ্খিত ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় আগত লাখো মানুষের রাত্রিযাপনের কোন ব্যবস্থা মহেশখালীতে নেই। ফলে মেলায় আগত লোকজনকে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করতে হয়।


 

 


রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/১৯ অক্টোবর ২০১৫/সুজাউদ্দিন রুবেল/রণজিৎ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়