ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

গবেষণার দ্বার খুলতে হবে : অধ্যক্ষ, রাজশাহী কলেজ

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ২৪ মে ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গবেষণার দ্বার খুলতে হবে : অধ্যক্ষ, রাজশাহী কলেজ

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান (ডানে) শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছ থেকে ক্রেস্ট নিচ্ছেন (ছবি : শাহীন ভূঁইয়া)

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত কলেজগুলোর মধ্যে দেশসেরা কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রাজশাহী কলেজ। ২০ মে জাতীয় জাদুঘরে কলেজ র‌্যাংকিং ২০১৫-এর অ্যাওয়ার্ড ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে সেরা কলেজের পুরষ্কার গ্রহণ করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

 

এ বছরই প্রথম বারের মতো কলেজ র‌্যাংকিং পদ্ধতি শুরু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এখন থেকে প্রতিবছর কলেজ র‌্যাংকিং করা হবে। অনুষ্ঠানে এক ফাঁকে রাজশাহী কলেজের সাফল্য, সংকট, লক্ষ্য ও প্রত্যাশাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেন রাইজিংবিডি ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক আরিফ সাওন

 

রাইজিংবিডি : দেশসেরা কলেজের স্বীকৃতি পেয়েছে আপনার কলেজ। কেমন লাগছে?

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : কষ্টের ফলে সাফল্য আসে। এই সাফল্যে অত্যন্ত আনন্দিত। ভবিষ্যতেও এই সাফল্য ধরে রাখতে চাই। সেভাবেই কাজ করে যাব।

 

রাইজিংবিডি : রাজশাহী কলেজের ঐতিহ্য সম্পর্কে কিছু বলুন।

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : ১৮৭৩ সালে কয়েকজন জমিদার ও রাজশাহীর গুণিজনরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাজশাহী কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তখন রাজশাহী অঞ্চলে এই একটি মাত্র কলেজ ছিল। রাজশাহী কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রায় ৮০ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। সেই হিসাবে রাজশাহীর সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ রাজশাহী কলেজ।

 

রাইজিংবিডি : কলেজের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু বলুন।

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : বর্তমানে ২৩টি বিষয়ে অনার্স ও ২১টিতে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুগোপযোগী শিক্ষা প্রসারে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে রাজশাহী কলেজ। শিক্ষার্থী আছে প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার।

 

রাইজিংবিডি : সময়োপযোগী শিক্ষার জন্য কলেজের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের সময়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া ও ওয়াইফাই রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষার সব ধরনের সুবিধা পাচ্ছে।

 

রাইজিংবিডি : আপনার কলেজ তো দেশসেরা হয়েছে। এই সফলতার জন্য কী কী বিষয় ভূমিকা রেখেছে?

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : আমার স্বপ্ন রাজশাহী কলেজকে ঘিরে। আমি সকাল ৮টায় কলেজে আসি আর রাত ৮টায় বের হই। সব শিক্ষক আন্তরিক। নিয়মিত ক্লাস নেন সবাই। এ সাফল্যের জন্য সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। তা ছাড়া প্রশাসনিক কাজের চাপ সত্ত্বেও আমি নিজেও ক্লাস নেই। যে কারণে শিক্ষকরা আরো দায়বদ্ধ হয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করেন। কলেজের পরিবেশ শিক্ষাবান্ধব। কলেজ প্রাঙ্গণ সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। কোথাও এক টুকরো কাগজও খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শিক্ষার্থীদের সুন্দর মন গঠনে সাহায্য করে।

 

 রাজশাহী কলেজের ঐতিহ্যবাহী ফুলার ভবন

 

আমাদের বড় সাফল্য হচ্ছে আমরা শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষমুখী করতে পেরেছি। কোচিং এবং প্রাইভেট থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে আমরা ক্লাস নিশ্চিত করেছি এবং শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অনার্সে উপস্থিতি ৮০ শতাংশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের ভূমিকা অনেক। যে কারণে মানসম্পন্ন শিক্ষক প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমরা অনেকটা সফল।

 

রাইজিংবিডি : শিক্ষার্থীদের মধ্যে গঠনমূলক নেতৃত্ব তৈরির জন্য আপনারা কোনো উদ্যোগ নেন কি?

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বিষয় ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমরা তাদের কথা বলা শেখাচ্ছি। সভা-সেমিনারে আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন কথা বলতে পারে- সে জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসগুলোতে বুদ্ধিচর্চাকেন্দ্রিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

 

রাইজিংবিডি : দেশসেরা হয়ে আপনারা খুশি, রাজশাহীবাসী আনন্দিত। তবে কলেজকে আরো এগিয়ে নিতে কোনো সীমাবন্ধতা অনুভব করেন কি?

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : বাংলাদেশ যেমন নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনি অনেক সীমাবদ্ধতা আমার কলেজেও আছে- তা সত্ত্বেও রাজশাহী কলেজ এগিয়ে যাচ্ছে।

 

রাইজিংবিডি : রাজনৈতিক সংকট আছে কি না?

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : রাজনৈতিক সংকট যতটুকু আছে, তা ঠুনকো। এটা কোনো ব্যাপার না।

 

রাইজিংবিডি : কলেজ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : আমাদের লক্ষ্য হলো- ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার যে অঙ্গীকার রয়েছে, তা পূর্ণ করতে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা। ২০৩০ সালের মধ্যে এএসডি অর্জনে শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজশাহী কলেজ অনন্য ভূমিকা রাখবে- এ আমার প্রত্যাশা।

 

রাইজিংবিডি : সেরা কলেজ হিসেবে এই মুহূর্তে সরকারের কাছে আপনাদের কোনো দাবি আছে কি না?

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : আমরা শুধু চাই রাজশাহী কলেজে একটি বহুতলবিশিষ্ট ভবন। যেখানে শিক্ষার্থীরা গবেষণা করতে পারবে। যেহেতু উচ্চশিক্ষার কথা বলা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার জন্য গবেষণার বিকল্প কিছু নেই। গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষার প্রকৃত চর্চা করা যায়। তাই গবেষণার দ্বার খুলতে হবে।

 

রাইজিংবিডি : ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান : রাইজিংবিডিকেও ধন্যবাদ।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মে ২০১৬/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়