ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মেলায় ১৭ লেখিকার প্রথম বই

অলাত এহ্সান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মেলায় ১৭ লেখিকার প্রথম বই

অলংকরণ : অপূর্ব খন্দকার

অলাত এহ্সান : এটা ঠিক প্রকৃতিগতভাবে লেখিকাদের লেখনির বিষয়বস্তু, উপস্থাপন ও ভাষা অনেকটাই আলাদা। তাই বলে কেবল লৈঙ্গিক বিভাজনে সাহিত্যের মূল্যায়ন এক ধরনের খণ্ডিত বিচার। অনেক সময় এই বিচারের শিকার হন নারী লেখকরা। এমনকি এই আধুনিক সময়েও। অথচ বিশ্বে অনেক লেখিকাই আছেন বিখ্যাত। আবার লেখিকাদের আলাদা করে উপস্থান তাদের প্রতি সম্মান ও স্বীকৃতি আদায়েরও ভূমিকা রাখে বৈকি। তাদের লেখনিই সেই গুরুত্বের দাবি রাখে।

 

প্রতি বছরের মতো এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশ হয়েছে বেশ কয়েকজন লেখিকার প্রথম বই। প্রথম বই মোটেই প্রথম লেখা নয়। তাদের বইয়ে প্রবেশ করলেই বোঝায় প্রস্তুতি ও সাহিত্য নিবিষ্ঠতা। বিষয় ভাবনা ও সাহিত্য সাধনায় কেউ কেউ হয়তো সাহিত্যমানের মার্গ স্পর্শ করেছেন। এবারের নতুন কেতন উড়িয়ে প্রথম বই প্রকাশ করেছেন এমন লেখিকা ও বই নিয়ে লিখেছেন তরুণ গল্পকার অলাত এহ্সান।

 

গুলতেকিন খান : আজও, কেউ হাঁটে অবিরাম

বাঙালি মুসলমান লেখকদের মধ্যে স্বনামধন্য লেখক প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁয়ের নাতনী গুলতেকিন খান। তাকেও ছাপিয়ে গেয়ে প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের প্রাক্তন স্ত্রী পরিচয়। কিন্তু সাহিত্যিক হিসেবে তাঁর পরিচয় অজানাই ছিল এতদিন। এবারের বই মেলায় গুলতেকিন খানের প্রথম বই প্রকাশ একটি বড় খবর। তাম্রলিপি থেকে প্রকাশ হয়েছে তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘আজও, কেউ হাঁটে অবিরাম’। ধ্রুব এষের প্রচ্ছদে প্রথম সপ্তাহে আসা বইটি বিক্রিত বইগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত শীর্ষ তালিকায় এসেছে। বইটি উৎসর্গ করেছেন তাঁর প্রয়াত দাদাকে।

 

গুলতেকিন খানের লেখালেখির শুরু স্কুলবেলা থেকে। ছড়াই ছিল তখন মূল। সেগুলো পত্রিকা পাতায় থাকলেও গ্রন্থাকারে কবিতায় তাঁর সৃষ্টিশীল প্রকাশ এই প্রথম। দাদার উৎসাহে তার লেখালেখি বিকশিত হচ্ছিল। কিন্তু বিয়ের পর আর কবিতা চর্চা হয়ে ওঠেনি। তারপর প্রবাসে থাকায় কাব্যসৃজনে পুনঃচ্ছেদ পড়ে তাঁর। দেশে ফিরে স্কুল শিক্ষকতায় যোগ দেওয়ার পর তা আবার শুরু করেন তিনি। তখন ফেসবুকে কবিতা লিখতেন। স্কুলের সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও পারিবারিক উৎসাহে ফেসবুকে লেখা সেই কবিতাগুলোর থেকে যাচাই-বাছাই করে এবার বই করলেন। তাঁর কবিতায় ব্যক্তির স্মৃতির মেদুর বিপন্ন ও অবসাদবোধের সঙ্গে মানবতাবোধের মিশ্রণ।

 

দীনা আফরোজ : অনামিকা তুলেছি হেমন্ত আকাশে

উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় থেকেই কবিতা চর্চা করছেন দীনা আফরোজ। প্রায় একদশক ধরে কবিতাচর্চায় এবার প্রকাশ হচ্ছে তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘অনামিকা তুলেছি হেমন্ত আকাশে’। কবি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এ বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন তৌহিন হাসান। মূল্য ১৩০ টাকা। সালাম মাহমুদ সম্পাদিত ‘পরাগ’ সাহিত্য পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে পরাগের কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। কবিতার পাশাপাশি ছোটগল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস লিখছেন। কবিতা তার কাছে হৃদয়স্থিত চিন্তার ফসল। ফলে কবিতায় হৃদয়ের অহং নিয়ে মানবতার কথাই বলেছেন। সেখানে বিরহ প্রাণ হৃদয়েরও দেখা মেলে।

 

 

তাবাসসুম আরজু : নির্বাচিত বর্ণদূত

প্রায় আড়াই বছর খাটাখাটুনির ফসল তাবাসসুম আরজুর প্রথম বই ‘নির্বাচিত বর্ণদূত’(খ্যাতনামাদের চিঠিপত্র সংকলন)। এশিয়ার বাইরে ৪৫ জন বিখ্যাতের প্রেমপত্রের অনুবাদ সংকল এটি। এদের মধ্যে বিপ্লবী ফিদেল ক্যাস্ত্র, চে গুয়েভারার; দার্শনিক জঁ পল সার্ত্র, সাহিত্যিক জেমস জয়েস, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, মার্কেস, চার্লস ডিকেন্স, এমিলি ডিকিনসন; আব্রাহাম লিংকন, সাদ্দাম হোসেন, মুসোলিনি, নেলসন মেন্ডেলা; অভিনেত্রী গ্রেটা গার্বো; গায়ক বব ডিলান, প্রিন্সেস ডায়ানাসহ অনেকই আছেন যারা নিজের কাজের জন্য স্মরণীয়। বিখ্যাতদের একেকটা চিঠি একেকটা সময়কে উপস্থাপন করে। লেখিকা সমালোচকের দৃষ্টিতে এখানে তাদের মানবিক সম্পর্কের দিকটিই উপস্থাপন করেছেন। সংঘ প্রকাশনীর এই বইটির প্রচ্ছদ শিল্পী সৈয়দ ফিদা হোসেন। তাবাসসুম আরজুর বড় হয়ে ওঠা ঢাকার সোবহানবাগে। বাংলার শিক্ষিকা মায়ের সাহচার্যই লেখালেখির হাতেখড়ি। পরবর্তী সময়ে কবি স্বামীর উৎসাহ ও তাদের পরিবারের শিক্ষায়তনিক পরিবেশে তা আরো বিকশিত হয়েছে।

 

বিপাশা চক্রবর্তী : অন্য আলোয় ভিন্ন চোখে

লেখক ও অনুবাদক বিপাশা চক্রবর্তী। ২০০৬ সাল থেকে বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রযুক্তির সাথে সমাজের মিথস্ক্রিয়া বিষয়ে লিখে আসছেন নিয়মিত। ২০১৫ সালে দৈনিক পত্রিকাসহ শীর্ষস্থানীয় অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ হয় তাঁর অনেক লেখা। সেই প্রবন্ধগুলোই প্রয়োজনে খানিকটা পরিমার্জন, পরিবর্ধন করে সাজিয়েছেন ‘অন্য আলোয় ভিন্ন চোখে’ শীর্ষক প্রথম বইতে। শিখা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইয়ের প্রতিটি লেখাই বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট। চেষ্টা করেছেন তাত্ত্বিক জটিলতা এড়িয়ে যাওয়ার। একজন বিজ্ঞানমনস্ক পাঠক ও ব্যক্তি মানুষ হয়েই লেখাগুলো লিখেছেন তিনি। সাধারণ দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন বিজ্ঞানের ছোঁয়া থাকে তেমনি যেকোনো বিষয় নিয়েই লিখতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞান সংশ্লিষ্টতার উপাদান। এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা পায় বিজ্ঞানভিত্তিক সভ্যতায় বাস করে বিজ্ঞান থেকে দূরে থাকা অসম্ভব। এবারের বইমেলায় বাংলা প্রকাশ থেকে এসেছে তার আরো একটা বই ‘(আলো হাতে এক মায়াবতী নারী) ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল’।

 

ইশরাত তানিয়া : নেমেছ ইচ্ছে নিরিবিলি

ইশরাত তানিয়া কবি ও গল্পকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর শিক্ষা শেষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। এবারের বই মেলায় এসেছে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নেমেছ ইচ্ছে নিরিবিলি’। কবির নিজের করা প্রচ্ছদে বইটি প্রকাশ করেছে চৈতন্য প্রকাশনী। মানবিক সম্পর্ক, নৈরাশ্য, স্বপ্ন, প্রকৃতি, প্রেম, অতীন্দ্রিয়তা বিষয়ে তাঁর উপলব্ধি এবং ভাবনা কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে সাহিত্যকর্ম। বিভিন্ন ফরম্যাটে লেখার চেষ্টা করেছেন কবি। দু’লাইনের কবিতা আছে, আছে গদ্য কবিতা। প্রবাসে বসে লেখার কিছু কবিতায় সেখানকার পারিপার্শ্বিকতা এবং উপলব্ধি প্রভাবিত করেছেন। নিরিবিলি, নৈশব্দ তার কবিতা স্বতন্ত্র দিক। ভালোবাসা ও বোধের বিশুদ্ধ বিস্ময় থেকে কবিতাগুলো জন্মেছে।

 

 

প্রজ্ঞা মৌসুমী : পৌরাণিক রোদ এবং অতিক্রান্ত কাঠগোলাপ

উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে পড়ছেন প্রজ্ঞা মৌসুমী। গল্প ও কবিতা লিখে ইতোমধ্যে তিনি পেয়েছেন বিভিন্ন পুরস্কার। প্রথম দিকের ইংরেজিতে লেখালেখি করতেন তিনি। তবে বাংলাভাষায় তার গভীর অন্বেষা প্রকাশ পেয়েছে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পৌরাণিক রোদ ও অতিক্রান্ত কাঠগোলাপ’। অনুপ্রাণন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটির চমৎকার প্রচ্ছদ এঁকেছেন চারু পিন্টু। ঘটনাচক্রে কিংবা সমাজ-সংস্কারের চাপে বাজিগরের দড়ির ওপর দাঁড় করিয়ে দেওয়া নারীর প্রতিমুহূর্তে যে পা ফসকে যাওয়ার ভয়, অথচ মুক্তির আশ্বাসহীন, সেই বোধ ও অনুভূতির কথাই বলেছেন তিনি।

 

হাবীবাহ্ নাসরীন : কবিতা আমার মেয়ে

শিক্ষার্থী থাকাকাল থেকেই লেখালেখিতে যুক্ত কবি হাবীবাহ্ নাসরীন। দৈনিকের পাতায় নারী, ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল নিয়ে ফ্রিল্যান্স লেখালেখির সুবাদে তিনি আগে থেকেই পরিচিত। বর্তমানে পরোদস্তুর সাংবাদিক। এবারের একুশে বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা আমার মেয়ে’। ভালোবাসা-বিরহ-মায়া-স্নেহ-দেশপ্রেমকে উপজিব্য করে হাবীবাহ্ নাসরীনের কবিতা। বাস্তবতা ও সময়কে স্বীকার করেই এই অন্বেষা। মোট ৬০টি কবিতা স্থান পেয়েছে এতে। প্রতিটি কবিতাতেই ছন্দের ঐকতান পাঠকের মনকে আন্দোলিত করবে। চাইলে যাপিত সময়ের স্বচ্ছচিত্রও খুঁজে পাওয়া যায় তার কবিতায়। দেশ পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন চারু পিন্টু।

 

নাহিদ কায়সার : প্রকৃতি ও পুরুষ

‘প্রকৃতি ও পুরুষ’, এবারের বই মেলায় আসা নাহিদ কায়সারের প্রথম কাব্যগ্রন্থ। কাব্যিক সুষমার সিক্ততা রক্ষা করেই নাটকীয় ভঙ্গিতে লিখেন তিনি। ফলে তাঁর কবিতার ঢং সচরাচরের মতো নয়। যেমন প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের প্রাচুর্য, তেমনি জিজ্ঞাসু। এখানেই অন্যরকম একটা স্বাদের দিক। তাঁর কবিতা ভাবনায় পুরুষ কখনো ক্ষমতাধর কিংবা বিবাগী, কখনো প্রকৃতির সঙ্গে সখ্য করে পেলব ও প্রেমী। পুরুষের বন্দনা প্রকৃতি ভালোবেসে প্রাকৃতিক হওয়ারই নামান্তর। প্রকৃতি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর।

 

সোনিকা ইসলাম : হিরণ্যগর্ভ কানীনী

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা শেষে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন সোনিকা ইসলাম। তিনি মূলত গল্প ও কবিতা লিখেন। এছাড়া অনুবাদ ও সাহিত্য সমালোচনা করেন। এবারের বইমেলায় এসেছে লেখিকার প্রথম বই ‘হিরণ্যগর্ভ কানীনী’। ব্যক্তিগত স্মৃতি আর অনুভূতিকে তিনি বলার চেষ্টা করেছেন প্রথাগত কাঠামোর বাইরে গিয়ে। বইটি প্রকাশ করেছে মুক্তগদ্য প্রকাশনী। প্রচ্ছদ নির্ঝর নৈঃশব্দ্য। মূল্য ১১২ টাকা।

 

মন্দিরা এষ : ভোরগুলো অন্যরকম

সংবাদমাধ্যম কর্মী মন্দিরা এষের লেখালেখি তাঁর প্রগতি ধারণার সঙ্গে যুক্ত। ‘ভোরগুলো অন্যকরম’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ঘাসফুল প্রকাশনীর এই বইয়ের মূল্য ১৩৫ টাকা। লেখালেখির অনিয়মিত হওয়া তাঁর লেখা উন্মেষের সঙ্গে যুক্ত বলা যায়। সময়ের পরিক্রমায় তাঁর কবিতা মনন ও সৃজনের সমাহার ঘটেছে। স্মৃতিমেদুর থেকেও তার কবিতাগুলো বাস্তবতাকে বদলের তাগিদ তৈরি করে। সংবেদনশীলতা ও সংগ্রামের প্রতি বিশেষ লক্ষ্যণীয়। ইতিহাসের প্রতি তীর্যক দৃষ্টিও দেখা যায় তাঁর কোনো কোনো কবিতায়।

 

 

শাফিনূর শাফিন : নিঃসঙ্গম

ভারতের কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শাফিনূর শাফিন। তাছাড়া একটি ইংরেজি অনলাইনের কবিতা সম্পাকদের দায়িত্ব পালন করছেন। অর্ধযুগের অধিক সময়ের লেখা কবিতা নিয়ে বের হয়েছে তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘নিঃসঙ্গম’। বিভিন্ন লিটলম্যাগ, সাপ্তাহিক, সাময়িকি, অনলাইন ও দৈনিকের পাতায় প্রকাশিত হওয়া পাঠক নন্দিত কবিতা থেকেই এই সংকলন। গৌতম ঘোষের নামলিপিতে বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছেন বিধান সাহা। প্রকাশক চৈতন্য প্রকাশনী।

 

রহমান ফাহমিদা : নানা রঙের কষ্ট

প্রায় দুইদশকের সাহিত্যচর্চায় এবারের বই মেলায় এসেছে কবি রহমান ফাহমিদার গ্রন্থ ‘নানা রঙের কষ্ট’। এই বইতে মূল বিষয়বস্তু ‘কষ্ট’। এখানে ছোটবেলার হারিয়ে যাওয়ার দিনগুলো থেকে শুরু করে ক্ষোভ, ভালোবাসা, আপনজনের কাছ থেকে আঘাত পাওয়া এবং সমসাময়িক বিষয়বস্তুসহ পাওয়া না-পাওয়ার কষ্টগুলো ফুটে ওঠেছে। আসলে আপন কষ্টের আড়ালে কবি অন্যের কষ্টকে কোলে তুলে নিয়েছেন। কবিতার বাইরে বিভিন্ন ফিচার ও গল্প লেখার আগ্রহ আছে তার। প্রতিভা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী রাজিব রায়। মূল্য ১৩৫ টাকা।

 

হুমায়রা তাজরিয়ান পলি : পথের অঙ্ক

সাহিত্যের সঙ্গে সখ্য, প্রেম ও নিত্য ওঠাবসা কবি হুমায়রা তাজরিয়ান পলির। এবার বইমেলায় এসেছে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পথের অঙ্ক’। প্রকাশক চৈতন্য প্রকাশনী। নৈনাগরিক মানুষের প্রত্যাহিক যন্ত্রণা, অনুভূতি, ভাবনা, স্বপ্ন কথা নিয়ে তাঁর কবিতা। ইন্টারনেটে ঝুলে থেকে তুলে আনা মাপা ‘মেগাবাইট সুখ’ তিনি সাজিয়েছেন শব্দমালায়। কবিতা তাঁর কাছে বেঁচে থাকারই উদ্যাপন। তার বিশ্বাস কবিতা আত্মার সমৃদ্ধিকেই প্রসারিত করতে প্রয়াসি। সিলেটের স্থানীয় পত্রিকা, লিটল ম্যাগে প্রকাশের মাধ্যমে পাঠক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কবিতাই এবার মলাটবদ্ধ হলো। পাঁচ-ছয় বছর আগের অপ্রকাশিত কিছু কবিতাও যুক্ত হয়েছে এখানে।

 

সাবিনা আনোয়ার : নিভৃত স্বপ্ন এবং...

ইতিমধ্যেই কবিতাপাড়ায় সুনাম কুড়িয়েছেন সাবিনা আনোয়ার। কবিতার সঙ্গেই তাঁর সখ্য। সেন্টার ফর হায়ার অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শফিউদ্দিন আহমদের লেখা ভূমিকা নিয়ে এবারের বইমেলা বেরিয়েছে তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘নিভৃত স্বপ্ন এবং...’। ৬৪টি কবিতা দিয়ে সাজানো বইটি। প্রকাশ করছে চৈতন্য প্রকাশনী। খ্যাতিমান শিল্পী ধ্রুব এষের করা প্রচ্ছদে চার ফর্মার বইটির মূল্য ১৫০ টাকা।

 

জোহরা বেগম : আমি ছবি আঁকি

জোহরা বেগমের লেখালিখিতে আছে সমাজ ভাবনার প্রতিফলন। তাঁর পরিকল্পনা ও লেখায় প্রকাশ হয়েছে প্রথম বই ‘আমি ছবি আঁকি’। প্রকাশক অ্যাডর্ন পাবলিকেশন। লেখিকা দেখেছেন শিশুরা ছবি আঁকতে ও গল্প শুনতে আনন্দ পায়। তারা আগে ছবি দেখে ও পরে আঁকে। তারপর গল্প বোঝার চেষ্টা করে। বইয়ের প্রতি শিশুর আগ্রহ তৈরি করতে সহায়ক এই বই। বই প্রকাশনায় ও বিপণনে প্রায় দুই দশক ধরে অ্যাডর্ন পাবলিকেশনে শুরু থেকেই যুক্ত এই লেখিকা।

 

সপ্তবর্ণা পাল সোমা : দেখ মর্তবাসিনী চোখ

সরল আর শুভ প্রার্থনায় সমৃদ্ধ সপ্তবর্ণা পাল সোমার কবিতা। মেলার দ্বিতীয় দিনই স্টলে এসেছে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দেখ মর্তবাসিনী চোখ’। দেশ প্রেম-মানবমানবীর সম্পর্ক-সময়ের বিরেুদ্ধে কখনো বিদ্রোহ কখনো শুভ উপদেশ দিয়ে তার কবিতা। ময়মনসিংহবাসী এই কবি স্থানীয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে স্বক্রিয়ভাবে যুক্ত। বইটির প্রকাশক মুক্তদেশ প্রকাশন।

 

রিমঝিম আহমেদ : লিলিথের ডানা

কাব্যিকতা ও ছন্দের দ্যোতনায় প্রাঞ্জল কবিতা লিখেন রিমঝিম আহমেদ। কবিতার দীর্ঘযাত্রার মধ্যদিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন তাঁর কবিতা ও শব্দভাণ্ডার। এবার বই মেলায় বেরিয়েছে তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘লিলিথের ডানা’। সময় ও মানুষের অগ্রযাত্রা সচেতনতা নানানভাবে কবিতা এনেছেন তিনি। শাদা অমসৃণ কাগজের ওপর ছড়ার রঙের বিচ্ছুরণে প্রচ্ছদ এঁকেছেন নির্ঝর নৈঃশব্দ্য। চৈতন্য প্রকাশনী বের করেছে গ্রন্থটি।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/সাইফ/রহমান

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়