ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

হলুদ বাটো, মেহেদি বাটো...

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ৯ জানুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হলুদ বাটো, মেহেদি বাটো...

সখীদের নিয়ে গাছতলায় মেহেদি পাতা সংগ্রহের মধ্য দিয়ে শুরু হয় হলুদের অনুষ্ঠান। গায়ে হলুদ দেওয়ার মধ্য দিয়েই শুরু হয় বিয়ের প্রস্তুতি।

গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে ডালা-কুলা সাজিয়ে বর-কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার রীতি প্রচলিত আছে।

আর এই ডালা-কুলায় থাকে বর-কনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এছাড়া এতে বেশ কিছু উপকরণ থাকে। যেমন—ঝুড়ি, ছোট পালকি, তোয়ালে, প্রদীপ বাটি প্রভৃতি।

এই ডালা-কুলার পুরো প্যাকেজ নিউ মার্কেট ও এলিফ্যান্ট রোড ছাড়াও যেসব দোকানে বিয়ের উপকরণ বিক্রি হয়, সেসব দোকানে পাওয়া যাবে।

‘গায়ে হলুদ’ নামটির সঙ্গে মিল রেখে আবহমানকাল থেকে বিয়ের কনেরা হলুদ রঙের শাড়ি ব্যবহার করে আসছে গায়ে হলুদে। একসময় গায়ে হলুদের জন্য নির্ধারিত ছিল কেবলমাত্র হলুদ শাড়িই। বর্তমান সময়ে এ রকম ধারণার একটু পরিবর্তন হচ্ছে। এখন কেবল হলুদ নয়, বরং একরঙা লাল, কাঁচা মেহেদির রঙ, সবুজ, চলতে পারে। সাদাও বেশ ভালো লাগবে। ফেব্রিক হতে পারে মসলিন, সিল্ক, কটন, জামদানি। শাড়িতে খুব জমকালো কাজ না থাকলেই ভালো। এই অনুষ্ঠানে বরপক্ষের ও কনেপক্ষের আত্মীয়রাও একই ধরনের বা রঙের কাপড় পরলেই ভালো লাগে—উভয় পক্ষকে সহজেই আলাদা করা যায় এবং দেখতেও ভালো লাগে। অতীতে এই প্রচলনটাই ছিল। এ আয়োজনের মাধ্যমেই বিয়ের অনুষ্ঠানের শুরু, তাই যতটা সম্ভব সুন্দর ও রুচিসম্মতভাবে সাজা যায় ততই ভালো। এ অনুষ্ঠানে শাড়ি সাধারণত একপ্যাঁচেই পরতে দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রেই শাড়ি পরার পরে মাথায় দেওয়ার জন্য অসুবিধা হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে মাথার আলাদা ওড়না রাখা যেতে পারে হলুদের অনুষ্ঠানেও, তবে মাথায় কাপড় রাখতেই হবে নইলে অসম্পূর্ণ লাগে।

হলুদের সাজসজ্জা
হলুদের পোশাক বা সাজ কী হবে তার জন্য অভিজ্ঞ বিউটিশিয়ানের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। অনুষ্ঠানের আগে বর-কনে উভয়ই বিউটি এক্সপার্টের কাছে গিয়ে পেডিকিউর, মেনিকিউর, ফেসিয়াল ইত্যাদি সম্পর্কে পরামর্শ নিতে পারেন। ‘ফোটে যদি বিয়ের ফুল, সুন্দর করে বাঁধো চুল’- গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে শরীরের অন্যান্য অংশের মতো চুলেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চুল সাজানোর ক্ষেত্রে মেয়েরাই যত্নবান হয় বেশি। এ ক্ষেত্রে বেণি খোঁপা, ট্রিপল ফ্রেঞ্চ বেণি বা লম্বা বেণি করা যেতে পারে।

শাড়ি ট্রেন্ডি হলে সে ক্ষেত্রে ফিউশন সাজ আনা হয়। তবে ট্রাডিশনাল শাড়ির সঙ্গে ট্রেন্ডি সাজ ভালো আসে না। তাই কাপড়ের রঙ বেশি উজ্জ্বল হলে কনের হলুদ সাজে ফ্লাওয়ারি ব্যবহার বেশি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। এ সাজে কনেকে দেখতে অনেকটাই প্রাণবন্ত দেখায়। তাই সাজের সঙ্গে শাড়ির মিল রাখার বিষয়টি লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে কেউ গায়ে হলুদের সাজে কমলা, হলুদ বা ম্যাজেন্টা শাড়ি চাইলেই পরতে পারেন। গায়ে হলুদের এমন সাজে চোখ ও ঠোঁটের বিশেষ মেকআপের প্রয়োজন হয়। তবে সাজের ক্ষেত্রে দক্ষ ছোঁয়া পেলে শাড়িটি কনে সাজের বিশেষ পরিপূর্ণতা পায়।

এখন শীতের মৌসুম। শীতের আবহাওয়া শুষ্ক। তাই এ সময়ের হলুদ, বিয়ে বা বউভাতে কনে-সাজে ফাউন্ডেশনে পরিবর্তন এসেছে। সে ক্ষেত্রে টিনটেড ময়েশ্চারাইজারের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যায়। ফলে মেকআপের শুষ্ক ভাব অধিকাংশই কমে আসবে। তাই উজ্জ্বল পোশাকের সঙ্গে হালকা ব্লাশন চোখের মেকআপকে স্মোকি করে তুলবে। চোখে স্মোকি ভাব আনতে মোটা কাজল ও আইলাইনার দিয়ে চোখকে ফুটিয়ে তুলতে হবে। লিপস্টিক আর সেই সঙ্গে ফুলের মানানসই গয়না- এসব কিছুর দক্ষ ব্যবহারে কনে তার গায়ে হলুদের সাজে অপরূপ হয়ে উঠবে।



গায়ে হলুদে চুলের সাজে চুলগুলো সামনে থেকে হালকা ব্যাকব্রাশ করে ডান পাশে বেণি করে রাখতে হবে। চুল ছোট হলে বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের টারসেল কিনে এর ব্যবহার করা যেতে পারে। শাড়ির সঙ্গে কপালে থাকবে সুন্দর একটি টিপের ব্যবহার আর হাতে মেহেদি। সব মিলিয়ে গায়ে হলুদে কনের পুরো বাঙালিয়ানা রূপ সবার সামনে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। কনের হাতে মেহেদির আলপনা যোগ করে বাড়তি মাত্রা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ জানুয়ারি ২০১৬/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়