সারা বাংলা

বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ, সিসিক কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কোথাও পানি কমলেও আবার কোথাও বেড়েছে। সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জের বারোঠাকুরী অমলশীদ এলাকায় বরাক মোহনায় সুরমা-কুশিয়ারা উৎসস্থলে ত্রিগাঙের ডাইক ভেঙে গেছে। ডাইকটি ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকে উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

পড়ুন: বন্যায় বিপর্যস্ত হাওরবাসী, ২৮ বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ

সিলেট নগরীতে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে নতুন করে জকিগঞ্জের ত্রিগাঙের ডাইক ভাঙায় পানি আবারো বাড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ মে) রাত সাড়ে ১২টার দিকে জকিগঞ্জের ত্রিগাঙের ডাইকটি স্রোতের তোড়ে ভেঙে গেছে।  এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হয়।

বারোঠাকুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসীন মর্তুজা ডাইক ভাঙার খবর এলাকায় প্রচার করেন। ডাইক ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে বারোঠাকুরী, খাসিরচক, খাইরচক, বারোঘাট্টা, সোনাসার এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, ডাইক ভাঙার কারণে সুরমা-কুশিয়ারার তীরবর্তী জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ ফেঞ্চুগঞ্জ ও সিলেট শহরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে বন্যায় নগরীসহ পুরো জেলায় ব্যাহত হচ্ছে সড়ক যোগাযোগও। সিলেট সদরসহ সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির গত বৃহস্পতিবার রাতে কিছুটা উন্নতি হলেও সকাল থেকে আবারও পানি বেড়েছে। 

গোয়াইনঘাট উপজেলার বারহাল এলাকার বাসিন্দা মঞ্জুর আহমেদ বলেন, রাতে পানি কিছুটা কমেছিল, সকালে আবার বেড়েছে।  কানাইঘাট উপজেলা সদরের বাসিন্দা আশা উদ্দিন জানান, কিছুটা পানি কমলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়।

গরু-মহিষ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ওসব এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ। উপজেলার স্কুলগুলোকে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, সিলেটের প্রধান নদ নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

এদিকে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন বৃহস্পতিবার রাতে নগর ভবনে সভা করে বন্যার্তদের তালিকা করে তাদের সহায়তার উদ্যাগ নিয়েছে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, পরবর্তী ঘোষণার আগ পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিসিকের সব কর্মকর্তা কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থানকারী নাগরিকদের খাবার সংকট, বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে সিসিকের ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক দল কাজ করছে। 

জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বন্যার্তদের বাড়ি ও আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশাসনের সব কর্মীরা মাঠে রয়েছেন।