সারা বাংলা

বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ: লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন ভুক্তভোগী নারী

কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির পর ধর্ষণের ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রাইজিংবিডির প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সেই রাতে কী ঘটেছিল, বিস্তারিত জানান তিনি।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘ছয় ডাকাত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বাসের আরও এক নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।’

তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসটি সিরাজগঞ্জ পৌঁছালে রাতের খাবারের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। বিরতি শেষে যাত্রা শুরুর পাঁচ মিনিট পরেই ২০-২২ বছর বয়সী তিনটি ছেলে ওঠে।

তারা জানান, সামনের তাদের আরও লোক আছে। কিছু দূর যাওয়ার পর আরও চারজন ওঠে। তাদের মধ্যে থেকে একজন বলেন, সামনে আমাদের আরও লোক আছে। এর কিছুক্ষণ পরে আরও ছয়জন ওঠে। এভাবে ১৩ জন ওঠে। ওরা সবাই বাসের পেছনের সিটে বসে।

বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পেছন থেকে তিনজন ওঠে এসে সামনে নামার কথা বলে চালকের পাশে বসে। একপর্যায়ে চালককে উঠিয়ে তাদের মধ্যে থেকে একজন গাড়ি চালানো শুরু করে। তারা বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে পেছনে নিয়ে আসে। প্রথমে ছেলেদের, এরপর মেয়েদের হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলা হয়। পরে মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা লুট করে নেয় ডাকতরা। এ সময় অনেক যাত্রীকে মারধরও করা হয়।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘ডাকাতি শেষ হওয়ার পর ওই দলের ছয়জন আমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় আমার হাত ও চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। পরে গাড়ির গতি কমিয়ে ডাকাতরা বিভিন্ন জায়গায় নামতে থাকে। এক সময় ডাকাত দলের চালক গাড়ির জানালা দিয়ে নেমে যায়। এ সময় বাসটি খাদে পড়ে যায়। প্রথমে স্থানীয়রা, পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আমাদের উদ্ধার করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাস থেকে বের হওয়ার পর স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের কাছে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা খুলে বলি। তারা আমাকে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বুধবার রাতে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।’

ধর্ষণের শিকার নারীর জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেহেনা পারভিন বলেন, ‘তিন সদস্যের মেডিকেল টিম ওই নারীর পরীক্ষা করেছে। কিছু সাইন পজিটিভ আছে, সাইন অব স্ট্রাগল রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তার সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।’

আরও পড়ুন: বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ: ভয়াবহতার বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা