বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় শ্বশুর ও পুত্রবধূ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা ডাকাত চক্রের সদস্য।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান।
আরো পড়ুন: বগুড়ায় শ্বশুর ও পুত্রবধূকে ফাঁস দিয়ে হত্যা
তিনি জানান, শ্বশুর ও পুত্রবধূকে হত্যা করে বাড়ি থেকে নগদ ৬ লাখ টাকা এবং গহনা লুট করে নিয়ে যায় গ্রেপ্তারকৃতরা। আফতাব উদ্দিনের পুরানো কর্মচারী আব্দুল মান্নান এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। কাজ থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষোভ থেকে তিনি এই হত্যাকাণ্ড এবং ডাকাতির ছক আঁকেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- দুপচাঁচিয়ার বেরুঞ্জ গ্রামের আব্দুল হাকিম (৩৪), লক্ষ্মীমণ্ডপ গ্রামের আব্দুল মান্নান (৫০) ও আদমদীঘির বাসিকোড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪১)। তাদের মধ্যে হাকিম ডাকাতদের সরদার। তার বিরুদ্ধে সাতটি ডাকাতি মামলা আছে।
গত ৮ জুলাই গভীর রাতে দুপচাঁচিয়ার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমণ্ডপ গ্রামের বাড়িতে প্রবেশ করে আফতাব উদ্দিন (৬৫) ও তার পুত্রবধূ রিভা খাতুনকে (২৭) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পরদিন সকালে নিহতের মেয়ে মালিহা তার মা রিভাকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখে চিৎকার করে। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আফতাব উদ্দিনের লাশও দেখতে পান। পরে পুলিশ লাশ দুইটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে জানা গেছে, তারা ৮ জুলাই গভীর রাতে আফতাব উদ্দিনকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে লাঠি দিয়ে মারধর করে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে পাশের ঘরে ঢুকে তার পুত্রবধূ রিভা খাতুনকে (২৭) একই কায়দায় হত্যা করে। এ সময় ঘরে থাকা শিশু রুকাইয়া তাসনিম মালিহা (৫) বেঁচে যায়। ডাকাতেরা তাকে চোখ বন্ধ করে রাখার হুমকি দেয়। এরপর ঘর থেকে স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল ও ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে পালিয়ে যায় তারা।”
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, “আফতাব উদ্দিনের পুরোনো কর্মচারী আব্দুল মান্নান এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি আগে আফতাবের সেচপাম্পে কাজ করতেন। অসামাজিক কাজের কারণে তাকে বাদ দেওয়া হলে ক্ষোভ থেকে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ও ডাকাতির ছক আকেন।”
তিনি জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে হাকিম ও মান্নানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কুড়িগ্রামের চর জামাল গ্রামে অভিযান চালিয়ে রফিকুলকে ধরা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে সোনার দুল, চুড়ি, আংটি, দুটি মোবাইল ফোন, একটি ঘড়ি ও ৭ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি পলাতকদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।