উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

সেই আলিফের হাতে বর্ষসেরা উদ্যোক্তার পদক 

দেশসেরা উদ্যোক্তার খেতাব অর্জনের অধিকারী হলেন ২০ বছর বয়সী আলিফ। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) ‘বর্ষসেরা উদ্যোক্তা-২০২০’ পদক বিজয়ী হলেন তিনি। দেশের মানুষের কাছে আবারও তিনি পরিচিত হলেন একটি নতুন খেতাব নিয়ে।

বর্তমান তরুণ প্রজন্মের একজন গর্ব ইমাম হোসেন আলিফ। তিনি বাংলাদেশের সর্ব কনিষ্ঠ অ্যাওয়ার্ড জয়ী উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন। একাধারে তিনি তরুণ করপোরেট ট্রেইনার, মোটিভেশনাল স্পিকার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মেন্টর, যার স্বপ্ন পুরোটাই তার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশকে নিয়েই। 

ছোটবেলা থেকেই একজন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন আলিফ। তার প্রতিটি উদ্যোগের পেছনেই ছিল দেশপ্রেম। নিজের জীবনের মূলমন্ত্রই বানিয়ে নিলেন দেশসেবাকে। অর্থ উপার্জন হোক বা না হোক, দেশের সমস্যার সমাধান তার চাই।

এরই ধারাবাহিকতায় করোনা পরিস্থিতিতে যখন পুরো দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে অচল হয়ে পড়ে ঠিক তখনই মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে পৌঁছে দেন মাস্ক। এছাড়াও তিনি প্রায় ৩০টিরও অধিক হাসপাতালে সরবরাহ করেছেন কোভিড-১৯ মেডিকেল ইকুইপমেন্ট। প্রায় প্রত্যেক সপ্তাহেই আলিফ নতুন ইকুইপমেন্ট আমদানি করতেন ও সরবরাহ করতেন। 

এছাড়াও করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই আলিফ নানা ইনোভেটিভ সেশন ক্লাস নিয়েছেন দেশের তরুণদের জন্য ও এখনো নানা প্রতিষ্ঠানে সেশন ক্লাস নিচ্ছেন তিনি। 

আলিফ বলেন, ‘‘আমি চাই সবাই সবার কর্মজীবনে কিছু করুক, কেউ বেকার না থাকুক। এজন্য গ্ৰামের নারীদের জন্যও স্পেশাল উদ্যোক্তা বিষয়ক সেশন নিয়েছি ও এখনো ‘রুরাল ওমেন ই-কমার্স স্কুল’-এর নিয়মিত মেন্টরিং করছি। তরুণদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়, শিক্ষণীয় প্রতিযোগিতা ও ইভেন্ট অর্গানাইজ করছি, যা তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় অনেক সহযোগিতা করবে।’’

সম্প্রতি আলিফ তার অসাধারণ সব উদ্যোগের জন্য অর্জন করেন ‘বর্ষসেরা উদ্যোক্তা-২০২০’ অ্যাওয়ার্ড। তানরাত (একটি আয়োজক সংগঠন) আয়োজিত ‘জাতীয় ইয়ুথ বেস্ট লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ প্রোগ্ৰামে দেশের ৬৪ জেলা থেকে প্রায় ১২ শতাধিক উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। যেখানে অংশগ্রহণ করেন ২০ বছর বয়সী আলিফ। তাদের বাছাই পর্ব শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকেই। আলিফ তাদের প্রত্যেকটি ধাপ পার করেন নিজের অতুলনীয় দক্ষতা, সফট স্কিলস ও অভাবনীয় ইনোভেশন দিয়ে। সবশেষে বিজয়ের মাসে বিজয় দিবসে ‘বর্ষসেরা উদ্যোক্তা-২০২০’ পদক পেলেন তরুণ আলিফ।

আলিফ তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, ‘যখন দেখবো আমার কাজ ও উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের চলমান সমস্যা কমে আসছে, তখনই মনে করবো একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আমি সার্থক। কারণ আমার প্রত্যেকটি উদ্যোগের পেছনেই মূল লক্ষ্য দেশপ্রেম। তরুণদের যদি উদ্যোক্তা হতে হয়, তবে কেউ টাকার পেছনে না ছুটে যেন বিভিন্ন সমস্যার সঠিক সমাধান খোঁজেন ও সেগুলো নিয়ে কাজ করেন। এটাই আমার কাছে উদ্যোক্তা হওয়ার মূলমন্ত্র।’ 

আলিফ চান, সবাই নিজে থেকে কিছু করুক। তিনি বাংলার নারী সমাজকে যেমন একদিকে স্বাবলম্বী করতে চান, ঠিক তেমনি চান বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী যেন নিজ জীবনে সম্মানজনক একটি পর্যায়ে পৌঁছে যান। কোনো একটি মানুষও যেন বেকার বসে না থাকেন। এভাবে সবাই এগিয়ে গেলে একসঙ্গে পুরোদেশ এগিয়ে যাবে। 

জানতে পড়ুন...

মাস্কের ব্যবসা করে লাখপতি ২০ বছর বয়সী আলিফ 

লেখক: শিক্ষার্থী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়। 

চট্টগ্রাম/মাহি