ঢাকা     শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২০ ১৪৩১

মাস্কের ব্যবসা করে লাখপতি ২০ বছর বয়সী আলিফ  

ইশতিয়াক হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৬, ২৯ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১৯:৩৮, ২৯ আগস্ট ২০২০
মাস্কের ব্যবসা করে লাখপতি ২০ বছর বয়সী আলিফ  

ইমাম হোসেন আলিফ ছোটবেলা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতো। উদ্যোক্তা হওয়ার ঝোঁক আসে মাথায় স্কুলের গণ্ডিতে থাকতেই। দেশের জন্য ভালো কিছু করার ভাবনা ছিল সবসময় তার উদ্যোগের পেছনে। 

করোনার সময়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণ করে আলিফ। তার মাথায় আসে ভিন্ন পরিকল্পনা। চিন্তা করলেন কীভাবে মাস্ক স্বল্পমূল্যে মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। শুরু করলেন মাস্ক উৎপাদন নিয়ে পড়াশুনা আর গবেষণা। পরিকল্পনা থেকেই শুরু হয় পরবর্তী পদক্ষেপ। খোঁজ পান একজন অভিজ্ঞ সহকারীর। 

ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ তারিখে নিজের জমানো টাকায় মাস্ক তৈরির জন্য কেনেন একটা মেশিন। সহকর্মীর সহায়তায় ২০ টাকা মূল্যে বিক্রি করেন মাস্ক। অনলাইনে শুরু করেন প্রচারণা। স্বল্প দামে মাস্ক বিক্রি করবেন তিনি। ভালো জিনিসের কদর রয়েছে বলে আলিফ জানতেন। তেমনি প্রথম দিনেই সারা বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার পিস অর্ডার আসে তার কাছে৷ পণ্য ভালো হওয়াতে প্রতিদিনই বাড়তে থাকে চাহিদা।

মাস্কের পাশাপাশি অধিক সুরক্ষার প্রয়োজনে কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার জন্য নানা সরঞ্জাম আমদানি করতে শুরু করেন চায়না থেকে আলিফ। 

তিনি জানান, প্রথমে বিনিয়োগ করার জন্য একটা ভয় কাজ করেছিল, তবে কোন চিন্তা-ভাবনা না করে একটা ঝুঁকি নিয়ে ফেলেন। এর আগে আলিফ নানা প্রতিযোগিতা থেকে বিজয়ী হয়ে প্রায় এক লাখ টাকা জমান৷ সেখান থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন এই ব্যবসায়৷ প্রথমে চায়না থেকে চল্লিশ হাজার টাকার চায়না সার্টিফাইড কেএন-৯৫ মাস্ক আনেন আলিফ৷ অবাক করা ব্যাপার ২৪ ঘণ্টার আগেই বিক্রি হয়ে যায় সবগুলো মাস্ক। সেখান থেকেই সাহস খুঁজে পান আলিফ। 

তিনি আরও জানান, পরবর্তী সময়ে বাসা থেকে এক লাখ টাকা এবং নিজের পুরস্কারের পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে পণ্য আনতে শুরু করেন। দ্বিতীয় ধাপে পণ্য আনার পর ঘটে আবার অবাক কাণ্ড। যে টাকা বিনিয়োগ করেন, সে টাকা তিন দিনের মধ্যে হাতে চলে আসে। এভাবে প্রতি সপ্তাহে নানা ধরনের সুরক্ষা সরঞ্জাম আনতে থাকেন। থার্মোমিটার, পালস অক্সিমিটার, ফোগার মেশিন, অটোমেটিক ডিসপেনসার, নেবুলাইজার ইত্যাদি। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০টিরও অধিক হাসপাতালে কোভিড-১৯ এর সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছেন আলিফ। প্রায় দশ লাখ টাকা উপার্জন করেন করোনার সময়ে এই তরুণ উদ্যোক্তা। 

‘পরিবার থেকে সবসময় সহযোগিতা ছিল, শুরুতে দেশের জন্য নিজের ঝুঁকি নিয়েই মাঠে নেমেছিলাম। বাবা-মা যখন বুঝতে পারেন ছেলে ভালো কিছু করছে, তখন তারা পাশে ছিল সবসময়। আমি কাজ করার সময় সবসময়ই সুরক্ষার দিকে নজর দিয়েছি’, বলেন তিনি। 

আলিফ রাজধানীর একটি স্কুল থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করেছেন। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে পড়ালেখা করতে যাবেন বলে পরিকল্পনা করছেন।   

লেখক: শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ (দ্বিতীয় বর্ষ), প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি।

চট্টগ্রাম/সীমান্ত/মাহি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়