জাতীয়

ঈদযাত্রা: তীব্র যানজট, ভোগান্তি চরমে

ঈদুল আজহার বাকি একদিন। ঢাকা ছাড়ছে মানুষ।  আজ (১৯ জুলাই) সোমবার ঈদের একদিন আগে ঢাকার প্রধান সড়কগুলোয় প্রচণ্ড যানজট দেখা গেছে। বিমানবন্দর সড়কে গাড়ির চাকা ঘুরছে না।   দীর্ঘ সময় যানজটে আটকা পড়ে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ বাড়িফেরা মানুষ।

আরও পড়ুন: যানবাহনের চাপে মহাসড়কে ২০ কিলোমিটারে ধীরগতি

এদিকে, রাজধানীর বনানী হয়ে বিমানবন্দর এলাকা দিয়ে যেসব গাড়ি টঙ্গী ও গাজীপুরে প্রবেশ করছে সেসব গাড়ির যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ।  এ সড়কে সকাল ৮টা থেকে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় গাড়িতে বসে কাটাতে হচ্ছে যাত্রীদের।

ঢাকা ছেড়ে যাওয়া অতিরিক্ত গাড়ির চাপে এ যানজট দেখা দিয়েছে।  অন্যদিকে বিমানবন্দরের এ যানজটের প্রভাব পড়েছে কুড়িল-বিশ্বরোড ও প্রগতি সরণির রাস্তায়ও। সকাল থেকে প্রগতি সরণি এলাকায় হালকা যানজট সৃষ্টি হয়। যা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র যানজটে রূপ নেয়।

সকাল সাড়ে ৯টায় ফ্লাইট। সারারাত বাসার কেয়ারটেকারের কথাটা মাথায় ঘুরছিল, ‘স্যার, এয়ারপোর্ট রোডের ব্যাপার। গরু-টরু ঢুকবো। ভোর ৬টায় বাইর হইলে সবচেয়ে ভালো।  আমি সময়টা একটু পেছালাম, তবুও অনেক আগেই পৌঁছে যাওয়ার কথা।  ঠিক সকাল ৭টায় বাসা থেকে বের হলাম।  ৭টা ২২মিনিটে কুড়িল ফ্লাইওভারেও উঠে গেলাম। সেই থেকে এখন পর্যন্ত নামতেই পারলাম না। সেদিন গাজীপুরের জ্যাম মহাখালী পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছিল বলে শুনেছিলাম। আজ এতক্ষণে হয়ত তা সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত চলে গেছে। এভাবে অন্তহীন অপেক্ষায় এক জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার মানসিক দুর্ভোগই কাতর করছে সবচেয়ে বেশি। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমার মায়েদের কোমল সান্নিধ্যে হারিয়ে যাওয়ার রোমাঞ্চের জায়গা নিয়ে ফেলেছে ওদের আরো অনেকক্ষণ কাছে না পাওয়ার দুঃখ।  আমার মায়েরা এখনো কত দূরে! কাকে দোষারোপ করবো? ভাগ্যকে, রাষ্ট্রকে নাকি নিজেকে?’

সোমবার (১৯ জুলাই) এই লেখা ফেসবুকে লিখেছেন কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি (স্পোর্টস) মাসুদ পারভেজ।

জানা যায়, বনানী ফ্লাইওভার থেকে উত্তরা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের কারণে সকাল থেকেই ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনেক বাস বনানী ফ্লাইওভার পার হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় আটকে আছে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এ যানজট শুধুমাত্র ঢাকা থেকে বের হওয়ার সড়কে দেখা গেছে। বিপরীত পাশের রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সিলেটগামী এনা পরিবহনের বাসের চালক মো. আকরাম বলেন, ঈদযাত্রায় এমন যানজট প্রতি বছরই হয়। তবে এবার একটু বেশি।  সড়কের বিভিন্ন অংশ ভাঙা। কিছু অংশে সড়ক সরু হয়ে গেছে। তাই স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করতে পারে না।  এ কারণেই এ সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিচ্ছে।  যা আশপাশের বিভিন্ন সড়কেও প্রভাব ফেলছে।

এদিকে, প্রগতি সরণি সড়কে যানজটে আটকে থাকা বাসের যাত্রী ইনাম আহমেদ বলেন, গত দুইদিন ধরেই বিমানবন্দর সড়কের যানজট। এ যানজটের প্রভাব পড়ছে প্রগতি সরণি সড়কেও। এখন কিন্তু ঢাকায় মানুষ অনেক কম।  রাস্তাও প্রায় ফাঁকা।  তবে ঈদযাত্রার কারণে বিপুল পরিমাণ গাড়ি ঢাকা ছাড়ছে।  এজন্য ওই সড়কে যানজটের তীব্রতা অনেক বেশি।  আগামীকাল পর্যন্ত এ অবস্থা থাকবে।

এ বিষয়ে ডিএমপি ট্রাফিকের উত্তরা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (উত্তরা পশ্চিম জোন) সাইফুল মালিক বলেন, ঈদযাত্রা শেষ পর্যায়ে আছে। মানুষজন এখন দলবেঁধে রাজধানী ছেড়ে গ্রামে ফিরছে। এ সময় সামান্য যানজট হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আজকে শুধু ঈদযাত্রার গাড়ির চাপে বিমানবন্দর থেকে উত্তরা পার হয়ে টঙ্গী এলাকা পর্যন্ত যানজট দেখা দিয়েছে।