ঢাকা     রোববার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

যানবাহনের চাপে মহাসড়কে ২০ কিলোমিটারে ধীরগতি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৮, ১৯ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৪:১৬, ১৯ জুলাই ২০২১
যানবাহনের চাপে মহাসড়কে ২০ কিলোমিটারে ধীরগতি

ঈদুল আজহায় বাড়ি ফিরছে মানুষ। মহাসড়কে গণপরিবহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কসহ সিরাজগঞ্জের সব রুটে কচ্ছপ গতিতে চলছে যানবাহন।

সোমবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে যানবাহনের চাপ বাড়ায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের মুলিবাড়ী থেকে হাটিকুরুলল গোলচত্বর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়েই গাড়ির ধীরগতি। মাঝে মধ্যেই যানজটে রূপ নিচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ঈদে ঘরে ফেরা ২১ জেলার মানুষ।

অপরদিকে, হাটিকুমরুল-বনপাড়া রুটের গোঁজা ব্রিজ পর্যন্ত ও বগুড়া রুটের চান্দাইকোনা পর্যন্ত মহাসড়কেও ধীরগতিতে চলছে যানবাহন।

এ সময় কথা হয় মহাসড়কে থাকা বাসচালক মিলন, নাবিল পরিবহনের চালক আলিম, হানিফ পরিবহনের সবুজ, সুপার ভাইজার আলহাজ, সামিউল, ট্রাক চালক শুক্কর আলী ও বক্কার হোসেনসহ অনেকের সঙ্গে।

তারা জানান, মহাসড়কের নলকা ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে ওঠার আগেই গাড়ির গতি কমিয়ে দিতে হয় এবং সেতুর ওপর ২০-২৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালালে সেতুতে কম্পন সৃষ্টি হয়।

চালকরা জানান, গত ১০/১২ বছর ধরে এ সেতুর কারণে শত শত বার যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে।  শুধু ঈদ নয়, যে কোনো সময় অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকলেই এখানে যানজট হয়।

ঢাকা থেকে আসা পাবনা এক্সপ্রেসের যাত্রী সেরাজুল ইসলাম, পপি খাতুন, ফারজানা ইসলাম ও পলি খাতুন জানান, প্রতি বছর দু’টি ঈদে তারা বাড়ি আসেন।

বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর থেকেই যানজটের কবলে পড়তে হয়।  দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ নলকা সেতুটির কারণে যানজটের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়।  দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের।

নলকা এলাকার বাসিন্দা মমিন হোসেন, পাঁচলিয়ার আরাফাত রহমানসহ অনেকেই জানালেন, এ সেতুটি স্থানীয়দের কাছেও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা বছরই সেতুর উভয় পাশে গাড়ির চাপ ও মাঝে মধ্যে যানজট থাকে।  তার থেকেও বড় ভয়, সেতুটি যেভাবে কাঁপে, কখন ভেঙে পড়ে যায়, এলাকাবাসী সব সময়ই এমন আতঙ্কে থাকেন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া আঞ্চলিক সড়কের ফুলজোড় নদীর ওপর এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর ১০ বছর পর ১৯৯৮ সালে আঞ্চলিক এ সড়কটি মহাসড়কে পরিণত হলেও এ সেতুটির কোনো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা হয়নি। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন করার পর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যানবাহন চলাচল করছে এ
সেতুটি দিয়েই। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে যে কোনো যানবাহন এ সেতুটির ওপর উঠলেই সেতু কাঁপতে থাকে। যে কারণে এখানে এসে গাড়ির গতি কমিয়ে সেতুটিতে উঠতে হয়। মাঝে মধ্যেই সেতুর সংস্কার করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু সেটা বেশি দিন স্থায়ী হয় না। গত প্রায় ২০ দিন ধরে সেতুর ওপর কার্পেটিংয়ের কাজ করা হলেও এখনো স্থানে স্থানে রয়েছে খানা-খন্দ।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আজ সকাল থেকেই ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। কখনো যানজট দেখা দিলেও পুলিশি হস্তক্ষেপে দ্রুতই নিরসন করা হচ্ছে।

হাটিকুরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী বলেন, হাটিকুরুমল-বনপাড়া মহাসড়কে ধীরগতি রয়েছে। পাবনা মহাসড়কে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক থাকলেও বগুড়া মহাসড়কের চান্দাইকোনা পর্যন্ত ধীরগতি রয়েছে। নলকার ঝুঁঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে কখনো কখনো যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

অদিত্য রাসেল/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়