জাতীয়

সেই লঞ্চ ‘অভিযান-১০’ এখন এমন!

একনজরের দেখায় মনে হতে পারে এটি একটি সংস্কার হতে যাওয়া লঞ্চ। আবার মনে হবে, বহুদিন আগের পরিত্যক্ত কোন নৌ যান। কিন্তু না, বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) মধ্যরাতেও লঞ্চটির চাকচিক্যের কোনও অভাব ছিলো। ভর্তি ছিলো যাত্রীতে। প্রত্যেকের ভাবনাতে ছিলো, এই কিছুক্ষণ পরই গন্তব্য। বাড়ি ফিরবো। বাবা-মা-ভাই-বোন-ছেলে-মেয়ে; অনেকেই অনেকের জন্য অপেক্ষা। না, সেই অপেক্ষা শেষ হলো না। বেশিরভাগেরই আপন গৃহে ফেরা হলো না।

ঢাকা থেকে পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৩৬ জন মারা গেছেন। আর আহত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৭০ জনের বেশি। 

যাত্রীহীন লঞ্চটি এখন ঠাঁই দাঁড়িয়ে। আশপাশের বাতাসে ছড়াচ্ছে লাশ পোড়া গন্ধ। অনেকেই আপনজনের খোঁজে ছুটছেন লাশের স্তূপ থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত। কেউ সুগন্ধা নদী তীরে লঞ্চে খুঁজে বেড়াচ্ছেন স্বজনদের। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে এমনটাই দাবি স্বজনদের। এ দৃশ্য দেখে ঘটনাস্থলে ভিড় করা সাধারণ মানুষের চোখেও ঝরছে পানি। 

পোড়া দেহ স্বজনরা দেখতে চাইলে ব্যাগ খুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দেখাচ্ছেন। অনেকেই পোড়া গন্ধ সহ্য করেই খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রিয় মানুষটিকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বে থাকা বাহিনীর সদস্যরা।

জানা গেছে, যাত্রীদের অনেকেই আগুনের আগে বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছেন। দাউ দাউ আগুনে বাঁচার আকুতি নিয়ে শত শত মানুষ লাফিয়ে পড়ে সুগন্ধা নদীর দিয়াকুল নামক স্থানে। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে ঝাঁপ দিলেও হারিয়ে যায় চিরতরে। কেউ হারিয়েছেন সন্তান, কেউ বাবা-মা।