ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন গোমস্তাপুরের আলোচিত রাজনৈতিক নেতা খুরশেদ আলম বাচ্চু। গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) তিনি দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালার বাসিন্দা খুরশেদ আলম বাচ্চু। তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয় বিএনপির হাত ধরে। দলটির সমর্থনে তিনি গোমস্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দলীয় শৃঙ্খলাবহির্ভূত কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে একসময় তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আরো পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি আসনে জামানত হারালেন ৫ প্রার্থী
এরপর খুরশেদ আলম বাচ্চু যোগ দেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগে। তিনি গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ বাগিয়ে নেন। পরবর্তীতে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, খুরশেদ আলম বাচ্চু একাদশ জাতীয় সংসদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে তিনি মাথাল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও পরাজিত হন। তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এ আসনে নৌকা প্রতীকে সে সময় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুহা. জিয়াউর রহমান। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) থেকে বিএনপির সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের বিষয়ে জানতে খুরশেদ আলমের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এসএমএস করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
খুরশেদ আলম বাচ্চুর এনসিপি থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আহমদ বলেন, “খুরশেদ আলম বাচ্চু একসময় আমাদের দলে ছিলেন। সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন তিনি এনসিপি থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।”
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এনসিপির সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রাথমিক সদস্য পদ নিয়েই খুরশেদ আলম বাচ্চু মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আমি জানতাম, উনি ছাত্রদল করেছেন। বিএনপি করেছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন কি-না আমার জানা নেই।”
এনসিপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন বলেন, “অন্য দলের রাজনৈতিক নেতা এনসিপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতেই পারেন। ফরম সংগ্রহের জন্য আমরা তো কাউকে বাধা দেইনি। সবার জন্য এটা উন্মুক্ত করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে মনোনয়ন দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “মনোনয়ন ফরম কেনার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো শর্ত ছিল না। যাচাই-বাছাই করে দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।”