দেহঘড়ি

সাইনাস হেডেক থেকে মুক্তি পেতে ৯ ঘরোয়া চিকিৎসা

এস এম গল্প ইকবাল : বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা রয়েছে, যেমন- মাইগ্রেন, পানিশূন্যতা জনিত মাথাব্যথা, অ্যালকোহল পান জনিত মাথাব্যথা, সাইনাস হেডেক, টেনশন হেডেক ও অন্যান্য। * কি কারণে সাইনাস হেডেক হয়? শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির প্রদাহ দ্বারা সাইনাস ইনফেকশন হয়। সাইনাস ইনফেকশনের একটি অপ্রীতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো, কপালে সাইনাস হেডেক বা মাথাব্যথা এবং মুখমণ্ডলের অন্যান্য অংশে যন্ত্রণাদায়ক চাপ। সাইনাস হেডেক থেকে মুক্তি পেতে এখানে আলোচিত এক বা একাধিক ঘরোয়া চিকিৎসা চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আদা আদাতে রয়েছে প্রাকৃতিক প্রদাহবিরোধী উপাদান। এককাপ গরম আদা চা আপনার সাইনাস হেডেক উপশম করতে পারে এবং সাইনাস ইনফেকশন জনিত মুখমণ্ডলীয় চাপ হ্রাস করতে পারে। এটি সাইনাসাইটিসের উপসর্গ (যেমন- গলাব্যথা) থেকেও মুক্তি দিতে পারে, বিশেষ করে যদি এতে মধু মেশান। আদার ঝাঁঝালো স্বাদ সাইনাসে চাপ জনিত ব্যথাও হ্রাস করতে পারে, কারণ এটি নাকের ড্রেনেজ বৃদ্ধি করে অর্থাৎ নাকে জমে থাকা শ্লেষ্মা দূর করে। নেটি পট নেটি পট ব্যবহার করে আপনার সাইনাস ক্যাভিটি বা গহ্বর পরিষ্কারকরণ প্রথম প্রথম কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু ধৈর্য্য ধরে এর চর্চা হতে পারে সাইনাসে চাপ জনিত ব্যথা হ্রাসের চমৎকার উপায়। পানি ও লবণ ব্যবহার করে নাক পরিষ্কার করলে শ্লেষ্মা আরো বেশি কার্যকরভাবে ড্রেইন হতে পারে। স্যালাইন স্প্রে যদি আপনার কাছে নেটি পটের ব্যবহার খুব কঠিন মনে হয়, তাহলে সাধারণ স্যালাইন স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। স্যালাইন স্প্রে আপনাকে সাইনাস হেডেক থেকে মুক্তি দিতে প্রদাহ হ্রাস করে এবং নাক পরিষ্কার করে। স্যালাইন সল্যূশন শ্লেষ্মা ও অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থকে নাকের বাইরে নিয়ে আসতে নাসারন্ধ্রের ছোট লোম চিলিয়াকে সাহায্য করে। গরম সেঁক সাইনাসে চাপ জনিত ব্যথা হ্রাসের আরেকটি উপায় হলো মুখমণ্ডলে গরম সেঁক দেওয়া। এটি নাসিকাপথকে উষ্ণ করবে এবং যেকোনো প্রতিবন্ধকতা ভেঙে ফেলবে। আপনি গরম সেঁকের পরিবর্তে ঠান্ডা সেঁকও দিতে পারেন, কারণ এটিও সাইনাসে চাপ জনিত ব্যথা উপশম করতে সহায়ক। বাষ্পায়িত গোসল বাষ্পায়িত গোসল বা স্টিমি শাওয়ারে দাঁড়িয়ে থাকা এবং গভীরভাবে শ্বাস নেওয়াও নাসিকাপথ খুলতে ও ড্রেনেজ করতে সাহায্য করতে পারে, এর ফলে আপনি সাইনাস হেডেক থেকে মুক্তি পাবেন। স্যালাইন সল্যূশনের মতো বাষ্প অনুরূপ কাজ করে- তাপ সাইনাস গহ্বরকে প্রসারিত ও প্রশান্ত করে। আপনার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য এই ঘরোয়া চিকিৎসাটি বিশেষভাবে সহায়ক, কারণ যে কারণে আপনার সাইনাস হেডেক হয় তা আপনার নাসিকাপথেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। কিন্তু বাষ্পতে বেশিক্ষণ থাকবেন না, কারণে এতে মাথা ঘোরাতে পারে অথবা মস্তিষ্কীয় ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে এবং এটি সাইনাস হেডেক দূরীকরণের যথার্থ উপায় নয়। হিউমিডিফাইয়ার কি কারণে রাতে সাইনাস হেডেক হয়? শুষ্ক বায়ু নাসিকাপথকে উত্যক্ত করতে পারে এবং এটি হতে পারে অধিক শ্লেষ্মা মজুদের কারণ। ঘুমের সময় এই জ্বালাতন এড়াতে এবং সাইনাসাইটিসের উপসর্গ উপশম করতে আপনার বেডরুমে শীতল হিউমিডিফাইয়ার চালু করুন। এটি আপনার নাক ডাকাও কমাতে পারে, যার ফলে আপনার সঙ্গী ভালোমতো ঘুমাতে পারবে। ঝাঁঝালো খাবার ঝাঁঝালে খাবার খাওয়ার পর কি আপনার নাক থেকে তরল ঝরে? তাহলে সাইনাস হেডেকের সময় এটিকে আপনার সুবিধা হিসেবে ব্যবহার করুন। ঝাঁঝালো খাবার খেলে নাকের ড্রেনেজ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে সাইনাসে চাপ জনিত ব্যথা উপশম হবে। বিশেষ করে এক্ষেত্রে ঝাল মরিচ বেশি কার্যকর- কারণ ঝাল মরিচে ক্যাপসাইসিন থাকে যাকে প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দারুচিনি দারুচিনি হলো আরেকটি খাবার যেখানে প্রদাহবিরোধী উপাদান রয়েছে, যা সাইনাস হেডেক উপশমে সহায়ক। সাইনাসাইটিসের উপসর্গ, মাথাব্যথা, পোস্ট-ন্যাজাল ড্রিপ বা কফ সিন্ড্রোম জনিত গলাব্যথা উপশম করতে দারুচিনি ও মধুর মিশ্রণ খাওয়া যেতে পারে। বিকল্পভাবে, যদি আপনার দারুচিনির স্বাদ ভালো না লাগে, তাহলে পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং সরাসরি কপালে প্রয়োগ করুন। অনেকে দাবি করেছেন যে, তারা দারুচিনির পেস্ট ব্যবহারে কপালের সাইনাস হেডেক থেকে তৎক্ষণাৎ মুক্তি পেয়েছেন। ওটিসি ওষুধ নন-স্টেরয়েড অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহবিরোধী) ড্রাগ বা এনএসএআইডি আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এসব ওষুধ নাসিকাপথের প্রদাহ হ্রাস করে সাইনাস হেডেকের ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। সাইনাস হেডেক যন্ত্রণাদায়ক হলেও সাইনাসে চাপ জনিত ব্যথা হ্রাস করতে এক্সট্রিম ট্রিটমেন্ট অপশনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট পড়ুন : *  

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মার্চ ২০১৯/ফিরোজ