খেলাধুলা

এক ম্যাচে ১৭ লাল কার্ড!

বলিভিয়ার ঘরোয়া ফুটবলে যেন বাস্তবের চেয়ে সিনেমার দৃশ্যই দেখা গেল। কোপা বলিভিয়ার কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগ শেষে ফুটবল মাঠ মুহূর্তেই রূপ নিল সংঘর্ষের ময়দানে। রেফারির ৯০ মিনিটের বাঁশি শেষ হতেই মাঠজুড়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, ঘুষাঘুষি আর বিশৃঙ্খলা। শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নামতে হলো টিয়ারগ্যাস নিয়ে। ফুটবল ইতিহাসে নিশ্চয়ই ব্যতিক্রমী ঘটনা!

ব্লুমিং ও রিয়াল ওরুরোর লড়াই আগে থেকেই উত্তাপ ছড়াচ্ছিল। প্রথম লেগে ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ব্লুমিং। দ্বিতীয় লেগে ২–২ গোলে ড্র করেই তারা জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। কিন্তু মাঠের লড়াই শেষ হলেও আসল ড্রামা শুরু হয় শেষ বাঁশির পর।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওরুরোর সেবাস্তিয়ান জেবায়োসকে প্রথমে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি বারবার প্রতিপক্ষের দিকে ফিরে গিয়ে মারমুখী আচরণ করেন। এরপর যোগ দেন হুলিও ভিয়াও। তিনিও হাত চালাতে কসুর করেননি। মুহূর্তেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

হট্টগোল থামানোর চেষ্টা করতে গিয়ে বিপদে পড়েন ওরুরো কোচ মার্সেলো রবলেদো। জাতীয় দলের কোচিং স্টাফের এক সদস্যের সঙ্গে তীব্র বাকবিতণ্ডার মাঝে ধাক্কা খেয়ে তিনি পড়ে যান। মাথা ও কাঁধে আঘাত লাগায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হয়।

সহিংসতা যখন আরও বাড়ছে, তখন মাঠে প্রবেশ করে প্রায় ২০ জন পুলিশ সদস্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়েই টিয়ারগ্যাস ছুড়ে দাঙা থামায় তারা। এরই মধ্যে সতর্ক ব্যবস্থা হিসেবে ব্লুমিং কোচ মৌরিসিও সোরিয়া নিজের দলকে দ্রুত ড্রেসিং রুমে পাঠিয়ে দেন।

অতঃপর রেফারি রেকর্ড সংখ্যক ১৭টি লাল কার্ড দেখান। টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষ পুরো ঘটনায় জড়িত কমপক্ষে ছয়জন খেলোয়াড়কে তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। সহিংস আচরণের দায়ে গ্যাব্রিয়েল ভালভার্দে, রিচেট গোমেজ, ফ্রাঙ্কো পসে, রবার্তো মেলগার, সিজার রোমেরো ও লুইস সুয়ারেজকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়।

শুধু ফুটবল নয়, বলিভিয়ার এই ম্যাচ যেন আচমকা এক সামাজিক বিশৃঙ্খলার প্রতিচ্ছবি। যেখানে জয়-পরাজয়ের চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়ন্ত্রণ হারানো আবেগ।