রাইজিংবিডি স্পেশাল

প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর নজরদারি চান বিশেষজ্ঞরা

রাজধানীর কলাবাগানে ছেলে বন্ধুর বাসায় গিয়ে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সারা দেশে আলোচনা হচ্ছে কিশোর-কিশোরীদের সম্পর্ক বিষয়ে।  কেন এমন হচ্ছে, এসব ঘটনার পেছনে কী কারণ, এর প্রতিকারই বা কী- এসব বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন তৈরি করেছেন রাইজিংবিডির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেসবাহ য়াযাদ। আজ পড়ুন এর তৃতীয় পর্ব।

শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছে।  দীর্ঘ সময় ইন্টারনেটে কাটাচ্ছে এসব কিশোর-কিশোরীরা। এ সময় তারা যেন কোনো অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ইন্টারনেট ব্যবহার নিরাপদ করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে এরা কোনো ধরনের বিপদে পড়ছে কি না, দ্বিতীয়টি তারা কোনো আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে কিনা। এ বিষয়গুলো বাবা মাকে খেয়াল রাখতে হবে। 

এ বিষয়ে কানাডা প্রবাসী প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আশরাফ উজ্জামান রাইজিংবিডিকে বলেন, সাইবার অ্যাবিউজ খুব কমন বিষয়ে পরিণত হয়েছে।  এটা একটা হুমকির জায়গা।  আরেকটি হচ্ছে অ্যাডিকশন।  বাচ্চারা এখন ইন্টারনেট ছাড়া থাকতে পারে না বা থাকতে চায় না এমন আচরণ করে।  মৌলিক কিছু জিনিসে পরিবর্তন এনে একটু সচেতন হলেই এদের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা বা ইন্টারনেট ব্যবহারে নজরদারি করা সম্ভব।

এজন্য তিনি সন্তানের ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৭টি বিষয়ের ওপর অভিভাবকদের খেয়াল রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।  ১. প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার। গুগলে একটা প্যারেন্টাল কন্ট্রোল সিস্টেম আছে।  যা ব্যবহার করে সন্তানরা কী দেখছে তার ওপর নজরদারি করা সম্ভব। ২. কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ-এর একটি প্যারেন্টাল সেফ ব্রাউজার। এটা সন্তানের ডিভাইসে ইন্সটল করা হলে, এর মাধ্যমে কোনো ধরনের অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট দেখতে পারবে না সে।

৩. চাইল্ড ভার্সন অপশন ব্যবহার। ফেসবুক এবং মেসেঞ্জারের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের চাইল্ড ভার্সন আছে। সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দেওয়া যায়, যেটি তারা ব্যবহার করলেও অভিভাবকদের সুপারভাইজ করার সুযোগ থাকবে। ৪. ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় সচেতন হোন।  যে কোম্পানি থেকে সংযোগ নিবেন, খবর নিন তাদের সেফ ইন্টারনেট-এর ফিচারটি আছে কি না।  থাকলে তবেই সংযোগ নিন। ৫. সন্তান কতক্ষণ অনলাইন বা ইন্টারনেটে থাকবে তার একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন।

৬. ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় আপনিও সন্তানের সঙ্গে থাকুন।  তাদের  শিক্ষামূলক বিভিন্ন চ্যানেল এবং ওয়েবসাইট দেখতে উৎসাহিত করুন। নতুন কিছু শিখতে বা তৈরি করতে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলুন। ৭. আপনি কী দেখছেন সে বিষয়েও সতর্ক হোন।  সাধারণত একটি বাড়িতে একটি ওয়াইফাই সংযোগ নেওয়া হয় এবং বাড়ির প্রতিটি সদস্য সেটা শেয়ার করে ব্যবহার করে। তাই বাড়ির বাবা-মা বা প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্যরা যদি উল্টা-পাল্টা কিছু সার্চ করে বা দেখে, তাহলে সেগুলো ওই আইপি অ্যাড্রেসেই জমা হয়। আপনার সন্তানরা কিছু ব্রাউজ করলে ওই জিনিস বা কন্টেন্টগুলো তাদেরও সামনে চলে আসবে। তাই ওদের এরকম কন্টেন্ট থেকে দূরে রাখতে ইন্টারনেট ব্যবহারে অভিভাবকদের সতর্ক হতে হবে।

আরও পড়ুন

স্কুল-কলেজে যৌন শিক্ষা চালুর দাবি বিশেষজ্ঞদের

বয়ঃসন্ধিকালে পরিবার ও সামাজিক শিক্ষায় গুরুত্বের পরামর্শ