ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বাসাইল পৌরসভা নির্বাচন: মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৫, ১০ জুন ২০২৩  
বাসাইল পৌরসভা নির্বাচন: মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

শেষ সময়ে টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভা নির্বাচন জমে উঠেছে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান মেয়রসহ তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। স্থানীয়রা মনে করছেন, প্রার্থীরা জনপ্রিয় ও হেভিওয়েট হওয়ায় নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হবে। এদিকে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো পৌর এলাকা। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সব জায়গায় চলছে নির্বাচনী আলোচনা।

নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, বাসাইল পৌরসভা ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালে। সে নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন মজিবুর রহমান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুর রহিম আহমেদ মেয়র নির্বাচিত হন। দলের উপজেলা শাখার সহসভাপতি আব্দুর রহিম এবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র আব্দুর রহিম আহমেদকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে উপজেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি এনামুল করিম অটল এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ উপজেলা শাখার সভাপতি রাহাত হাসান টিপুকে। 

আরো পড়ুন:

আব্দুর রহিম টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের অনুসারী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগে রয়েছে তীব্র কোন্দল। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী অলিদ ইসলামের নেতৃত্বে বড় একটি অংশ রয়েছে সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে। এই কোন্দলের প্রভাব নির্বাচনে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এনামুল করিমকে গত শুক্রবার দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবুও তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে সক্রিয় নির্বাচনের মাঠে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমের নির্বাচনী এলাকা বাসাইল। তাই তিনিসহ দলের শীর্ষ নেতারা তাদের মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। 

২০১৩ সাল ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে এনামুল করিম এবং রাহাত হাসান নিজ নিজ দলের প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করেন। উভয়ই সামান্য ভোটে পরাজিত হন। এবার জয়ের জন্য উভয়ই সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।

তিন মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ভরে গেছে পৌর এলাকা। সব জায়গায় চলছে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। 

বাসাইলের কলিয়া গ্রামের হাসান সিকদার বলেন, পুরো পৌর এলাকায় উৎসব আমেজে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। মেয়র পদে তিন জন শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় নির্বাচন জমে উঠেছে।

নির্বাচনে দলীয় কোন্দলের প্রভাব নির্বাচনে পড়বে না বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুর রহিম আহমেদ। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর পৌরসভায় অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড করেছি। তাই দলের সব স্তুরের নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটাররা আমার সঙ্গে আছেন। তারা ঐক্যবদ্ধ আছেন। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদি।

মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল করিমকে শুক্রবার দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের পদধারী নেতাদের প্রকাশ্যে তার পক্ষে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে না। তবে তারাও গোপনে সক্রিয় দলের নেতাকে বিজয়ী করার জন্য।

এনামুল করিম জানান, উপজেলা বিএনপির সবাই তার সঙ্গে আছেন। গত পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তারপরও খুব সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। এবার ৭০ ভাগ ভোটার তার পক্ষে রয়েছেন। ভোটাররা ভোট দিতে পারলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন।

কৃষক শ্রমিক জনতালীগ সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম তার দলের প্রার্থী রাহাত হাসানকে বিজয়ী করার জন্য নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। দলের নেতারা জানান, এটি দলের প্রতিষ্ঠাতার নির্বাচনী এলাকা। তাই মেয়র পদে তাদের দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে তারা সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছেন। 

রাহাত হাসান বলেন, গত নির্বাচনে সামান্য ভোটে হেরেছিলাম। ১০ বছর ধরে মাঠে রয়েছি। বাসাইলের জনগণ আমাকে চায়। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমার বিজয় নিশ্চিত।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনি শংকর রায় জানান, আগামী ২১ জুন বাসাইল পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহন করা হবে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হবে। তিন জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও নয়টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। পৌরসভার ১০টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৪৩৭।

কাওছার/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়