ঢাকা     সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই, আটক ৪

শেরপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৪, ১৩ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ২০:২৪, ১৩ মার্চ ২০২৪
চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই, আটক ৪

শেরপুরের নকলায় পড়ালেখার টাকা জোগাড় করতে পড়ালেখার পাশাপাশি অটোরিকশা চালাতো আসাদুজ্জামান আসাদ (১৭)। অটোরিকশা চোরচক্র যাত্রী বেশে তার গাড়িতে উঠে তাকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করে।

এ বিষয়ে বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে শেরপুর পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম তার কার্যালয়ে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার বর্ণনা করেছেন।

ঘটনার ২৪ ঘন্টা পার হবার আগেই পুলিশের জালে আটকা পড়েছে হত্যাকারীরা। নিহত আসাদ নকলা উপজেলার দক্ষিণ পাড়া এলাকার ফজলুর রহমানের ছেলে।

আসামিরা হলেন- নকলা উপজেলার ডাংঘরাকান্দা এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে মো. হামিদুল ইসলাম (২৪), পূর্ব গজাড়িয়া এলাকার আবু হানিফের ছেলে মো. নূর নবী (২১), বাঁশকান্দা এলাকার আশকর আলীর ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম (২২) ও ইশিবপুর এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে মো. মিলন মিয়া (২৪)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ ভোররাতে নালিতাবাড়ী থানার তিনানী বাজার এলাকায় নালিতাবাড়ি থানা পুলিশের নিয়মিত অভিযানে অটোরিকশা চোর সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা একেক সময় একেক ধরনের তথ্য দিতে থাকলে পুলিশের সন্দেহ বৃদ্ধি পায়। এসময় তাদের কাছ থেকে অটোরিকশা ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এদিকে অটোরিকশা উদ্ধারের খবর পেয়ে নকলা এলাকার বাসিন্দা মো. ফজলুর রহমান নালিতাবাড়ি থানায় ছুটে আসেন। এসময় পুলিশের উদ্ধারকৃত অটোরিকশা ও মোবাইলটি তার ছেলে আসাদের বলে তিনি দাবি করেন। তিনি জানান, তার ছেলে গতকাল থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।

পরবর্তীতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এই ঘটনা আটককৃতরা ঘটিয়েছেন বলে স্বীকার করেন এবং এর সাথে আরও দুইজন জড়িত আছে বলেও তথ্য দেন। পরবর্তীতে পুলিশ তাদেরকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অটোচালকের মাটিচাপা দেওয়া লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান।

ঘটনার বিবরণে পুলিশ আরও বলে, আসাদুজ্জামান আসাদ তার অটোরিকশা নিয়ে বের হলে হত্যাকারীরা রাত ৯টার দিকে নকলা পৌরসভার নালিতাবাড়ী মোড় হতে অটোরিকশাটি ভাড়া নেয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে দিকে নকলা থানার ধনাকুশা এলাকায় সেফাকুড়ি ব্রিজের কাছাকাছি আসলে অটো থামাতে বলে। এসময় তারা জোর করে চারজন মিলে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে আসাদ বাধা দেয়। পরে তারা তাকে ভারি শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে। পরবর্তীতে তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর পার্শ্ববর্তী একটি জায়গায় নিয়ে মাটি চাপা দেয়। পরে অটো রিকশাটিকে বিক্রির উদ্দেশ্যে নালিতাবাড়ির দিকে রওনা হয়। তবে তিনানী এলাকায় আসার পর অটোরিকশাটির চার্জ শেষ হয়ে রাস্তায় আটকা পরলে সন্দেহ হয় পুলিশের।

এ বিষয়ে অটোচালক আসাদের বাবা ফজলুর রহমান বলেন, আমার ছেলেকে তো আর আমি ফেরত পাবো না; কিন্তু আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই আমি।

তিনি পুলিশের উদ্দেশে বলেন, আমাদের চোখের সামনে অনেক মৃত্যুর ঘটনায় দেখি গ্রেপ্তারে দেরি হয়; কিন্তু পুলিশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে সবাইকে গ্রেপ্তার করেছে এতে আমি খুশি।এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম বলেন, এটা একটি ক্লুলেস মার্ডার ছিলো। আমরা সামান্য সন্দেহ থেকে বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যা ঘটনার মূল রহস্য বের করতে পেরেছি। পুলিশের এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তারিকুল/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ