ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ভারী বর্ষণে টেকনাফে ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ১৯ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৬:৩৫, ১৯ জুন ২০২৪
ভারী বর্ষণে টেকনাফে ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি

কক্সবাজারের টেকনাফে ভারী বর্ষণে এ পর্যন্ত অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। 

মঙ্গলবার (১৯ জুন) রাত ৯টার পর থেকে কক্সবাজার জেলায় ভারী থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত শুরু হয়। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক তোফায়েল আহমদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

অথচ টেকনাফে শুধুমাত্র ৬ ঘণ্টায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডের তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম।

হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, তার ইউনিয়নের ১২ গ্রামের ৪ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। এসব গ্রামের চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

হ্নীলা ইউনিয়নের কামাল উদ্দিন নামে এক যুবক বলেন, ‘হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব রঙিখালীতে ৩০০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। অনেকের বাড়িতে হাঁটু সমান পানি। চুলায় আগুন জ্বালাতে পারেনি এই এলাকার শত শত পরিবার। রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগে কাটছে জনজীবন।’

টেকনাফ পৌরসভার কলেজপাড়া, শীলবুনিয়া পাড়া, ডেইলপাড়া, জালিয়াপাড়া, খানকারডেইল, চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়া প্লাবিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান। তিনি জানান, এই ৭ গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দি। পানিতে ডুবে আছে টেকনাফ কলেজসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।

টেকনাফ পৌরসভার ব্যবসায়ী আবু শাহেদ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে টেকনাফের রাস্তাঘাট ও খালবিলে পানি জমে গেছে। এতে করে বাড়িঘরে পানি ঢুকে বাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। লোকজনের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।’

পৌরসভার ৭, ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু ঘরবাড়িসহ চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া উক্ত এলাকায় মাছের ঘেরসহ লবণ চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোছাইন জানান, শাহপরীর দ্বীপের ৭ গ্রামসহ সাবরাং ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, লম্বা বিল, উলুবনিয়া, আমতলি, মিনাবাজার, উনচিপ্রাং, কাঞ্চনপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, রইক্ষ্যং গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে প্রায় সাড়ে ৩ শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

আবছার কবির আকাশ বলেন, ‘হোয়াইক্যংয়ের সব চিংড়ি ঘের ও নাফ নদী এক হয়ে গেছে। লাখ লাখ চিংড়ি পানিতে ভেসে গেছে। এতে করে ব্যবসায়ীরা বিরাট লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন।’

বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন জানান, তার ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ১০ গ্রাম। এতেকরে ১ হাজার পরিবার খুব খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ভারী বর্ষণের ফলে কিছু গ্রামে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আমরা তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

তারেকুর/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়