ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত

৪ মাস আগে

খামেনিকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি ইসরায়েলের

খামেনিকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি ইসরায়েলের

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ প্রকাশ্যেই এই হুমকি দিয়েছেন বলে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া কাটজ ইরানে নতুন করে হামলার হুমকিও দিয়েছেন। রবিবার (২৭ জুলাই) রামন বিমানঘাঁটি পরিদর্শনকালে তিনি এসব হুমকি দেন।

কাটজ বলেন, “আমি এখন থেকে স্বৈরাচারী খামেনিকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই যে, যদি আপনি ইসরায়েলকে হুমকি দেওয়া চালিয়ে যান, তাহলে আমাদের দীর্ঘ হাত আবারও তেহরানে পৌঁছাবে। এবার আপনি নিজেও লক্ষ্যবস্তু হবেন।”

ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রকাশ করে। তবে ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। 

এর আগে গত ১৩ জুন ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত টানা ১২ দিন ধরে চলে। 

সংঘাতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, কমান্ডার, পরমাণু বিজ্ঞানীসহ সাত শতাধিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই সময় ইরানের প্রধান তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে পরবর্তীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন থেকে যুদ্ধবিরতি সম্মত হয় ইসরায়েল ও ইরান।  

৫ মাস আগে

যেকোনো সামরিক আক্রমণের জবাব দিতে প্রস্তুত ইরান: খামেনি

যেকোনো সামরিক আক্রমণের জবাব দিতে প্রস্তুত ইরান: খামেনি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, যেকোনো নতুন সামরিক আক্রমণের জবাব দিতে প্রস্তুত ইরান। ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের চেয়েও বড় আঘাত হানতে সক্ষম।

বুধবার রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত ভাষণে খামেনি বলেন, “আমাদের জাতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার কুকুর ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার (ইসরায়েল) শক্তির মুখোমুখি হতে যেভাবে প্রস্তুত, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”

ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়।

খামেনি কাতারের আল উদেইদ ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন,“ইরান যে ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে তা ছিল একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল আমেরিকান আঞ্চলিক ঘাঁটি। যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্যদের উপর আরো বড় আঘাত আসতে পারে।”

ওয়াশিংটন এবং তিনটি প্রধান ইউরোপীয় দেশ ৩১ আগস্টের মধ্যে চুক্তির জন্য সময়সীমা নির্ধারণে সম্মত হওয়ায় ইরানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করার চাপ রয়েছে। ইরান যদি আলোচনা শুরু না করে তাহলে নতুন করে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা হবে বলে সতর্ক করেছে ফ্রান্স।

খামেনি বলেন, “কূটনৈতিক ও সামরিক উভয়ক্ষেত্রেই, যখনই আমরা পর্যায়ে প্রবেশ করি, আমরা দুর্বলতার অবস্থান থেকে নয়, আমাদের হাত পূর্ণ করে তা করি।”

৫ মাস আগে

ইরান থেকে সোমবার ফিরবেন ৩০ বাংলাদেশি

ইরান থেকে সোমবার ফিরবেন ৩০ বাংলাদেশি

ইরানের তেহরান থেকে তৃতীয় দফায় আরো ৩০ জন বাংলাদেশি ঢাকায় ফিরছেন। সোমবার (১৪ জুলাই) ভোরে তারা ঢাকায় পৌঁছাবেন।

এটাই হবে ইরান থেকে সরকারিভাবে শেষ দফা প্রত্যাবাসন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তেহরান থেকে মাশহাদ ও শারজাহ হয়ে ৩০ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরছেন। মঙ্গলবার ভোরে তারা ঢাকায় ফিরবেন।

সূত্র জানায়, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষিতে প্রথম দফায় গত ১ জুলাই ২৮ জন বাংলাদেশি ঢাকায় ফিরেছেন। তেহরান থেকে প্রথম দফায় গত ২৫ জুন সড়ক পথে ২৮ জন বাংলাদেশি রওয়ানা দেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন নারী, শিশু এবং সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগী। তারা তেহরান থেকে সড়ক পথে বেলুচিস্তানের তাফতান সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন। পরে করাচি-দুবাই হয়ে তারা ঢাকায় আসেন।

এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ৮ জুলাই ঢাকায় আসেন আরো ৩২ বাংলাদেশি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরান থেকে দেশে ফেরার জন্য ইতোমধ্যেই ২৫০ জন বাংলাদেশি তেহরান দূতাবাসে নিবন্ধন করেছেন। তবে দুই দফায় ৬০ জন বাংলাদেশি ইতোমধ্যেই দেশে ফিরেছেন। আর তৃতীয় দফায় ফিরছেন ৩০ জন। এ নিয়ে মোট ৯০ জন নাগরিককে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

নিবন্ধিত বাকি বাংলাদেশিদের বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ইরানে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশিদের সংখ্যা ৬৭২ জন। এর মধ্যে শিক্ষার্থী রয়েছেন ৬৬ জন। তাদের মধ্যে  তেহরানে ছিলেন ৪০০ বাংলাদেশি।

৫ মাস আগে

ফিলিস্তিনিদের ওপর নিষ্ঠুর অমানবিকতার শেষ কোথায়? 

ফিলিস্তিনিদের ওপর নিষ্ঠুর অমানবিকতার শেষ কোথায়? 

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে, অনেক সমাজ বা সভ্যতায় কিছু নির্দিষ্ট জাতি, সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী নিষ্ঠুর অত্যাচার ও বৈষম্যের শিকার হয়েছে। এমনকি অনেককে পূর্ণ মানুষ হিসেবে গণ্য করা হয়নি।

এক সময় কৃষ্ণাঙ্গদের মানুষ হিসাবে পূর্ণ মর্যাদা দেওয়া হত না। ১৬০০ থেকে ১৯০০ শতক পর্যন্ত আফ্রিকা থেকে লক্ষ লক্ষ কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকে জোর করে ধরে এনে ইউরোপ, আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে দাস হিসেবে বিক্রি করা হত। তবে এর পূর্বেও পৃথিবীতে দাস প্রথা বিদ্যমান ছিল। তাদের জীবনের কোনো মূল্য ছিল না, মালিকের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হত।

আমেরিকার সংবিধান রচনার সময় ১৭৮৭ সালে একটি আইন পাস হয় যেখানে বলা হয়, ৫ জন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ থাকলে তিন জন মানুষ বা ভোটার হিসেবে বিবেচিত হবে। যদিও এক সময় এই আইন বাতিল হয়ে ছিল।

এক সময় এমন ধারণা ছিল কৃষ্ণাঙ্গরা ক্ষুধা, দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা অনুভব করে না। শারীরিক পরিশ্রমে ক্লান্ত হয় না, তাই তাদেরকে দিয়ে কষ্টের ও আমানবিক কাজ করা হত। এই ভুল ধারণাটি চিকিৎসাশাস্ত্রেও ছিল। যে কারণে কৃষ্ণাঙ্গ রোগীদের ব্যথানাশক দেওয়া হত না। কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহারের ইতিহাসও আছে। কৃষ্ণাঙ্গ নারী দাসদের ওপর যন্ত্রণা-দায়ক অস্ত্রোপচার চালানো হয়েছে কোনো ধরনের অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই। অথচ শ্বেতাঙ্গ নারীদের অস্ত্রোপচার করা হতো যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে এবং অবশ্যই অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হতো।

ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকরা স্থানীয় আদিবাসীদের (নেটিভ আমেরিকান, অস্ট্রেলিয়ান আবোরিজিনাল, ইত্যাদি) মানুষ হিসেবে না দেখে ‘বনের মানুষ’ হিসেবে অপমান করার কথা জানা যায়।

আজ যারা নিজেদের কে সভ্য মনে করে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলে তারা ১৯২০ সালের আগে নারীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি।

এমনকি আফ্রিকা ও এশীয়দেরকেও এক প্রকার অবজ্ঞা ও বর্ণবাদী মনোভাবের চোখে দেখত। ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতীয়দের ক্ষেত্রে যেমনটা  ছিল। ১৯৪৩ সালের বাংলার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল যেসব মন্তব্য করেছিলেন, তা আজও ইতিহাসে বিতর্কিত এবং সমালোচিত।তিনি বলেছিলেন, “If food is so scarce, why isn’t Gandhi dead yet?” “It is their own fault for breeding like rabbits.”

তিনি আরো বলেছিলেন, “I hate Indians. They are a beastly people with a beastly religion.” (আমি ভারতীয়দের ঘৃণা করি। তারা পশুর মতো জাতি এবং পশুসুলভ ধর্ম অনুসরণ করে।)
ব্রিটিশ আমলে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাবসহ অনেক ক্লাবে লেখা থাকত “Indians (locals) and dogs are not allowed”।  যে কারণে  ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নেতৃত্বে ঐ ইউরোপিয়ান ক্লাবে হামলা চালানো হয়ে ছিল।

বর্তমানে আইনি ও সামাজিকভাবে কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্যদের মানুষ হিসেবে সমান মর্যাদা দেওয়া হলেও, অনেক মানুষ এখনো বর্ণবাদী মনোভাব বা ব্যবস্থাগত বৈষম্য থেকে ফিরে আসতে পারেনি।

ইতিহাসের এমন জাতি, সম্প্রদায় বা ধর্মের নিষ্ঠুর অত্যাচার ও বৈষম্যের শিকার ফিলিস্তিনি জনগণ। সবচেয়ে বড় পরিতাপের বিষয় পৃথিবীর কথিত সভ্য সমাজ, নিয়ন্ত্রক ও ক্ষমতাধরদের কাছে  ফিলিস্তিনিরা যেন এখনও মানুষ হতে পারিনি।

ফিলিস্তিনিরাও মানুষের মতো ব্যথা পায়, কষ্ট পায়, আপনজন হারানোর বেদনা উপলব্ধি করে, ভালোবাসে, স্বপ্ন দেখে, ক্ষুধার্ত হয়। পৃথিবীর অনেকে এখন বিষয়গুলো ভুলে যেতে বসেছে।

পৃথিবীর অনেকে বন্দুক দিয়ে মানুষ হত্যা শুনেছে, পড়েছে কিন্তু চোখে দেখিনি। ইসরায়েলের বাহিনী প্রকাশ্যে এই কাজ প্রতিদিন করে যাচ্ছে। নির্মম বুলেট ক্রমাগত বিদ্ধ করে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। বিবেকবান মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এভাবে মানুষ পাখিদেরকেও মারতে পারে! ইসরায়েলের বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের গণমাধ্যমে ভিডিও ও ছবি দেখে মানুষ বাকরুদ্ধ, অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

রাস্তায় গুলি, ট্যাঙ্ক, আকাশ থেকে হামলা, মানুষের মধ্যে শুধু মৃত্যু আতঙ্ক। মৃত্যুর মিছিল যেন বেড়েই চলেছে। দিন দিন কমে যাচ্ছে জানাজার নামাজে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা। দেখা দিয়েছে কবরস্থানের সংকট। পুরনো কবর খনন করে নতুন দাফনের জায়গা তৈরি হচ্ছে। অনেক সময় একাধিক মৃতদেহ একসাথে বা দ্রুত সমাধিস্থ করা হচ্ছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে এক লাখ পৌঁছেছে (ইসরাইলের পত্রিকা হারেৎজ এর খবর অনুযায়ী)। আহত বা পঙ্গু হয়েছে প্রায় দুই লাখ মানুষ।
 গাজায় ছোটবড় কোন বাড়ি, দোকানপাট ও অবকাঠামো আর অবশিষ্ট নেই। ইসরায়েলি বিমান আর ট্যাংকের গোলায় সবই বিধ্বস্ত, মাটির সাথে মিশে গেছে।

গাজায় নিহত বেশির ভাগ শিশু ও নারী। অথচ এই শিশুরা বোঝে না মুসলমান আর ইহুদির পার্থক্য। হামলা হচ্ছে হচ্ছে স্কুল, হাসপাতাল, শিশুদের আশ্রয়কেন্দ্রসহ, সর্বত্র।

ক্ষুধার্ত শিশুদের কান্না, মায়েদের অসহায়ত্ব, বয়স্কদের নিস্তব্ধতা যেন গাজার বাস্তবতা। অনাহার, অর্ধাহার যেন গাজা উপত্যকার মানুষদের নিত্যসঙ্গী।ক্রমাগত হামালায় জমিতে চাষাবাদ বন্ধ। দীর্ঘকাল থেকে গাজা উপত্যকা কঠোর ইসরায়েলি অবরোধের মধ্যে রয়েছে। খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির প্রবেশ প্রায় অসম্ভব।আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কিছু পাঠাতে চাইলেও, অবরোধ ও নিরাপত্তার অজুহাতে অনেক সময় এই সাহায্য আটকে থাকে। কিছুটা সাহায্য ঢুকলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য।

বাজারে দ্রব্য পাওয়া যায় না বললেই চলে।কিছু পাওয়া গেলেও  চড়া দামের কারণে মানুষের নাগালের বাইরে। খাদ্য সংকট এতটাই তীব্র যে অনেক পরিবার গাছের পাতা, পশুর খাদ্য, এমনকি ঘাস সেদ্ধ করে খাওয়ার খবর গণমাধ্যমে পাওয়া যায়।

অনেক শিশু দিন কাটায় শুধু পানি বা এক টুকরো শুকনো রুটি খেয়ে। জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি শিশুদের সবচেয়ে বড় অংশ অপুষ্টিতে ভুগছে।

গাজাবাসীর খাবার পাওয়ার একমাত্র উৎস হলো ত্রাণকেন্দ্রগুলো।খাবার না পাওয়ার অর্থ হলো ফিলিস্তিনি শিশুদের অনাহারে থাকা।অথচ এই সামান্য ত্রাণের বিনিময়ে তাদের শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বুলেট।  ত্রাণকেন্দ্রগুলো যেন ‘কিলিং ফিল্ড' বা বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের শিশু শৈশব এখন বিপণ্ন। প্রতিদিনের গোলাবর্ষণ, বিমান হামলা, বা সামরিক অভিযানের মাঝে বড় হয় ফিলিস্তিনের শিশুরা। যেখানে পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তের শিশুরা খেলাধুলা, শিক্ষা ও নির্ভয়ে বড় হয়ে ওঠার সুযোগ পায়, সেখানে ফিলিস্তিনের শিশুরা বেঁচে থাকার সংগ্রামেই দিন কাটায়।তারা চোখের সামনে হারায় বাবা-মা, ভাইবোন, বন্ধু কিংবা নিজের ঘরবাড়ি। অনেক শিশুই বোমার আঘাতে পঙ্গু হয়ে যায় বা চিরতরে হারায় দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি কিংবা কথা বলার সামর্থ্য।

স্কুল ধ্বংস হয়ে গেছে, শিক্ষার পরিবেশ নেই, নেই শিক্ষক বা বই-খাতা। আবার অনেক শিশু প্রিয়জন-বিচ্ছিন্নতার টানাপোড়েন, মৃত্যু, শোক, ধ্বংস, ভয়, উদ্বেগ ও হতাশা থেকে নানা মানসিক সমস্যায় পড়ছে। আবার ইসরায়েলের সেনা দ্বারা ধর্ষিতও হয় শিশু ও নারীরা যাদেরকে আজীবন বয়ে চলতে হয় এই ক্ষত।

ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের এই অমানবিকতা যেন পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলেছে। ১৯৯৩ সালে শান্তি চুক্তি ও ১৯৯৮ সালে ভূমির বিনিময়ে শান্তি চুক্তি হলেও সেগুলো লঙ্ঘন করে বার বার আগ্রাসী হয়ে উঠছে। ইসরায়েল কোন আন্তর্জাতিক আইন, মানবতা কিছুই মানে না। খোড়া যুক্তি বা অজুহাত  দেখায়ে    ফিলিস্তিনিদের ওপর  একের পর এক নিপীড়নের খড়গ চালিয়ে আসছে।

জাতিসংঘের ব্যানারে পরাশক্তিগুলোর তত্বাবধানে ১৯৪৭/৪৮ সালে ফিলিস্তিনিদের আবাসভূমি দখল করে কৃত্রিম রাষ্ট্র ইসরায়েল সৃষ্টি হয়। সেই সময় পাশে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের কথা ছিল কিন্তু সেটা কাগজে-কলমেই থেকে যায়। কয়েক প্রজন্ম ধরে  ফিলিস্তিনিদের একটা বড় অংশ কাম্পে বসবাস করে যাচ্ছে।

সূচনাটা অনেক  আগে থেকে শুরু হয় যখন ১৮৯৭ ইহুদি কংগ্রেসে তাদের নেতা থিওডর হার্জেল ফিলিস্তিনিদের এলাকায়  ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। একই সালে ফ্রান্স, ব্রিটেন, রাশিয়া ও আমিরিকা এই ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। শুরু হয় ইহুদি বসতি স্থাপন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন আরবীয়দের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। ১৯১৯ সালে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরপর ইহুদি আগমন ব্যাপকহারে শুরু হয়। ১৯২১ সালে আরব-ইহুদি দাঙ্গায় প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি মারা যায়।১৯২২ সালে লীগ অব নেশনস ইহুদিদের বসতি স্থাপনের বৈধতা দিয়ে দেয়।

ইহুদি ধর্মগ্রন্থ  অনুসারে, নাইল (মিশর) নদী থেকে ইউফ্রেটিস (ইরাক) নদী পর্যন্ত বিশাল ভূখণ্ড নিয়ে গ্রেটার ইসরায়েল  রাষ্ট্র গঠনের শত বছরের পরিকল্পনা নিয়ে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েল সামরিক ব্যয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছেই। ২০২৩ সালে ১৭ বিলিয়ন ডলার, ২০২৪ সালে ২৮ বিলিয়ন ডলার, ২০২৫ সালে (প্রাক্কলন) ৩৪ বিলিয়ন ডলার।

ইহুদি সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষার নামে ইসরায়েল যেন ফিলিস্তিনিদের নির্ধনে নেমেছে। এক  ইহুদি এনজিও প্রধান দাম্ভিকতার সাথে বলেছিলেন তিনি যদি মার্কিন  সিনেটে একটি সাদা রুমাল পাঠান তবে তাতে অন্তত ৭০ জন সিনেটর স্বাক্ষর করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার মাত্র দুই শতাংশ ইহুদি সম্প্রদায়ের অথচ তারা সে দেশের মোট সম্পদের প্রায় ৩০ শতাংশের মালিক। তেমনি বিশ্বের মোট জনসংখ্যার  শূন্য দশমিক ২ শতাংশ ইহুদি তবে তারা বিশ্বের মোট সম্পদের প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মালিক। বিশ্বের  শীর্ষ ১০ জন ধনী ব্যক্তির মধ্যে কয়েকজন ইহুদি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা ব্যবস্থা, গণমাধ্যম, হলিউড,  ধর্মসহ অনেক কিছু ইহুদি লবি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয় পৃথিবীর আরো কয়েকটি প্রভাবশালী দেশও ইহুদি-ইসরায়েল লবি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তারা সবসময় ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষার কাজ করে চলেছে। যেসব কারণে ইসরায়েল বর্তমানে সারা বিশ্বে ধরা কে সরাজ্ঞান করতে চায়। বার বার অপরাধ করার পরও তারা সবসময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে।এমনও কথা প্রচলিত আছে ইসরায়েল বা ইহুদিদের স্বার্থ না দেখলে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জয়লাভ করা বা টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।

এ পর্যন্ত আরব-ইসরাইল ৪টি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। ১৯৪৮, ১৯৫৬, ১৯৬৭ ও ১৯৭৩ সালে। কতিপয় পরাশক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় প্রতিটা যুদ্ধে তারা জয় পায় ইসরায়েল।১৯৬৭ সালের যুদ্ধ স্থায়ী হয়ে ছিল মাত্র ছয় দিন। এই যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরাইল প্রতিবেশী মিশরের সিনাই ও গাজা উপত্যকা, জর্ডানের পশ্চিম তীর ও জেরুসালেম ও সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয়।

১৯৮২ সালে ইসরাইল লেবাননে আগ্রাসন চালায় এবং সেখানে নির্বিচার হাজার হাজার নাগরিক হত্যা করে।  ১৯৮৬ ও ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত লিবিয়ায় হামলা হয়। ২০০৩ সালে তথাকথিত ‘ঐচ্ছিক জোট’ পরিচালিত যুদ্ধ ইরাককে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। নারী, শিশুসহ লাখ লাখ ইরাকি প্রাণ হারায়।তাদের দাবি ছিল, ইরাকের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে, যদিও শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। আর এসব কাজে প্রধান ভূমিকা রেখেছিল ইসরায়েল।

১৯৮১ সালের ৭ জুন ইসরায়েল বিমান হামলা করে ধ্বংস করে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আল-তুয়াতিয়াহতে নির্মাণাধীন ওসিরাক পারমাণবিক গবেষণাকেন্দ্রের গোলাকার গম্বুজ।

অপারেশন ব্যাবিলনের ২৬ বছর পর ২০০৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল একই রকম হামলা চালিয়ে সিরিয়ার কথিত আণবিক কর্মসূচি স্থাপনা ধ্বংস করে দেয়। তবে সিরিয়ার সরকার কখনোই স্বীকার করেনি যে কোনো ধরনের পারমাণবিক কর্মসূচি তারা নিয়েছিল। এমনকি, পাকিস্তানের কাহুতায় অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার পরিকল্পনাও করেছিল।

১৯৭৯ সালে ইরানের বিপ্লবের পর থেকে ইসরায়েল ধ্বংসের হুমকি দিয়ে আসছে। ১৯৯২ সাল থেকেই তারা দাবি করে আসছে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বার প্রান্তে।

গত ১৩ জুন কোনোরকম বিনা উসকানিতে ও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই গভীর রাতে ইসরায়েল  স্বাধীন ও  সার্বভৌম দেশ  ইরানের ওপর ২০০ জঙ্গি বিমান নিয়ে হামলা শুরু করে। ১২ দিনের এই হামলায়  ইরানে অন্তত ১০০০ জন নিহত এবং ৬০০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এক ডজনের ও বেশি শীর্ষ সামরিক ও পরমাণু বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক অবকাঠামোসহ তিনটি মূল পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা চালিয়েছে।

আসল উদ্বেগের জায়গা হলো, একটি দ্বিমুখী নীতিমালা বলবৎ রাখা হয়েছে যেন ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে, অন্য কেউ নয়।  বিশেষ করে এই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চলটিকে যেকোনো মূল্যে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় পশ্চিমা বিশ্ব। ইসরায়েল যেন পশ্চিমাদের একটি ঘাঁটি, কোন দেশ নয়।

ইসরায়েল অনেক আগেই পারমাণবিক শক্তি অর্জন করেছে অথচ পশ্চিমা বিশ্ব, জাতিসংঘ ও জাতিসংঘের ‘আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা’ (আইএইএ) সব কিছু দেখে না দেখার ভান করেছে। 

বর্তমান বিশ্বে শক্তি বা বল প্রয়োগের নীতি এখন শান্তির মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। দখলদার ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি শান্তির সংজ্ঞা পরিবর্তন করেছে। যার কাছে পারমাণবিক অস্ত্রসহ অন্যান্য মারণাস্ত্র, অত্যাধুনিক ফাইটার জেট, ক্ষেপণাস্ত্র, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সাবমেরিন, শক্তিশালী সেনাবাহিনী আছে সেই শান্তিপ্রিয়। আর যাদের এসব কিছু নেই তারাই অশান্তিপ্রিয়, সন্ত্রাসবাদী ও বিশ্ব নিরপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি যারা যুদ্ধ বাঁধায়, অস্ত্র সরবরাহ করে, মানুষ হত্যা করে, মানুষের আবাসস্থল গুঁড়িয়ে দেয় তারাই আবার নোবেল শান্তি পুরষ্কারের দাবি তোলে।

বিশ্বের অনেকে ইসরায়েলের অব্যাহত গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছেন। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে একটি মামলা চলছে, যা দক্ষিণ আফ্রিকা দায়ের করেছে। ইতালির আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী ফ্রানচেস্কা আলবানিজ জাতিসংঘের  মানবাধিকার পরিষদে এই বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন। এতকিছুর পরেও ইসরায়েলের গণহত্যা,  মানবতাবিরোধী অপরাধ  ও দাম্ভিকতা অব্যাহত আছে। কারণ ইসরায়েল জানে প্রবাবশালী বিশ্ব মোড়ালরা তার পকেটে।

ইসরায়েলকে থামানোর জন্য এক্ষণই পদক্ষেপের প্রয়োজন। তা না হলে বিশ্ব বিবেককে যে একদিন ইতিহাসের কাঠগড়ায় উঠতে হবে তাতে কোনো সন্দেহ নাই।

 

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী

৫ মাস আগে

‘আবারো ইরানে হামলা চালাবে ইসরায়েল’

‘আবারো ইরানে হামলা চালাবে ইসরায়েল’

তেহরানের হুমকি পেলে ইসরায়েল আবারো ইরানে হামলা চালাবে। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ কথা বলেছেন।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা দপ্তরের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “তেহরান, তাবরিজ, ইসফাহান কিংবা যেখান থেকেই ইসরায়েলকে হুমকি বা ক্ষতি করার চেষ্টা করা হলে, সেখানেই ইসরায়েলের লম্বা হাত আপনার কাছে পৌঁছাবে। লুকানোর কোনো জায়গা নেই।”

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “যদি আমাদের ফিরে আসতে হয়, তাহলে আমরা আরো শক্তির সাথে ফিরে আসব।”

তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করতে ইসরায়েল জুন মাসে ইরানের ওপর হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলে। ১২ দিনের যুদ্ধ আরো বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করে। শত্রুতা বন্ধ করার জন্য ২৩ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও ইরান যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।

৫ মাস আগে

শিয়া-সুন্নি বিভেদ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জবি উপাচার্যের

শিয়া-সুন্নি বিভেদ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জবি উপাচার্যের

মুসলিম সম্প্রদায়কে শিয়া-সুন্নি বিভেদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।

সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে ‘ইরান বনাম ইসরায়েল-মার্কিন যুদ্ধ পরবর্তী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রভাব’ শীর্ষক একাডেমিক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, “অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর তুলনায় মুসলমানদের মধ্যে আন্তঃসম্প্রদায়িক বিরোধ বেশি লক্ষ্য করা যায়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো যদি একত্রিতভাবে কাজ করে, তাহলে অনেক সংকটের সমাধান সম্ভব।”

এতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। তিনি ইরানের ঐতিহাসিক বিপ্লব, বর্তমান মার্কিন-ইরান উত্তেজনা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক সংকট নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি ইরান ইস্যুতে বিভিন্ন শক্তির ভূমিকা ও সম্ভাব্য পরিণতি নিয়েও তিনি মূল্যায়ন করেন।

তিনি বলেন, “ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য ইরানকে ‘বিপদ’ হিসেবে উপস্থাপন করছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংকট তৈরি করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের কৌশলগত স্বার্থ মধ্যপ্রাচ্যে একত্রিত হয়েছে। তেল সম্পদ ও আঞ্চলিক আধিপত্য ধরে রাখতে ইরানকে ঘিরে সংকট তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “মার্কিন-ইসরাইলি চাপের বিপরীতে ইরান রাশিয়া ও চীনের কাছ থেকে কূটনৈতিক ও সামরিক সমর্থন পাচ্ছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন শক্তি সমীকরণ তৈরি করছে, যা পশ্চিমা আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করছে।”

সতর্ক করে তিনি বলেন, “এই সংঘাত যদি যুদ্ধে রূপ নেয়, তাহলে গোটা অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে, তেলের বাজারে ধস নামতে পারে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”

প্যানেল আলোচনায় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, “ইরানের ইসলামিক বিপ্লব-পরবর্তী সময় থেকেই ইসরাইলি আক্রমণের সূচনা। মুসলিম বিশ্বের অভ্যন্তরীণ বিভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ইসরাইলি আগ্রাসন মোকাবিলা করতে হবে। ‘ইসরাইলি ফোবিয়া’র ভিত্তিতে মুসলমানদের আর দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।”

জিএসএসআরসি পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

৫ মাস আগে

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ইরানের

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ইরানের

জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির-সাঈদ ইরাভানি বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইরানের ‘অপরিহার্য অধিকার’ এবং তারা এই কার্যক্রম কখনোই বন্ধ করবে না।

সিবিএস নিউজ-এর ফেইস দ্য নেশন অনুষ্ঠানে ইরাভানি বলেন, যতক্ষণ নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকে ততক্ষণ পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ইরান শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তি উৎপাদন করতে পারে, যার মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণও রয়েছে।

তিনি বলেন, “তাই সমৃদ্ধকরণ আমাদের অধিকার, একটি অপরিহার্য অধিকার এবং আমরা এই অধিকার প্রয়োগ করতে চাই। আমি মনে করি, সমৃদ্ধকরণ কখনোই বন্ধ হবে না।”

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিমান হামলার আগে ইরান প্রায় ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছিল, যা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ও তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির সমালোচকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছে পৌঁছে গেছে- এমন অভিযোগ তুলে দেশটিতে হামলা চালায় ইসরায়েল। টানা ১২ দিনের এই হামলার জবাব দেয় তেহরান। হামলা-পাল্টা হামলার মধ্যে যুক্ত হয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত করে যুক্তরাষ্ট্র; দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ইরানের সব পামাণবিক স্থাপনা শেষ; তারা আর বোমা বানাতে পারবে না। পরে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে আসে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। 

৫ মাস আগে

এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলায় ৭১ জন নিহত হয়েছে: ইরান

এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলায় ৭১ জন নিহত হয়েছে: ইরান

রাজধানী তেহরানের এভিন কারাগারে গত ২৩ জুন ইসরায়েলি হামলায় ৭১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরান। 

রবিবার (২৯ জুন) দেশটির বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর রয়টার্সের। 

ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের শেষের দিকে, ইসরায়েল তেহরানের রাজনৈতিক বন্দীদের কারাগারে বিমান হামলা চালায়, যা প্রমাণ করে যে তারা সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনার বাইরেও তার লক্ষ্যবস্তু সম্প্রসারণ করেছে।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর বলেন “এভিন কারাগারে হামলায় ৭১ জন শহীদ হয়েছেন, যাদের মধ্যে প্রশাসনিক কর্মী, সামরিক বাহিনীতে কর্মরত যুবক, বন্দী, কারাগারে বেড়াতে আসা বন্দীদের পরিবারের সদস্য এবং কারাগারের আশেপাশে বসবাসকারী প্রতিবেশীরা ছিলেন।” 

জাহাঙ্গীর এর জানিয়েছিলেন যে, হামলায় এভিন কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। বিচার বিভাগ আরো জানিয়েছে, বাকি বন্দীদের তেহরান প্রদেশের অন্যান্য কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এভিন কারাগারে বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে আটক রাখা হয়েছে, যার মধ্যে তিন বছর ধরে আটক দুই ফরাসি নাগরিকও রয়েছে।

হামলার ঘটনার পর ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছিলেন, “তেহরানের এভিন কারাগারকে লক্ষ্য করে চালানো এই হামলা আমাদের নাগরিক সিসিল কোহলার এবং জ্যাক প্যারিসকে বিপদে ফেলেছে। এটা অগ্রহণযোগ্য।” 

৫ মাস আগে

খামেনির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বিষোদগার, আবারো হামলার হুমকি

খামেনির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বিষোদগার, আবারো হামলার হুমকি

ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধকে ‘ইরানের বিজয়’ বলে অভিহিত করায় দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির কড়া সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘তার (খামেনি) মৃত্যু আমি ঠেকিয়েছি’ উল্লেখ করে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ‘নিশ্চিতভাবেই’ দেশটিতে আবার বোমা হামলা চালাবে।

শুক্রবার (২৭ জুন) ট্রুথ সোশালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, তিনি খামেনিকে ‘ভয়াবহ ও লজ্জাজনক মৃত্যু’ থেকে রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু খামেনি এখন যুদ্ধজয় নিয়ে ‘মিথ্যা’ দাবি করছেন। খবর আলজাজিরার। 

তিনি লেখেন, “তার দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে, তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি জানতাম তিনি কোথায় লুকিয়ে ছিলেন। তবুও আমি ইসরায়েল ও বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মার্কিন সেনাবাহিনীকে তার জীবন শেষ করতে দেইনি।”

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতির পর এটিই ছিল ট্রাম্পের প্রথম বড় প্রতিক্রিয়া। 

ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে খামেনি বলেছিলেন, “মার্কিন সরকার যুদ্ধে সরাসরি জড়িত হয়েছিল। কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল যদি হস্তক্ষেপ না করে তাহলে ইহুদিবাদীদের পতন ঘটবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন কোনো কিছু অর্জন করেনি।এখানে বিজয়ী হয়েছে ইরান এবং আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে চূড়ান্ত আঘাত করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ায় আমি সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

ইরানের বিরুদ্ধে যদি কেউ আবারও আগ্রাসন চালানোর চেষ্টা করে তাহলে সেজন্য চড়া মূল্য দিতে হবে বলেও হঁশিয়ারি দেন দেশটির এই সর্বোচ্চ নেতা।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এক ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা মাত্র কয়েক মাসের জন্য ব্যাহত হয়েছে, ধ্বংস হয়নি—যা ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

ট্রাম্প আরো জানান, খামেনির ‘ঘৃণা, ক্রোধ ও ধ্বংসাত্মক ভাষ্যর’ কারণে তিনি ইরানের উপর থেকে আংশিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন, যা ইরানের দ্রুত পুনরুদ্ধারের একটি সুযোগ দিতে পারত।

একদিন আগে হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তেহরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির আকাঙ্ক্ষা যদি দমানো না যায়, তাহলে তিনি নতুন করে হামলার কথা বিবেচনা করবেন কি না? মার্কিন প্রেসিডেন্ট দ্রুত জবাব দেন, “অবশ্যই। এটি প্রশ্নাতীত।”

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা অথবা অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সংস্থার পরিদর্শকরা যেন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের সুযোগ পান, সেটি তিনি চান। কিন্তু এরই মধ্যে ইরান একটি বিল অনুমোদন করেছে, যাতে আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করা হয়েছে। 

তেহরান হয়তো আইএইএর নতুন কোনো পরিদর্শন অনুরোধ গ্রহণ করবে না বলে শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন।  
তিনি বলেন, “ইরান তার স্বার্থ, জনগণ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার রাখে।”

 

৫ মাস আগে

ইরানের ওপর হামলাকে ঐতিহাসিক সফলতা বললেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ইরানের ওপর হামলাকে ঐতিহাসিক সফলতা বললেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ইরানের উপর মার্কিন হামলাকে ঐতিহাসিক সফলতা বলে দাবি করেছেন। বৃহস্পতিবার পেন্টাগনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেছেন।

হেগসেথে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমা হামলার প্রভাব সম্পর্কে প্রাথমিক গোয়েন্দা মূল্যায়নের ব্যাপারে গণমাধ্যমের প্রচার সম্পর্কে তীব্র সমালোচনা করেছেন। শনিবার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর ওয়াশিংটনের সংবাদমাধ্যমগুলো গোয়ন্দা প্রতিবেদনের বরাত দয়ে জানিয়েছিল, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদানগুলিকে ধ্বংস করেনি বরং এটি কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।

হেগসেথ বলেন, “প্রকৃত হামলার দেড় দিন পরে এটি প্রাথমিক ছিল, অথচ তারা লিখিতভাবে স্বীকার করে যে এই ধরনের মূল্যায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে সপ্তাহের প্রয়োজন।”

তিনি বলেন, “আমি আশা করি, সব কালি ছড়িয়ে পড়ার পরে আপনাদের সব সংবাদমাধ্যম মহাদেশীয় নিরাপত্তার এই ঐতিহাসিক পরিবর্তনকে সঠিকভাবে স্বীকৃতি দেবেন। অন্যান্য প্রেসিডেন্টরা যা করার চেষ্টা করেছিলেন, অন্যান্য প্রেসিডেন্টরা যে বিষয়ে কথা বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা অর্জন করেছেন। এটি একটি বিশাল চুক্তি।”

তিনি জানান, ইসরায়েলের পারমাণবিক সংস্থা বলেছে যে মার্কিন হামলা ‘(ইরানের) সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলোকে অকার্যকর করে তুলেছে।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধানের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ‘বিশাল ক্ষতি’ হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ মনে করে যে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

তিনি বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিকভাবে সফল আক্রমণ ছিল এবং আমেরিকান হিসেবে আমাদের এটি উদযাপন করা উচিত।”

৫ মাস আগে

ইরান কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না: খামেনি

ইরান কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না: খামেনি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইরান কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না। বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে প্রচারিত বার্তায় তিনি এ কথা বলেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বার্তার কথা উল্লেখ করে খামেনি বলেন, “ট্রাম্প তার এক বক্তৃতায় বলেছিলেন যে ইরানকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। ট্রাম্প সত্যটি উন্মোচন করেছেন যে আমেরিকা কেবল ইরানের আত্মসমর্পণেই সন্তুষ্ট হবে - কিন্তু আত্মসমর্পণ কখনো হবে না, আমাদের জাতি শক্তিশালী।”

খামেনি তার ভিডিও বার্তায় আরো বলেছেন, ইরান ‘আমেরিকার মুখে চড় মেরেছে।’

মার্কিন প্রশাসনের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, আমেরিকা কেবল যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেছিল কারণ “তারা মনে করেছিল যে যদি তারা হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা (ইসরায়েল) সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের আঘাতে ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিল এবং চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।”

৫ মাস আগে

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাখ্যার তীব্র নিন্দা জানালো ইরান

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাখ্যার তীব্র নিন্দা জানালো ইরান

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থাপিত ব্যাখার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল ও প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি এই ব্যাখ্যাকে ‘আইনিভাবে ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছেন।

চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলাকে ‘অবৈধ এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করেছে ইরান। একইসঙ্গে জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আওতায় আত্মরক্ষার অধিকার দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের হত্যা’ বলেও অভিহিত করেছে। খবর বিবিসির।

চিঠিতে ইরাভানি আরো উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সাধারণ সম্মেলনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ‘শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যে কোনো ধরনের হামলা কিংবা হামলার হুমকি আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং সংস্থাটির বিশ্বাসযোগ্যতা ও যাচাই প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করে।’

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাইয়া কালাসও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “যে কেউ বলপ্রয়োগ করলে তাকে আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে ন্যায়সঙ্গতভাবে তা ব্যাখ্যা করতে হবে।”

হামলাটি আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে কতটা বৈধ- এই প্রশ্নের জবাবে কায়া কাল্লাস বলেন, “শতভাগ বৈধ বলা যায় না।”