ঢাকা     মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৬ ১৪৩১

ঈদযাত্রার শেষ মুহূর্তে সদরঘাটে স্বস্তি

জ্যেষ্ঠ প্রতি‌বেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ১৬ জুন ২০২৪   আপডেট: ২০:৩৫, ১৬ জুন ২০২৪
ঈদযাত্রার শেষ মুহূর্তে সদরঘাটে স্বস্তি

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শেষ সময়ে নৌপথে বাড়ি ফিরছেন বিভিন্ন জেলার মানুষ। তবে রোববার (১৬ জুন) দুপুরের পর থেকে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।  

জানা গেছে, রোববার ভোর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চল থেকে লঞ্চ এসেছে ৪০টি। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে সদরঘাট টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাবে ৬০টি লঞ্চ। এগুলোর মধ্যে চাঁদপুর, ইলিশা, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভান্ডারিয়া, বরগুনা রুটে যাত্রীদের কিছুটা চাপ লক্ষ্য করা গেছে। লঞ্চের ডেকে যাত্রীদের স্বাভাবিক ভিড় রয়েছে।

বরিশালগামী ‘এমভি পারাবত-১২’ লঞ্চের সুপারভাইজার কালাম মিয়া বলেন, আগে ঈদের মৌসুমে এ সময় যাত্রীদের ভিড়ে পন্টুনে দাঁড়ানোর জায়গা থাকত না। এখন পদ্মা সেতুর কারণে দিন দিন যাত্রী কমছে। তবে ঈদের সময় দেখে যাত্রীর মোটামুটি চাপ আছে। কেবিনের সব টিকিট বিক্রি হয়েছে। রাতের দিকে যাত্রী আরো বাড়বে।

রাজধানীর খিলখেত থেকে আসা ব্যবসায়ী বায়েজিদ হোসেন বলেন, বাসা থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে সদরঘাটে চলে এসেছি। বিকেলে এসে দেখি আগের মতো যাত্রীর ভিড় নেই। পদ্মা সেতু চালুর আগে ঈদের আগের দিন এ সময়ে যাত্রীর ভিড়ে লঞ্চে উঠতে কষ্ট হতো।

উল্লেখ্য পদ্মা সেতু নির্মাণের পর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দারা সড়কপথে বাড়ি যাচ্ছেন। যারা আরামপ্রিয় তারা লঞ্চে যান। 

যাত্রাবাড়ি থেকে আসা ‘এমভি প্রিন্স আওলাদ’ লঞ্চের যাত্রী পোশাককর্মী মুনিয়া বেগম বলেন, দুপুরে টার্মিনালে এসে দেখি লঞ্চে যাত্রী একটু কম। এতে অবশ্য ভালোই হয়েছে। স্বাচ্ছন্দ্যে ছেলেমেয়েকে নিয়ে ডেকে বসতে পেরেছি।

রাঙ্গাবালীগামী ‘এমভি বালিয়া’ লঞ্চের যাত্রী কালাম হোসেন রিপন বলেন, বাসে ১ হাজার টাকা ভাড়া, আর লঞ্চে ৪৫০ টাকা। লঞ্চের ডেকে বসে অল্প ভাড়ায় যাওয়া যায়। ভাড়া কমের পাশাপাশি ছেলে-মেয়েরা লঞ্চে হাঁটাচলা করতে পারে। আরামদায়ক যাত্রা, তাই ঈদে আমরা লঞ্চে বাড়ি যাই।

পটুয়াখালীগামী ‘এমভি সুন্দরবন-১২’ লঞ্চের যাত্রী লামিয়া আক্তার বলেন, বাসের চেয়ে নদী পথের যাত্রা আরামদায়ক। কষ্ট কম। তাই লঞ্চে যাতায়াত করি। তবে আগের তুলনায় যাত্রী কম। গুলিস্তান থেকে সদরঘাটে আসতে এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। সন্তান ও মালামাল থাকায় বাস থেকে নেমে হেঁটে আসার সুযোগ থাকে না। নদীপথের যাত্রীদের কথা চিন্তা করে অন্তত ঈদ মৌসুমে সড়কে যানজট নিরসনে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার দাবি জানান লামিয়া আক্তার। 

নৌপুলিশ সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, নদীপথের যাত্রীদের হয়রানি রোধ এবং তাঁদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। লঞ্চে চাদরপার্টি, মলমপার্টি ও অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য নেই। সবাই এখন নিরাপদে যাতায়াত করছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা যাবে না। এ নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

এএএম/তারা 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়