৯ দিনেও মেলেনি সহায়তা, মানবেতর দিন কাটছে জেলেদের
বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

জাল মেরামত করেই সময় কাটছে জেলেদের।
দিন আনি দিন খাই, ৯ দিন ধইরা মাছ ধরতে পারি না। বাজার করতেও পারি না। তিন বেলার এক বেলা খাওয়াই এখন দায়। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ২৫ কেজি চাল দেওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত চাল সহায়তা দেয়নি। ৯ দিন শেষ, এরপর চাল দিয়ে কি করমু? এভাবেই নিজের কষ্টের কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী গ্রামের ‘এফ বি রফিক’ ট্রলারের জেলে জালাল মুন্সি (৫৯)।
তিনি আরও বলেন, ‘নদী মোহনায় সারাদিন মাছ শিকার করে সন্ধ্যায় চাল-ডাল কিনে পরের দিনের খাবারের আয়োজন করি আমরা। কিন্তু মা ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ২২ দিনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে নয় দিন ধরে মাছ শিকার করতে পারছি না। এই সময় সরকারের চাল সহায়তা দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত আমাদের চাল দেওয়া হয়নি। অর্দাহার অনাহারে দিন কাটছে বিপুল অসংখ্য জেলে পরিবারের।’
একই এলাকার জেলে আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ মিরাজ, রাজু মিয়া, সোলায়মান খলিফা, সাইদুল ইসলাম জানান, সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি পালন করছে উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। একজন জেলেও মাছ শিকার করতে যায় না। অবরোধের ৯ দিন শেষ হতে চললো। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কিছুই পায়নি। এসব এলাকার বেশিরভাগ জেলেরা মোহনায় মাছ শিকার করে তা বিক্রি করে জীবন চালায়। অভাব- অনটনে অর্ধাহার-অনাহারে মানবেতর দিন যাপন করছে তারা।
মা ইলিশ সংরক্ষণের ৭ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাগর ও নদ-নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ইলিশ ধরা, বিক্রি, মজুত, বাজারজাত ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
বরগুনা জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, এই জেলায় নিবন্ধিত মোট জেলে রয়েছেন প্রায় ৪৪ হাজার। এর মধ্যে ইলিশ শিকারি জেলে রয়েছেন ৩৭ হাজার। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা যেন নদী থেকে ইলিশ শিকারে না যান তার জন্য প্রতিটি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে ৩৭ হাজার ৭০ জন জেলের অনুকূলে ৯২৬.৭৫ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জেলে পরিবার প্রতি ২৫ কেজি করে খাদ্য সহায়তার চাল দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে জেলার ছয় উপজেলার জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দুই-এক দিনের মধ্যে এই চাল বিতরণ করা হবে।’
ইমরান/ মাসুদ
আরো পড়ুন