ঢাকা     সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

হবিগঞ্জে নদী ও জলাশয় ৬০০ দখলবাজের কবলে

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৫, ২৬ জুন ২০২৩  
হবিগঞ্জে নদী ও জলাশয় ৬০০ দখলবাজের কবলে

পুরাতন খোয়াই নদীর দখলকৃত অংশ

হবিগঞ্জ জেলাজুড়ে নদী আছে ছোট বড় মিলিয়ে আটটি নদী। সরকারি জলাশয়-খালবিল আছে পঞ্চাশের বেশি। কিন্তু এসবের কোনোটিই এখন দখলের বাইরে নেই। কমপক্ষে ৬০০ দখলবাজ প্রতিনিয়ত গিলে খাচ্ছে নদী জলাশয়-খালবিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ আছে, ৬০০ দখলবাজের মধ্যে ব্যক্তি সংখ্যা বেশি। তা ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এসব নদী-জলাশয় দখল করে রেখেছেন। এদের তালিকা নদী রক্ষা কমিশনে থাকলেও আইন প্রয়োগ নেই। ফলে দখলদারদের সাহস দিন দিন বেড়েই চলেছে। হবিগঞ্জের ৮টি নদীর দখল ধরে রেখেছে তালিকাভুক্ত ২৩৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। জলাশয়-খালবিলগুলোর দখল ৩৬২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের হাতে।

নদী রক্ষা কমিশনের সূত্র বলছে, জেলা শহরের পুরাতন খোয়াই নদী দখল করেছে ১০১ জন। এছাড়া খোয়াই নদী ৯, নবীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা ৯, ডেবনা নদী ১৯, বিবিয়ানা নদী ৫৪, শাখা বরাক নদী ১১, মাধবপুর উপজেলার কাস্টি নদীতে ৬ ও চুনারুঘাটের খোয়াই নদীতে স্থাপনা নির্মাণ করে রেখেছে ২৩ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান। এসব নদীতে টিনের ঘর, আধাপাকা ঘর, মুদি দোকানসহ নানা ধরনের স্থাপনা রয়েছে। নদী রক্ষা কমিশনের প্রণীত তালিকায় এসব স্থাপনার কথা উল্লেখ আছে বলেও সূত্রটি জানায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দখলদারদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, আইনজীবী এবং শিক্ষা, ধর্মীয় ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে ৩৬২ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান সরকারি অর্ধশত জলাশয়-খালবিল দখল করে রাখায় সরকার রাজস্ব পাচ্ছে না। কিন্তু দখলদাররা নিজের মাছ চাষসহ নানা কাজ করে ঠিকই হাতিয়ে নিচ্ছেন। 

হবিগঞ্জ শহরে পুরাতন খোয়াই নদী ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা। ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন এসব স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছিল। বহুতল ভবনসহ প্রায় দেড়শ স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়াও হয়। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে অভিযানটি আর দিনের আলো পায়নি। এরপর থেকে গত চার বছর ধরে স্থানীয়রা নদী রক্ষায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু উদ্যোগ নিচ্ছে না প্রশাসন। বরং, আগের অভিযানে উদ্ধার অংশগুলোই ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধার না হওয়ার ব্যর্থতা জেলা প্রশাসনের। নদীটি দখলদারদের কবল থেকে দ্রুত উদ্ধার করাসহ বর্জ্য ও দূষণ বন্ধে কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবিও জানান তিনি।

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইশরাত জাহান বলেন, অবৈধভাবে দখলে থাকা নদ-নদী ও জলাশয় চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এরপরই উচ্ছেদের কাজ শুরু হবে।

মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়