ঢাকা     সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

চুরির অপবাদে দুই শিশুকে নির্যাতন, ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪১, ৮ মার্চ ২০২৪  
চুরির অপবাদে দুই শিশুকে নির্যাতন, ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২

গ্রেপ্তারকৃত ইউপি সদস্য মমিনা খাতুন ও মাতবর আব্দুর রউফ।

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে দরিদ্র দুই শিশুকে গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক পিঠিয়েছে ইউপি সদস্যসহ গ্রাম্য মাতবররা। এ ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জেলার চুনারুঘাট উপজেলার কালিশিরি গ্রামের মো. মনফর উল্ল্যার স্ত্রী আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার মোছা. মমিনা খাতুন (৩৮) ও বনগাঁও গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে আব্দুর রউফ (৩৫)। তাদেরকে শুক্রবার (৮ মার্চ) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দিবাগত রাতে থানার উপ-পরিদর্শক লিটন রায় ও মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের পৃথক অভিযানে ইউপি সদস্যসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নির্যাতিত শিশুদের নানি আনোয়ারা খাতুন বাদী হয়ে ইউপি সদস্য মমিনা খাতুনসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে চুনারুঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। নির্যাতনের শিকার শিশুরা হলেন নুরুল ইসলাম (১০) ও তোফাজ্জল মিয়া (৮)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালিশিরি গ্রামে নুরুল ইসলাম’র (১০) বাবা কন্টু মিয়া। তোফাজ্জল’র (৮) বাবার নাম আব্দুল হাকিম। নুরুল ইসলাম ও তোফাজ্জলের মা তাসলিমা। বাবা ভিন্ন হলেও তারা সহোদর। তারা নানির বাড়িতে থাকে। নানি মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে সংসার চালান। তাদের মা প্রায় দুই সপ্তাহ পূর্বে সৌদি আরব গেছেন জীবিকার তাগিদে।
৪ মার্চ বিকেলে কালিশিরি গ্রামের জোবায়ের নামের এক যুবক শিশু নুরুল ইসলাম ও তোফাজ্জলকে মাঠ থেকে গরু চুরির অভিযোগে ধরে এনে বাড়ির একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এসময় ঘনশ্যামপুর গ্রামের সাজল মিয়া, বনগাঁও গ্রামের আব্দুর রউফ, ইউপি সদস্য মমিনা খাতুনসহ ৭/৮ জন লোক ওই দুই শিশুকে মারধর করেন।

মামলার বাদী আনোয়ারা খাতুন বলেন, চুরির অপবাদ দিয়ে একজন ইউপি সদস্যসহ অন্য আসামিরা আমার দুই নাতিকে আটকে রেখে গাছের সাথে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। আমি এর সুবিচার চাই।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে ৪ মার্চ আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের কালিশিরি গ্রামে। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদেরকে কেউ জানায়নি।  শিশু নির্যাতনের এ ঘটনা বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাতে ফেসবুকে প্রকাশিত হবার পর আমাদের নজরে আসে।  আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠিয়ে দু’জনকে আটক করি। পরে ঘটনায় আহত শিশুর নানি বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এজাহারনামীয় ২ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মামুন/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়