ঘূর্ণিঝড় রেমাল
মধ্যরাত থেকেই মহাবিপদ সংকেত, আঘাত হানতে পারে রোববার
![মধ্যরাত থেকেই মহাবিপদ সংকেত, আঘাত হানতে পারে রোববার মধ্যরাত থেকেই মহাবিপদ সংকেত, আঘাত হানতে পারে রোববার](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024April/Untitled-1-2405251031.jpg)
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি দেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এজন্য শনিবার মধ্যরাত থেকে মহাবিপদ সংকেত জারি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে সাতক্ষীরা থেকে চট্টগ্রামের কক্সবাজার পর্যন্ত কমবেশি প্রভাবিত হতে পারে। ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। ফলে চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসও হতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান শনিবার (২৫ মে) সচিবালয়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা বুঝতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন। রোববার নাগাদ খুলনার সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রামের কক্সবাজারের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। এজন্য এখন ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত রয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সংকেত ৩-এ চলে যাবে। এটা (সতর্ক সংকেত) রাতে ৪-এর ওপরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাতে বিপদের পর্যায়ে চলে যেতে পারে, বিশেষ করে রাত ১২টা-১টা নাগাদ এটা ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি হতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মহিববুর রহমান জানান, আমাদের ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রেখেছি। সার্বিক প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিয়েছি। জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, উপকূলীয় জেলায় আমাদের প্রায় চার হাজার আশ্রয়কেন্দ্র আছে। এগুলো আমরা প্রস্তুত রেখেছি। খাদ্যের জন্য আমাদের প্রত্যেকটি জেলায় গুদামে পর্যাপ্ত শুকনো খাবারসহ যেসব জিনিস দরকার হবে এগুলো মজুত রেখেছি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে যেন আরও সাপ্লাই দিতে পারি এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
সভায় উপস্থিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, রোববার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে। এদিন রাত ১২টার মধ্যে এটি উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে। রোববার দুপুর থেকেই ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ উপকূল স্পর্শ করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি মূলত ভারতের সাগর আইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির ৩০ শতাংশ ভারত এবং ৭০ শতাংশ বাংলাদেশের স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।
পুরো ঘূর্ণিঝড়টির আকার ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার হতে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এ পরিচালক বলেন, ‘রেমাল’ প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। এটি অতিপ্রবল হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। স্থলভাগ অতিক্রমের সময় এর বাতাসের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। এখন পর্যন্ত আমরা এটিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই দেখছি।
শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে আমরা ৫/৬/৭ বিপদ সংকেত জারি করতে পারি। পরে মহাবিপদ সংকেত (৮, ৯ ও ১০) জারি হতে পারে। তবে পরবর্তীতে পরিস্থিতি অনুযায়ী সেটা আমরা জারি করবো। এখন পর্যন্ত এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর আজ সন্ধ্যার পর থেকে এটি উত্তরে বাংলাদেশের দিকে মোড় নিতে পারে। গভীর নিম্নচাপটি এখন ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে।
নঈমুদ্দীন/এনএইচ
আরো পড়ুন