ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সারাহ ইসলামের কিডনিতে ভালো আছেন দুই রোগী

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২২ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১৫:২৫, ২২ জানুয়ারি ২০২৩
সারাহ ইসলামের কিডনিতে ভালো আছেন দুই রোগী

সারাহ ইসলাম (ছবি: সংগ্রহ)

দেশে প্রথম সফলভাবে ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। এই দুটি কিডনি নেওয়া হয়েছে ২০ বছর বয়সী সারাহ ইসলামের দেহ থেকে। তার দুটি কিডনি দুজনের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সেই দুজন কিডনি গ্রহীতা বর্তমানে স্বাভাবিক এবং বেশ ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় বিএসএমএমইউ’র কিডনি অপারেশন থিয়েটারে এ সফল অপারেশন হয়। বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে দুটি চিকিৎসক দল এ অপারেশনে অংশ নেন।

সারাহ’র দুটি কিডনির একটি বিএসএমএমইউতে শামীমা আক্তারের দেহে এবং অপর কিডনিটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে কিডনি ফাউন্ডেশনে হাসিনা আক্তার নামে এক নারীর দেহে।

বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা.হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন,   প্রতিস্থাপন করা দুটি কিডনির কন্ডিশন খুবই ভালো আছে। আমরা যে রগগুলো জোড়া লাগিয়েছি, সেটির একটা পরীক্ষা করে দেখা গেছে- সেগুলো ভালো আছে। বিএসএসএমইউ’র রোগীর রক্তচাপ ধীরে ধীরে বাড়ছে। কিডনি ফাউন্ডেশনের রোগীর এখনও রক্তচাপ তৈরি হয়নি। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুতই তা তৈরি হবে। মনে রাখতে হবে, এই ধরনের ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের পর ইউরিন তৈরি হতে একটু সময় নেয়।

আরও পড়ুন: দেশে প্রথমবার মৃত মানুষের কিডনি অন্যের দেহে প্রতিস্থাপন

অঙ্গদাতা সারাহ ইসলামের পরিবারের এক সদস্য জানান, সারাহ ১০ মাস বয়সে টিউমার স্কেলেলিস রোগে আক্রান্ত হয়। সে এ রোগ নিয়ে প্রচণ্ড মানসিকতার জোরে জীবনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছে। এ অবস্থায় সারাহ অগ্রণী গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। এরপর তার ইচ্ছাতে তাকে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলভমেন্ট অলটারনেটিভে (ইউডা) ফাইন আর্টসে ভর্তি করানো হয়। সেখানে সে ফাইন আর্টসের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি বিএসএমএমইউয়ে জেনেটিক ডিজিজে আক্রান্ত সারাহ ইসলামের সার্জারি হয়। সার্জারির পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। চিকিৎসকরা যখন বুঝতে পারেন, সারাহ ব্রেন ডেথের দিকে যাচ্ছে, তখন তার মাকে কাউন্সিলিং করা হয়। তার স্কুল শিক্ষক মা ব্রেন ডেথ মেয়ের দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া ট্রান্সপ্লান্টের অনুমতি দেন। 

কিডনি দুটি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার পর ২১ জানুয়ারি সারাহ ইসলামের দান করা কর্নিয়া দুটির মধ্যে একটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ সুজন নামের যুবকের চোখে এবং অপরটি কমিউনিটি অপথালমোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান ৫৬ বছর বয়সী ফেরদৌস আক্তার নামে এক নারীরে চোখে প্রতিস্থাপন করেন। তারা দুজনও বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

মেসবাহ/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়