ঢাকা     বুধবার   ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৭ ১৪৩১

আমাদের বায়ু আমাদের আয়ু 

লিটন মহন্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ০৯:৫২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আমাদের বায়ু আমাদের আয়ু 

ছবি: সংগৃহীত

আমরা বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য গ্রহণ করি। পাশাপাশি গ্রহণ করি অক্সিজেন, যা বায়ু থেকে আসে। খাদ্য ছাড়া বেঁচে থাকা যায় কয়েকদিন পর্যন্ত কিন্তু বায়ু ছাড়া আমরা কয়েক মিনিটও বাঁচতে পারবো না।

অতএব, পরিবেশ আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখছে। খাদ্য ও অক্সিজেন, পানি, আলো, তাপ প্রভৃতি দিয়ে। তারপরেও আমরা বলি মানুষেই পৃথিবীর সেরা জীব! অথচ এই মানুষ পৃথিবীতে সব চাইতে পরিবেশের উপর নির্ভরশীল একটি প্রজাতি। এই পৃথিবী থেকে যদি সমস্ত মানুষ বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাতে পৃথিবীর কোনো সমস্যা হবে না। বরং পৃথিবীর অন্যান্য জীবকুল আরও ভালোভাবে বাঁচতে পারবে। অনেকে হয়তো আমার এই কথার সাথে একমত হবেন না, কিন্তু এটাই বাস্তবতা এবং পরম সত্য। সুতরাং বুঝতে পারছেন, আমাদের জন্য এই পরিবেশ এবং প্রকৃতি কতটা আর্শিবাদ। এবার ভাবুন এই বায়ু দূষণ আমাদের জন্য কতটা আত্মঘাতী। যেহেতু এই বায়ু দূষণের প্রধান কারণ হলো মানুষ এবং মানব সভ্যতার শিল্পবিপ্লব। আমরা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, শিল্প সবকিছুই চাই কিন্তু প্রকৃতিকে যতটা পারা যায় অক্ষত রেখে। আমরা মনে করি শুধু ভালো পুষ্টিকর খাবার খেলেই ভালো থাকা যায়, আসলে তা নয় ভালো ও সুস্থ থাকার জন্য বিশুদ্ধ বায়ু গ্রহণ করতে হয়। বিশুদ্ধ বায়ু আমাদের পরম আয়ু বাড়ায়।

ছেলে বেলায় একটা প্রবাদ শুনেছিলাম ‘সকালের হাওয়া হাজার টাকার দাওয়া’, তখন কথাটার মর্মার্থ ঠিক বুঝে উঠতে পারি নাই, এখন ঢাকায় থেকে মর্মে মর্মে বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারি। নির্মল বায়ু আমাদের জীবনের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ; কারণ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হয় কিন্তু অন্যদিকে আমরা ফুসফুসের জন্য প্রয়োজন দুই হাজার লিটার নির্মল বাতাস। সুতরাং বুঝতেই পারছেন প্রতিদিন বাতাসের সাথে আমরা কি পরিমাণ দূষিত বস্তু আমরা নিশ্বাসের সাথে শরীরের ভেতর গ্রহণ করছি। এখানে করার কিছুই নেই আমরা নিরুপায়। আমাদের দীর্ঘদিন সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন নির্মল বাতাস (বায়ু)। তাই তো আমার কাছে মনে হয়েছে দূষিত বায়ু কমায় আয়ু। ব্যাপারটা আমি আপনাদের একটু খোলাসাভাবে বলি যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) উদ্ধৃত করে বলেছে, বায়ু দূষণের কারণে হওয়া ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারী ডিজিজ (সিওপিডি) বিশ্বজুড়ে  মৃত্যুর তৃতীয় প্রদান কারণ। আর ২০১২ সালে এই রোগটির কারণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে যে পাঁচটি দেশে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের নাম রয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ধুমপান, সড়ক দুর্ঘটনা এবং ডায়াবেটিস এই তিনটি কারণে যে পরিমাণ মানুষ মারা যায় তারচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় বায়ু দূষণের কারণে। প্রতিনিয়ত আমাদের বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকায় বায়ু এবং পানি দুটোই দূষিত হয়ে যাচ্ছে। এই দূষণ রোধ শুধু আইন করে সরকারের পক্ষে রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ এবং নগরীর প্রতিটি মানুষকে সচেতন হতে হবে। কারণ এই দেশ আমাদের এই শহর আমাদের। আমরা সাধারণ মানুষ দূষিত বা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বাতাস বলতে কি বুঝি! বাতাসে যদি মাত্রাতিরিক্ত কার্বন মনো অক্সাইড, সিসা, নাইট্রোজেন অক্সাইড, ভোলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ড, পার্টিকুলার ম্যাটার বা বস্তুকণা ও সালফার ডাই-অক্সাইড থাকে, তবে তাকে আমরা বায়ু দূষণ বলব।

আরো পড়ুন:

তবে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ধুলাবালির মধ্যে থাকা বস্তুকণা আমাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সাধন করে থাকে। সমস্ত পৃথিবীতে একই সূচকে বায়ু দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, একে বলা হয়, ‘এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স’ (একিউআই)। এই সূচক অনুযায়ী ০-৫ ভালো, ৫১-১০০ মধ্যম, ১০১-১৫০ সর্তকাবস্থা, ১৫১-২০০ অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১-৫০০ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি আরবান ল্যাবের হিসাব মতে প্রতি মাইক্রোগ্রাম বাতাসে ১-১২ মাইক্রোমিটার বস্তুকণা থাকার কথা। কিন্তু এই বছরের শুরুর দিকে ঢাকায় এটি ছিল যথাক্রমে ২২৫, ১৮৪, ২১৪, ২০২ এবং ২২৩ মাইক্রোমিটার। তাহলে বুঝতেই পারছেন আমরা কিসের মধ্যে বসবাস করছি। আমাদের অসুস্থ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এবার আসুন বায়ু দূষণের কথা বলা যাক, দুটি উপায়ে সাধারণত বায়ু দূষণ হয়ে থাকে।  প্রাকৃতিক উপায়ে এবং কৃত্রিম উপায়ে। প্রাকৃতিক উপায়ে সাধারণত আগ্নেয়গিরি, দাবানল, ধুলিঝড় ইত্যাদি আর কৃত্রিম উপায়ে হলো স্থির দহনের উৎস থেকে বায়ু দূষণ। চলমান যন্ত্রের দ্বারা বায়ু দূষণ,শিল্পকারখানা দ্বারা বায়ু দূষণ ইত্যাদি।

এই বায়ু দূষণের প্রভাব সরাসরি মানুষের উপর পড়লেও পরোক্ষভাবে এই দূষণের হাত থেকেও আমরা রক্ষা পচ্ছি না। কারণ এর প্রভাব আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপর, উদ্ভিদের উপর, প্রাণীকূলের উপর এবং বিভিন্ন পদার্থের উপর পরছে।  যারা পরোক্ষভাবে মানুষের জীবনের সঙ্গে কোন না কোন ভাবে যুক্ত। প্রসঙ্গক্রমে এখানে উল্লেখ করতে চাই যে, আমাদের দেশের প্রখ্যাত নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ এবং বিএসএমএমইউ এর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বলেছেন বাংলাদেশে প্রায় ৭০ লাখ হাঁপানী রোগী রয়েছে যাদের অর্ধেকেরও বেশিভাগ হলো শিশু।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১৫ হাজার রোগীর অকাল মৃত্যু ঘটে এই ঢাকা শহরে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে এই বায়ু দূষণের প্রকোপ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায় তখন এসব হাঁচি, কাঁশি ও শ্বাস তন্ত্রের রোগীরা হাজার এন্টিবায়োটিক, ইনহেলার ও বিভিন্ন পদের ওষুধ খেয়েও কোন কাজ হয় না, কারণ তাদের এই সমস্যার জন্য দায়ী ঢাকার বাতাস। শুধু ঢাকা শহরে জীবন ও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন হাজার হাজর ছিন্নমূল ও বস্তিবাসী মানুষ এসে আস্থানা গাড়ছে, ফলে তাদের যেখানে সেখানে মলত্যাগের ফলে বাতাসে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক জীবাণু ও অ্যামোনিয়া ভেসে বেড়াচ্ছে এবং মানুষের শ্বাসতন্ত্রে এসে রোগ সৃষ্টি করছে। এছাড়াও আমরা এখনো যেখানে সেখানে থুতু-কফ্ ফেলি যার কারণেও মানুষ রোগাক্রান্ত হতে পারে, বিশেষ করে শিশুরা। আমাদের নিজেদের স্বার্থে এই ঢাকা সিটিকে নির্মল রাখতে হবে।

এজন্য যেটা প্রয়োজন সেটা হলো সচেতনতা এবং সম্বিলিত প্রচেষ্টা। শুধু আইন করে এই দূষণ রোধ করা সম্ভব নয়। আমাদের প্রতিটি বাড়ির ছাদে গাছ লাগানো উচিৎ, গাছ লাগাতে হবে ঢাকা শহরের প্রতিটি ফাকা জায়গায়, নির্মাণকাজ চলার সময় তা ঢেকে রাখতে হবে। পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তা খোঁড়ার সময় তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঢেকে রাখতে হবে। স্টিল, রিং রোলিং কারখানা, ইটের ভাটা, সিমেন্ট কারখানার বস্তুকণা যেন পরিবেশে সরাসরি আসতে না পারে সেই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ধুমপান বায়ু দূষণের একটি অন্যতম কারণ, আপনি একটু কল্পনা করেন প্রতিদির ঢাকা শহরের প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ ধুমপান করছে, যারা করছে তারা প্রতিদিন অন্তত পাঁচটি করে খায়, তাহলে হিসেব দাঁড়াল কত? আড়াই কোটি সিগারেট, বাস্তবে এই সংখ্যা বেশি হবে কম হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। সুতরাং শুধু ঢাকা সিটিতে আমরা  আড়াই কোটি থেকে তিন কোটি সিগারেট প্রতিদিন পুড়ে পুড়ে আমাদের পরিবেশকেও ধ্বংস করছি। আর জেনে শুনে ধ্বংস করছি নিজের ফুসফুস মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে।

পরোক্ষভাবে এই ধূমপায়ী দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে আপনার আমার শিশু, যারা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। এবার আসুন আমরা চিন্তার জগৎকে প্রসারিত করে ভাবতে থাকি, এই শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য প্রতিটি বাবা-মা দিন নেই রাত নেই অর্থ উপার্জনের পিছনে ছুটছে। কারণ তারা চান তাদের সন্তান যেন ভবিষ্যতে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়। কিন্তু ভবিষ্যৎ নির্মল পরিবেশের কথা ভাবছি না, অথচ সন্তানদের ভবিষ্যতে সুস্থ থাকার জন্য একটা সুস্থ পরিবেশ অত্যন্ত জরুরি। আমরা সন্তানের মঙ্গলের জন্য অনেক টাকা ব্যাংকে কিংবা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অনেক কিছুই রেখে গেলাম কিন্তু এমন একটা দূষিত পরিবেশে রেখে গেলাম, সেখানে তারা ঠিকভাবে নিশ্বাস নিতে পারছে না। বলুন তো তারা ভালো থাকবে কিভাবে! আসুন নিজের জীবনের জন্য, সুস্থতার জন্য প্রচুর গাছ লাগাই। ছাদে, বেলকনীতে, টবে, বারান্দার গ্রিলে প্লাস্টিক বোতলে ঝুলিয়ে রেখে, কারণ এই গাছগুলো শুধু ঢাকার পরিবেশকে ভালো রাখবে না। আপনার সন্তানের জন্য আপনার ঘরে বারান্দায় একটু হলেও বেশি অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়াবে।

আমাদের শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে ঠিক রাখার জন্য নির্মল অক্সিজেনের প্রয়োজন। এক একটা গাছ আপনার চারপাশে থাকা মানে এক একটা অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি  আপনার চারপাশে থাকা, আপনার সন্তান বুকভরে নিঃশ্বাস নিবে। প্রতিটি বাসার ছাদ হতে পারে এক একটি ফুলের, ফলের বাগান।  আমি প্রতিটি বাড়ির মালিককে বিনীত অনুরোধ করবো, আপনারা এই কাজটি করুন এবং প্রতিটি ভাড়াটিয়াকে বলবেন বারান্দায় যেন তারা গাছ লাগায়। এটা বাড়িতে ভাড়াটিয়া উঠানোর সময় আপনার প্রথম শর্ত থাকবে। আমাকে বিশ্বাস করুন আপনার বাড়িটি হবে আপনার মহল্লার মধ্যে শ্রেষ্ঠ বাড়ি এবং এলাকায় অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন আপনি। আজকে ঢাকা শহরের প্রতিটি বাড়ি যদি এমন বৃক্ষবাড়ি হয়, তাহলে ঢাকা শহরের মোট অক্সিজেনের পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। আসুন না আমরা সবাই সন্তান স্বজনদের নিয়ে ভালো থাকার জন্য বৃক্ষপ্রেমী হই। এ বিষয়ে আমাদের ঢাকা সিটির মেয়রদ্বয় তাদের বিভিন্ন ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছেন, যা সত্যি প্রশংসনীয়।

বায়ু দূষণ রোধে ঢাকা সিটি থেকে দূর করতে হবে ধুলোবালি; এর জন্য কলকারখানাগুলো কে আস্তে আস্তে ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে হবে এবং উদ্যোগ নিতে হবে বৈজ্ঞানিক উপায়ে যতকম পরিমাণ ক্ষতি করে দূষিত ধোঁয়াকে পরিবেশে অবমুক্ত করা যায়। বর্তমান সরকার আমাদের ট্যানারি শিল্পকে ঢাকার হাজারীবাগ থেকে নিয়ে সাভারে স্থানান্তরিত করেছে এবং এর জন্য সঠিক বৈজ্ঞানিক উপায়ে এটিপি স্থাপন করেছে যাকে বর্জ্য দূষিত পানি পরিবেশে গিয়ে দূষণ না ঘটাতে পারে। দেরী হলেও এই উদ্যোগটি অব্যশই সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

আমরা সরকারিভাবে কিংবা বেসরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে ঢাকা শহরের  ফুটপাতের যে ফাঁকা জায়গা বা আইল্যান্ড রয়েছে, সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি বৃক্ষ লাগাতে পারি, যাতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে।

বর্তমানে ঢাকা শহর ঘুরলে আপনি দেখতে পাবেন, প্রতিটি গাছ ধুলোর আস্তরনে ঢাকা, এ কারণে গাছগুলোও ঠিকমত তাদের কার্বন ডাই-অক্সসাইড গ্রহণ ও অক্সিজেন ছাড়তে পারছে না। ফলে ঢাকায় অক্সিজেন লেভেল কমছে। এবার একটা বৃষ্টি হলেই দেখতে পাবেন, বাইরে বেরুলেই বুকভরে একটা শ্বাস নিতে পারবেন এবং পার্থক্যটা নিজের ফুসফুস দিয়ে উপলব্ধি করতে পারবেন। এই মুহূর্তে একটা বাদল দিনের অপেক্ষা করছি, যেদিন নবধারা জলে বৃক্ষরা তাদের স্নান সারবে, নীপবনের ছায়ায় প্রজ্জ্বলিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আগমনী বার্তা।

লেখক: বিজ্ঞান গবেষক ও লেখক

/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়