ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ২ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অজস্র ঘামবিন্দুর প্রতিদান স্বরূপ শিরোপা চান রোহিত

ক্রীড়া প্রতিবেদক, আহমেদাবাদ থেকে  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১১, ১৮ নভেম্বর ২০২৩  
অজস্র ঘামবিন্দুর প্রতিদান স্বরূপ শিরোপা চান রোহিত

রোহিত শর্মা

‘সুধী, আমাদের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন রোহিত শর্মা…।’ 

বিশ্বকাপ ফাইনালের সংবাদ সম্মেলনের আগে ভারতের মিডিয়া ম্যানেজার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ভারতের অধিনায়ককে এভাবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন। রোহিত তাকে থামিয়ে, ‘আরেহ… ওকে কেউ থামান। আমাকে সবাই চেনে। সংবাদ সম্মেলন শুরু হোক।’ 

আরো পড়ুন:

রোহিতের মুখে চওড়া হাসি। হাসি গণমাধ্যমকর্মীদের মুখেও। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলার আগে রোহিত কতটা ফুরফুরে তা বোঝা যাচ্ছিল তার অবয়বে, কথায়। 

এই দিনটি দেখার জন্য কতটা অপেক্ষা করেছিলেন তিনি, তা স্পষ্ট হয় প্রথম প্রশ্নের উত্তরেই, ‘দেখুন আমরা যত প্রস্তুতি নিয়েছি, সবটা এই দিনটার জন্যই। দুই বছর আগে যখন আমরা শুরু করেছিলাম…বিশেষ করে আমাকে যখন অধিনায়ক করা হয়েছিল। এই দিনটার জন্যই সব প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ছিল।’

২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ খেলেছিল ভারত। ২৮ বছর পর সেবার শিরোপাও জিতেছিল। ওয়াংখেড়েতে ভারতের সেদিনের ড্রেসিংরুমে থাকা হয়নি রোহিতের। তাকে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে সমালোচনাও করেছিলেন। সেই রোহিতই এখন ভারতের অধিনায়ক। 

১২ বছর পর আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের দ্বারপ্রান্তে তারা। শিরোপা জয়ের জন্য রোহিত কতটা ক্ষুধার্ত, কতটা তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষায় সেটাও স্পষ্ট হলো, ‘আমাদের হাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ছিল, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ছিল। এখন ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তিনটি আসরের জন্যই আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।’ 

খেলোয়াড় বাছাই করেছি আমরা। নিশ্চিত করেছি, কোন ফরম্যাটে, কোন কোন জায়গায় কোন খেলোয়াড়কে থিতু করা যায়। একটা প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে আমরা গিয়েছি। আমরা নিশ্চিত করেছি, আমরা যাদের বাছাই করছি তাদের ওপর ভরসা রাখবো এবং তাদের নির্দিষ্ট ভূমিকা দেওয়া হয়েছিল।’ 

ওয়ানডে বিশ্বকাপ তার জীবনে কতটা দাগ কেটে আছে, তা বুঝিয়েছেন আরেক প্রশ্নের উত্তরে, ‘এই আয়োজনটা বিরাট বড়। আপনি সবসময় এই আয়োজনগুলো পাবেন না। প্রত্যেকবার আপনি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতেও পারবেন না। আমার জন্যও তাই। কেননা ৫০ ওভারের ক্রিকেট দেখেই বড় হয়েছি। নিশ্চিতভাবেই আমার জন্য বড় আয়োজন। 

‘এজন্য আমার নিজেরও স্নায়ু ঠিক রাখতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে দল আমার থেকে যা চাইছে, তা যেন পূরণ করতে পারি। নিজের আবেগ পাশে রেখেই কাজটা করতে হবে।’

নিজেরা যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, সেই পথে তারা এগিয়েছে ধূমকেতুর গতিতে। টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে ফাইনালে উঠেছে। কোনও প্রতিপক্ষকে তাদের সামনে দাঁড়াতে দেয়নি। যেমন ব্যাটিংয়ে দাপট দেখিয়েছে, তেমন বোলিংয়ে ধরিয়েছে আগুন। ফিল্ডিং টপনচ। বিশ্বকাপের এমন দুর্দান্ত সফরে যে কোনো অধিনায়কই খুশি থাকবেন। খুশি রোহিতও। তাই তো নিজেদের অযুত-নিযুত ঘামবিন্দুর প্রতিদান চান স্বপ্নের শিরোপায়।

‘আমি মনে করি, এখন পর্যন্ত আমরা যা করেছি, যা গুরুত্বপূর্ণ ছিল- সবটাই ঠিক আছে। আমরা পারফর্ম করতে পেরেছি কি না, সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু ছেলেরা যেটা করতে চাচ্ছে সেটা যদি ঠিক থাকে, তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যায়। আমরা প্রত্যেকের মাঝে পরিষ্কার ধারণা দিয়ে দিতে চেয়েছি, আমরা কোথায় পৌঁছতে চাই, কী করতে চাই। যেটা বোলার হোক বা ব্যাটসম্যান কিংবা স্লিপে ফিল্ডিং করে এমন কেউ। প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আমরা একই কাজ করেছি। এখন পর্যন্ত সব ভালো হয়েছে। আশা করছি, আগামীকালও (রোববার) সব ভালো হবে।’ 

ফাইনালের আগে ভারত আজ ঐচ্ছিক অনুশীলন করেছে আহমেদাবাদের স্টেডিয়ামে। রোহিত বলেছেন, ‘খেলার আগে আমি সচরাচর ঐচ্ছিক অনুশীলন রাখার চেষ্টা করি, কেননা ছেলেরা যা করতে চায় তাদের তা করার স্বাধীনতা নেই। 

‘হ্যাঁ, আমরা বেশ স্থির আছি। নিজেদের স্নায়ু ঠিক রেখেছি। জানি, আমাদের জন্য বড় একটি দিন আসছে। সেজন্য প্রস্তুত আছি। প্রত্যাশা, চাপ, সমালোচনা, বাহবা সব হবে। সেজন্যও প্রস্তুত আছি। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিজেদের শক্তির ওপর ভরসা রাখা, দলগতভাবে সাফল্য অর্জন করা। প্রথম ম্যাচ থেকেই আমরা ড্রেসিংরুম শান্ত রাখার চেষ্টা করেছি। সেটা মাঠেও। যেরকম পরিস্থিতি আসুক, আমরা চাপ নিইনি। নিজেদের শান্ত রেখে সেই চাপ উতরে যাওয়ার পথ খুঁজেছি।’

ইয়াসিন/রিয়াদ/এনএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়